নদীর বুকে এই সেই অস্থায়ী রাস্তা। সাঁইথিয়ায় তোলা নিজস্ব চিত্র।
প্রতি বছরের মতো এ বারও জলের তোড়ে বিচ্ছিন্ন হয়েছে সাঁইথিয়ার ময়ূরাক্ষী নদীর উপরে থাকা অস্থায়ী রাস্তা। যার ফলে ফের দুর্ভোগে পড়েছেন নদীর দু’পাড়ের মানুষ। স্থানীয় বাসিন্দারা তাই দাবি তুলেছেন, আর অস্থায়ী নয়, জনস্বার্থে এ বার সেখানে স্থায়ী সেতু গড়ুক সরকার।
প্রশাসন ও স্থানীয় সূত্রের খবর, ব্যবসা, বাণিজ্য-সহ নানা কারণে প্রতিদিন বড় বড় পণ্যবাহী ট্রাকের যাতায়াত এই শহরে। শহরের ভিতরে গাড়ির চাপ কমাতে ১৯৯৩-’৯৪ সালে ময়ূরাক্ষী নদীর দক্ষিণ পাড়ে সাঁইথিয়া ওল্ড কান্দি রোড ও উত্তর পাড়ের বহরমপুর রাস্তার তালতলা মোড়ের মধ্যে ওই অস্থায়ী রাস্তা তৈরি করে জেলা পরিষদ। ফলে শহরের মধ্যে থাকা রেলসেতুর পূর্ব পাড়ে যাতায়াত করা অধিকাংশ পণ্যবোঝাই ভারী গাড়ি সাঁইথিয়া ইউনিয়ন বোর্ড মোড় থেকে নতুন ব্রিজ তালতলা হয়ে ওই অস্থায়ী রাস্তা দিয়ে চলাচল করে। তাতেও যদিও সাঁইথিয়ার যানজটের ছবিটা তেমন পাল্টায়নি বলেই বাসিন্দাদের ক্ষোভ। কারণ, প্রতি বর্ষায় নদীর জলের তোড়ে পাথর-মোড়াম দিয়ে তৈরি ওই রাস্তা ভেঙে যায়। সাধারণত জুন-অক্টোবর ওই রাস্তা বন্ধ থাকে।
আর তার ফলে সমস্ত গাড়ির চাপ এসে পড়ে শহরের মাঝ দিয়ে যাওয়া একমাত্র রাস্তার উপর। স্বাভাবিক ভাবেই যানজটের সমস্যা আরও ভয়াবহ রূপ নেয়। কাজে বা ট্রেন-বাস ধরতে আসা আশপাশের বিস্তীর্ণ এলাকার লোকজনকে প্রায় তিন কিলোমিটার ঘুরে হাটবাজার, রেল স্টেশন, বাসস্ট্যান্ড আসতে হয়। তেমনই নদীর দক্ষিণ পাড়ের বাসিন্দাদের তালতলা, কোটাসুর বা গদাধরপুর এলাকায় পৌঁছতে একই রকম ঘুরপথে যেতে হয়। এ বারও জুনের প্রথম বৃষ্টিতেই ময়ূরাক্ষীর জলের তোড়ে গোটা রাস্তা ভেসে যাওয়ার আশঙ্কায় প্রশাসন তার মাঝামাঝি অনেকটা কেটে দেয়। সম্প্রতি জলের তোড়ে সেই রাস্তার অনেকটাই ভেসে গিয়েছে। সমস্যায় পড়ে সাঁইথিয়ার বাসিন্দা কিসান অগ্রবাল, মহাবীর জয়সবালরা বলছেন, ‘‘ওই অস্থায়ী রাস্তার বদলে এ বার স্থায়ী সেতু প্রয়োজন। তাতে যেমন সাঁইথিয়ায় গাড়ির চাপ কমবে, তেমনই দু’পাড়ের হাজার হাজার মানুষের ভোগান্তিও কমবে।’’
যদিও ওই অস্থায়ী সড়কটি পুরসভার এক্তিয়ারে পড়ে না বলেই জানিয়েছেন সাঁইথিয়া পুরপ্রধান বিপ্লব দত্ত। তাঁর বক্তব্য, ‘‘জেলাপরিষদ দায়িত্ব দেওয়ায় আমরা কেবল নদীর উপর ওই রাস্তার দেখভাল করি। সত্যিই বর্ষা বা কোনও কারণে তা বন্ধ হলে যানজটে শহরবাসীর নাভিশ্বাস উঠে যায়।’’ অন্য দিকে, জেলা পরিষদের সভাধিপতি বিকাশ রায়চৌধুরীর আশ্বাস, বিষয়টি নিয়ে প্রশাসনও চিন্তিত। ময়ূরাক্ষীর ওই স্থানে একটি সেতু করার ভাবনা-চিন্তা শুরু হয়েছে।
নেই পথবাতি। সাঁইথিয়া ৯ নম্বর ওয়ার্ডের ফইজুল্লাবাদ হয়ে রক্ষাকালীতলা বা আমোদপুর রাস্তা যেতে রেললাইনের তলা দিয়ে একটি আন্ডারবাস রাস্তা আছে। সেখানে কোনও পথবাতি নেই। সন্ধ্যার পরে ওই আন্ডারপাস দিয়ে যাতায়াত করতে সমস্যা হয় লোকজনের। আন্ডারপাসের দু’পাশে পথবাতির দাবি জানিয়েছেন স্থানীয় বাসিন্দারা। পুরপ্রধান বিপ্লব দত্ত বলেন, ‘‘ওখানে আলোর ব্যবস্থা আছে। মাঝে মধ্যে কেউ তা ভেঙে দেয়। ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’’