Dengue Infection Rate

পুরুলিয়ায় এক সপ্তাহে আক্রান্ত আট গুণ বেশি

জেলা স্বাস্থ্য দফতর সূত্রে খবর, পুরুলিয়া শহর ছাড়াও ১০টি ব্লকে ডেঙ্গি আক্রান্তের খোঁজ মিলেছে।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

পুরুলিয়া শেষ আপডেট: ০২ অগস্ট ২০২৪ ০৯:৪৮
Share:

—প্রতীকী চিত্র।

জুলাইয়ের তৃতীয় সপ্তাহে পুরুলিয়া জেলায় ডেঙ্গি আক্রান্ত ছিলেন ৪ জন। বৃহস্পতিবার ১ অগস্ট জেলায় ডেঙ্গি আক্রান্তের সংখ্যা ছুঁল ৩১। জেলা স্বাস্থ্য দফতরের বিশেষজ্ঞদের দাবি, কখনও ঝিরঝিরে বৃষ্টি, কখনও চাঁদিফাটা রোদ— এমন পরিবেশই ডেঙ্গির বাহক এডিস মশার বংশ বিস্তারের জন্য আদর্শ। তাতেই অল্প সময়ে ডেঙ্গি আক্রান্তের সংখ্যা এক সপ্তাহে আট গুণ বেড়ে গিয়েছে! এতে উদ্বিগ্ন স্বাস্থ্য দফতর, চিন্তায় প্রশাসন।

Advertisement

২০১৮ সালে পুরুলিয়া শহরে ব্যাপক ভাবে ডেঙ্গি ছড়ায়। শুধু পুরুলিয়া শহরেই আক্রান্তের সংখ্যা ২০০ ছাপিয়ে যায়। লাগোয়া ব্লকগুলিতেও ছড়িয়ে পড়েছিল ডেঙ্গি। তা থেকে শিক্ষা নিয়ে এ বার সতর্ক প্রশাসন। জেলার সার্বিক পরিস্থিতি নিয়ে বৃহস্পতিবার জেলা স্বাস্থ্য দফতরকে নিয়ে বৈঠক করে জেলা পরিষদ। সভাধিপতি নিবেদিতা মাহাতো, সহ-সভাধিপতি সুজয় বন্দ্যোপাধ্যায়, জনস্বাস্থ্য কর্মাধ্যক্ষ প্রতিমা সরেন, কো-মেন্টর জয় বন্দ্যোপাধ্যায়, অতিরিক্ত জেলাশাসক (জেলা পরিষদ) রানা বিশ্বাস, জেলা মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক অশোক বিশ্বাস বৈঠকে ছিলেন। ডাকা হয় জেলার সব পঞ্চায়েত সমিতির সভাপতি, জনস্বাস্থ্য কর্মাধ্যক্ষদেরও।

জেলা স্বাস্থ্য দফতর সূত্রে খবর, পুরুলিয়া শহর ছাড়াও ১০টি ব্লকে ডেঙ্গি আক্রান্তের খোঁজ মিলেছে। হুড়া ব্লকের শ্যামনগরের বাসিন্দা আনন্দ মণ্ডলের কথায়, ‘‘আমার মেয়ের কয়েকদিন আগে জ্বর আসে। পুরুলিয়া শহরের এক চিকিৎসকের ওষুধ খাইয়েও জ্বর ছাড়েনি। কিছু পরীক্ষা করাতে ডেঙ্গি ধরা পড়ে। দেখা যায়, প্লেটলেট অনেক নেমে গিয়েছে। মেয়ে কয়েকদিনের জ্বরে এত দুর্বল হয়ে পড়েছিল যে দ্রুত দুর্গাপুরের একটি বেসরকারি হাসপাতালে ভর্তি করি।’’ তিন দিন আগে মেয়েকে নিয়ে বাড়ি ফিরেছেন।

Advertisement

এ দিনের বৈঠকে বিভিন্ন ব্লকের ডেঙ্গি পরিস্থিতি পর্যালোচনার পরে ঠিক হয়েছে, কয়েকটি দফতরের সমন্বয়ে কাজ করা হবে। স্বাস্থ্য পরিষেবার বিষয়টি দেখবে স্বাস্থ্য দফতর। সচেতনতা প্রসারের কাজ করবে ব্লক প্রশাসন।

সভাধিপতি নিবেদিতা মাহাতো বলেন, ‘‘জেলায় ডেঙ্গি আক্রান্তের সংখ্যা বাড়ছে। সে কারণে জেলার সার্বিক পরিস্থিতি নিয়ে স্বাস্থ্য দফতর ও সমস্ত ব্লককে নিয়ে বৈঠক হয়েছে। ডেঙ্গি রোধে বাড়ি ও আশপাশে যাতে জল না জমে, সে জন্য সচেতনতা বাড়াতে শুক্রবার থেকেই বিডিওদের মাইকে প্রচার শুরু করতে বলা হয়েছে। ব্লক প্রশাসন যেখানে যেখানে মনে করবে সেখানই মশানাশক ওষুধ ছড়াবে। জেলা স্বাস্থ্য দফতর ও জেলা পরিষদ একাজে ব্লক প্রশাসনকে সহায়তা করবে।’’ কো-মেন্টর জয় বন্দ্যোপাধ্যায় জানান, ডেঙ্গি রোধে কী করণীয়, সে ব্যাপারে পঞ্চায়েত প্রধানদের জেলা স্বাস্থ্য দফতর প্রশিক্ষণ দেবে।

জেলা মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক অশোক বিশ্বাস বলেন, ‘‘বৃষ্টির সঙ্গে যে রকম আর্দ্র পরিবেশ রয়েছে, তাতে ডেঙ্গির বাহক এডিস মশার বংশবৃদ্ধি যে কোনও সময় বাড়তে পারে। সেটাই উদ্বেগের। তবে পুরসভা বা পঞ্চায়েত এলাকা, যেখান থেকে জ্বরে আক্রান্তের খবর আসছে স্বাস্থ্যকর্মীরা গিয়ে নজরদারি চালাচ্ছেন। রক্ত পরীক্ষা করা হচ্ছে। আক্রান্তকে হাসপাতালে ভর্তি করানো হচ্ছে।’’

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement