ছড়িয়েছে এমনই ছবি। নিজস্ব চিত্র
লকডাউনে ঘরবন্দি গোটা রাজ্য। নেই কোলাহল। সুনসান পরিবেশে লোকালয়ে ঘুরে বেড়াতে দেখা যাচ্ছে হরিণ। পুরুলিয়ার মানবাজারের বেশ কয়েকটি গ্রামে এই ছবি ধরা পড়েছে।
মানবাজার-বাঁকুড়া সীমানায় দোলাডাঙা, শাসনগোড়া, জামদা, ধগড়ার মতো মানবাজার থানার অন্তর্গত গ্রামে হরিণের ঘোরাফেরার ছবি ভাইরাল হয়েছে সোশ্যাল মিডিয়ায়। হরিণের আনাগোনায় গরামের শোভাবর্ধন হচ্ছে। তবে এই দৃশ্য বন দফতরের আধিকারিকদের একাংশের মনে অন্য এক আশঙ্কার জন্ম দিয়েছে। তাঁদের আশঙ্কা, চোরাশিকারি বা দুষ্কৃতীদের নজরে পড়লে বেঘোরে মরতে হবে হরিণকে। সেই কারণে, মানবাজার সংলগ্ন বাঁকুড়ার বনপুখুরিয়া ডিয়ার পার্কের আধিকারিকদের বিষয়টি জানিয়েছেন বন দফতরের মানবাজার রেঞ্জ কর্তৃপক্ষ।
বন দফতর সূত্রে খবর, ওই হরিণগুলি বাঁকুড়ার বনপুখুরিয়া ডিয়ার পার্কের। ডিয়ার পার্কটি রানিবাঁধ থানার অন্তর্গত। রানিবাঁধ থানার পুড্ডি পঞ্চায়েতের কিছুটা অংশ আবার মুকুটমণিপুর জলাধারের পশ্চিম প্রান্তে পুরুলিয়ার মানবাজার থানা লাগোয়া। বাজারহাট করতে ওই এলাকার বাসিন্দারা মানবাজারে আসেন। স্থানীয় বাসিন্দাদের একাংশের দাবি, ডিয়ার পার্কে বেড়া থাকলেও তার ফাঁক গলে হরিণ মাঝেমধ্যেই ডিয়ার পার্কের বাইরে বেরিয়ে লোকালয়ে ঢুকে পড়ে। লকডাউন-এ চেনা কোলাহল উধাও হওয়ায় এখন মাঝেমধ্যেই গ্রামের রাস্তায়, চাষির খামারে বা সংলগ্ন জঙ্গলে দেখা মিলছে হরিণের। লোকালয়ে হরিণ ঘুরতে দেখে সেই ছবি অনেকেই ক্যামেরাবন্দি করেছেন। পরে সেই ছবিই ভাইরাল হয়েছে সোশ্যাল মিডিয়ায়।
দোলাডাঙা প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষক সৌমেন মণ্ডল বলেন, ‘‘ডিয়ার পার্কের ভেঙে যাওয়া বেড়ার ফাঁক গলে মাঝেমধ্যে হরিণ বেরিয়ে পড়ে। কখনও স্কুলের পাশ দিয়েই হরিণ ছুটতে দেখেছি।’’
ডিয়ার পার্কের বাইরে হরিণের দেখা মেলায় চিন্তায় রয়েছেন বন দফতরের মানবাজার রেঞ্জের আধিকারিকদের একাংশ। পুরুলিয়া জেলা বন দফতরের এক আধিকারিক বলেন, ‘‘হরিণ আমাদের এলাকায় থাকে না। বনপুখুরিয়া ডিয়ার পার্কে থাকে। কিন্তু আমাদের জেলায় কিছু ঘটে গেলে তার দায় আমাদের উপরে এসে পড়তে পারে। তাই কর্মীদের নজর রাখতে বলেছি।’’
বন দফতরের মানবাজারের রেঞ্জ আধিকারিক অশোক চক্রবর্তী বলেন, ‘‘ডিয়ার পার্কের কাছেই দোলাডাঙা পিকনিক স্পট রয়েছে। হরিণ বাইরে চরে বেড়াচ্ছে, এই খবর আমাদের কর্মীরা ডিয়ার পার্কের কর্মীদের জানিয়েছেন। এ ছাড়া দফতরের ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকেও এই খবর জানানো হয়েছে।’’