স্তম্ভের গায়ে ফাটল। নিজস্ব চিত্র।
নির্মীয়মাণ উড়ালপুলের একটি স্তম্ভে ফাটল ধরা পড়ল বাঁকুড়ার বিষ্ণুপুরে। বৃহস্পতিবার এই ফাটলের খবর পাওয়ার পরেই, ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেন সংশ্লিষ্ট দফতরের আধিকারিকেরা। তাঁরা জানান, ফাটলটি পরীক্ষা করে দেখা হবে। যদি তা গভীর হয়, তবে ওই স্তম্ভটি (পেডেস্টাল) পাল্টে দেওয়া হবে।
বিষ্ণুপুর রেলফটকের সামনে ২০১৭ সালের ডিসেম্বরে কেন্দ্রীয় সড়ক পরিবহণ মন্ত্রক থেকে ১,২০৬ মিটারের এই উড়ালপুল তৈরির প্রকল্প নেওয়া হয়। এখনও কাজ পুরোপুরি শেষ হয়নি। এ দিন যে অংশের স্তম্ভে ফাটল দেখা গিয়েছে, সেটি ২০১৮ সালের শেষ দিকে নির্মিত হয়েছিল বলে নির্মাণকারীদের সূত্রে খবর। উড়ালপুলের ‘প্রজেক্ট ইমপ্লিমেন্টেশন ইউনিট’-এর এগজ়িকিউটিভ ইঞ্জিনিয়ার অরূপকুমার মাইতি বলেন, ‘‘নির্মীয়মাণ উড়ালপুল প্রায়ই পরিদর্শন করা হয়। আগে, ফাটলটি আমাদের নজরে পড়েনি।’’ এ ধরনের ফাটলের কারণে কি দুর্ঘটনা ঘটতে পারত? তাঁর জবাব, ‘‘ঘটতেই পারত।’’
এ দিন কর্মী-আধিকারিকদের নিয়ে ঘটনাস্থলে যান এগজ়িকিউটিভ ইঞ্জিনিয়ার অরূপবাবু। ফাটল পর্যবেক্ষণের পরে, তিনি বলেন, ‘‘যেখানে ফাটল দেখা গিয়েছে, সেটি ছাড়িয়ে না দেখলে কতটা গভীর তা বলা যাবে না। তবে গভীর ফাটল হলে, স্তম্ভটি পরিবর্তন করতে হতে পারে।”
স্থানীয় বাসিন্দা সঞ্চয় দণ্ডপাট, সেলিম খানদের দাবি, ‘‘চালু হওয়ার আগেই যদি ফাটল দেখা যায়, তবে কী ভাবে উড়ালপুল তৈরি হচ্ছে, সে প্রশ্ন থাকছে। নিম্ন মানের সামগ্রী দিয়ে তৈরির আশঙ্কা উড়িয়ে দেওয়া যাচ্ছে না।” যদিও সে অভিযোগ উড়িয়ে অরূপবাবুর দাবি, ‘‘বাইরে থেকে কোনও ধাক্কা বা ভূমিক্ষয়ের কারণে এমনটা হয়ে থাকতে পারে। বিজ্ঞানসম্মত ভাবেই মেরামত করা হবে।”
উড়ালপুলে ফাটল নিয়ে তরজা বেধেছে বিজেপি-তৃণমূলে। বিজেপির বিষ্ণুপুর সাংগঠনিক জেলা সভাপতি বিল্বেশ্বর সিংহের অভিযোগ, ‘‘কেন্দ্রীয় সরকারি প্রকল্পে নির্মীয়মাণ উড়ালপুল যথাযথ ভাবে পর্যবেক্ষণ করেননি দায়িত্বে থাকা রাজ্যের সংশ্লিষ্ট আধিকারিকেরা। বিভিন্ন ক্ষেত্রে তোলা দিতে গিয়ে হয়তো নিম্ন মানের সামগ্রী ব্যবহার করা হয়েছে। ক্ষতি হচ্ছে জনসাধারণের।” এই অভিযোগ উড়িয়ে তৃণমূলের বিষ্ণুপুর সাংগঠনিক জেলা সভাপতি অলক মুখোপাধ্যায়ের পাল্টা দাবি, “রাজ্য সরকারের আধিকারিকেরা পর্যবেক্ষণ ঠিকঠাক করেন বলেই দ্রুত পদক্ষেপ করা গিয়েছে। কী ভাবে এই ফাটল, অনুসন্ধান করছেন তাঁরা। কেন্দ্রের আধিকারিকদেরও তদারক করার কথা। তাঁদের তো দেখাই মেলে না!”