এক বছর আগের সেই ঘটনা। — ফাইল চিত্র।
দিন দশেক আগেও বগটুই গ্রামের ভিতরে কোনও শহিদ বেদি দেখেননি কেউ। এখন সেই গ্রামেই ৫০ ফুট দূরত্বে রাস্তার দু’পাশে দু’দুটো শহিদ বেদি। তৈরি করেছে যুযুধান দুই রাজনৈতিক দল তৃণমূল ও বিজেপি। সিপিএমের তরফে শহিদ বেদি তৈরি না করা হলও প্রতিবাদ কর্মসূচি ছিল।
মঙ্গলবার বগটুইয়ের হামলা, হত্যার বর্ষপূর্তিতে এ ভাবেই সব রাজনৈতিক দলের কর্মসূচিতে সরগরম ছিল বগটুই। তার ঠিক পরেই আবার বগটুই ফিরে এসেছে আগের পরিস্থিতিতে। বর্ষপূর্তি পরের দিন গ্রামে আর কোনও রাজনৈতিক নেতাদের দেখা মেলেনি। পুলিশ পাহারা, নজরদারি ক্যামেরা অবশ্য রয়েছে। তাতে অভ্যস্ত হয়ে যাওয়া গ্রামের মানুষ বলছেন, ‘‘রাজনীতিতেই নজর। অনুন্নয়নের বিষয়ে নজর নেই।’’
বাসিন্দাদের ক্ষোভ, ১৪ নম্বর জাতীয় সড়কের ধারে বগটুই মোড় থেকে বগটুই গ্রামের ভিতর দিয়ে খানা খন্দে ভরা রাস্তা সংস্কার নিয়ে কোনও রাজনৈতিক দলের কোনও হেলদেল নেই। ছাত্রীর অভাবে প্রায় বন্ধের মুখে বগটুই গ্রামের ভিতরে জুনিয়র গার্লস হাইস্কুলে ছাত্রী সংখ্যা বৃদ্ধির জন্য দলমত নির্বিশেষে কোনও উদ্যোগ নেই। সব দেখেশুনে গ্রামের সাধারণ মানুষের ক্ষোভ, পঞ্চায়েত ভোটের আগে বগটুই গ্রামকে দাবার ঘুঁটি হিসেবে ব্যবহার করা হচ্ছে না তো?
আমজাদ শেখ নামে গ্রামের এক দিনমজুর বললেন, ‘‘ শান্ত পরিবেশকে আরও বিষিয়ে গেলেন রাজনৈতিক নেতারা।’’ আলকিশ বেওয়া নামে এক ষাটোর্দ্ধ বৃদ্ধার কথায়, ‘‘ভোট তো মানুষ পছন্দ মতো দেবে। তার আগে এই সবের কোনও কি প্রয়োজন ছিল?’’
তৃণমূলের রামপুরহাট ১ ব্লক সভাপতি সৈয়দ সিরাজ জিম্মির দাবি, ‘‘বগটুই গ্রামের মানুষের সঙ্গে রাজনীতির ঊর্দ্ধে বরাবরই যোগাযোগ ছিল, এখনও আছে, আগামীদিনেও থাকবে। বিজেপি এখানে রাজনীতির খেলা খেলতে চাইছে।’’ বিজেপির বীরভূম সাংগঠনিক জেলার সভাপতি ধ্রুব সাহার পাল্টা দাবি, ‘‘তৃণমূল নেতারা হত্যাকাণ্ড ঘটিয়েছে। আমরা মৃত পরিবারের পাশে থাকতে চাইছি।’’ সিপিএমের জেলা সম্পাদকমণ্ডলীর সদস্য সঞ্জীব বর্মণ দাবি করছেন, ‘‘আমরা গণতান্ত্রিক পদ্ধতিতে এলাকার মানুষকে সঙ্গে নিয়ে বগটুইয়ের দোষীদের গ্রেফতারের দাবিতে আন্দোলন চালিয়ে যাব।’’