ল্যাম্পসে জয় সিপিএমের

জেলার বিভিন্ন আদিবাসী সমবায় সমিতি বা ল্যাম্পস-এর নির্বাচনে তৃণমূল ধাক্কা খেল রঘুনাথপুর ১ ব্লকে। রবিবারের ভোটে এই ল্যাম্পসটির পরিচালন সমিতির দখল ধরে রাখতে সমর্থ হল সিপিএম।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

রঘুনাথপুর শেষ আপডেট: ২১ ফেব্রুয়ারি ২০১৭ ০১:০৩
Share:

জেলার বিভিন্ন আদিবাসী সমবায় সমিতি বা ল্যাম্পস-এর নির্বাচনে তৃণমূল ধাক্কা খেল রঘুনাথপুর ১ ব্লকে। রবিবারের ভোটে এই ল্যাম্পসটির পরিচালন সমিতির দখল ধরে রাখতে সমর্থ হল সিপিএম। ফল প্রকাশের পর দেখা গিয়েছে, ৪৪টি আসনের মধ্যে ২৬টিতে জিতেছেন সিপিএম সমর্থিত প্রার্থীরা। বাকি ১৮টি পেয়েছে তৃণমূল।

Advertisement

সাম্প্রতিক সময়ে বামেদের হাত থেকে বেশ কিছু ল্যাম্পস দখল করছে শাসকদল। ফলে, রঘুনাথপুর ১ ব্লকে তাদের এই জয়কে তাৎপর্যপূর্ণ বলেই দাবি করছে সিপিএম। দলের পুরুলিয়া জেলা সম্পাদকমন্ডলীর সদস্য প্রদীপ রায় বলেন, ‘‘আদিবাসীদের উন্নয়ন তারাই করছে দাবি করে তৃণমূল যে প্রচার করে, তা যে অন্তঃসারশূন্য, বরং তৃণমূলের সময়ে আদিবাসীদের প্রকৃত উন্নয়ন হয়নি, এটা বুঝেই ল্যাম্পসের সদস্যেরা রঘুনাথপুরে তৃণমূলকে প্রত্যাখান করেছেন।” তবে, এলাকার তৃণমূল নেতা তথা জেলা পরিষদের কর্মাধ্যক্ষ হাজারি বাউরির পাল্টা দাবি, ল্যাম্পসে দলীয় প্রতীক নিয়ে নির্বাচন হয় না। সিপিএম যাঁদের নিজেদের জয়ী সদস্য বলে দাবি করেছে, সে রকম অন্তত দশ জন আদতে তৃণমূলের সমর্থক। ফলে তৃণমূলকে বোর্ড গঠন তাঁরা সমর্থন দেবেন।

এই ল্যাম্পসটি গত তিন দশক ধরে সিপিএমের দখলেই আছে। এত দিন সেখানে নির্বাচন হত না। এ বার ল্যাম্পসের দখল পেতে আসরে নেমেছিল শাসকদল। নির্বাচনে সমস্ত আসনেই তারা প্রার্থী দিয়েছিল। জেলা পরিষদের স্থানীয় দুই কর্মাধ্যক্ষ হাজারিবাবু ও অনাথবন্ধু মাজি এবং যুব তৃণমূল নেতা মুকুল বন্দ্যোপাধ্যায় দলের তরফে নির্বাচনের দায়িত্বে ছিলেন দেখভাল করছিলেন। ল্যাম্পস সূত্রে জানা গিয়েছে, এই ব্লকের সাতটি পঞ্চায়েতের মধ্যে আড়রা বাদ দিয়ে বাকি ছ’টি পঞ্চায়েতেই ল্যাম্পসের সদস্যেরা আছেন। বেড়ো ও চোরপাহাড়ি পঞ্চায়েত এলাকায় আছে দশটি আসন। এখানে ন’টিতে জিতেছে তৃণমূল। শাঁকা ও বাবুগ্রাম পঞ্চায়েত এলাকার আটটি আসনের মধ্যে মাত্র তিনটিতে জিততে সমর্থ হয়েছে শাসকদল। খাজুরা পঞ্চায়েতের ১২টির মধ্যে ছ’টি তাদের ঝুলিতে গিয়েছে। শোচনীয় ফল হয়েছে নতুনডি পঞ্চায়েতে। এখানে ১৪টি আসনের সব ক’টিতেই জিতেছে সিপিএম। বস্তুত, নতুনডি পঞ্চায়েত এলাকায় তৃণমূলের অন্দরের দ্বন্দ্ব দীর্ঘদিনের। দলের আশঙ্কা ল্যাম্পসের নির্বাচনে এই গোষ্ঠীদ্বন্দ্বের প্রভাব পড়েছে।

Advertisement

সম্প্রতি পাশের ররঘুনাথপুর ২ ব্লকের নীলডির একটি ল্যাম্পস দীর্ঘদিন পরে সিপিএমের হাত থেকে ছিনিয়ে নিয়েছে তৃণমূল। কিন্তু রঘুনাথপুরের ক্ষেত্রে ধাক্কা খেল তারা কেন, সে প্রশ্নের সদুত্তর মেলেনি অনাথবন্ধুবাবুর কাছ থেকে। এই নির্বাচনে দলের কোনও বিষয় নেই এবং ল্যাম্পসের বিষয়টি সম্পূর্ণ ভাবে আদিবাসী সম্প্রদায়ের নিজেদের বিষয় বলে মন্তব্য এড়িয়ে গেছেন তিনি। আর এক কর্মাধ্যক্ষ হাজারিবাবু অবশ্য বলেন, ‘‘সাড়ে তিন দশক ধরে নির্বাচনকে প্রহসনে পরিণত করেছিল সিপিএম। ল্যাম্পসের সদস্যেরাই জানতেন না, তাঁদের ভোটাধিকার আছে।’’ সেই জায়গা থেকে ল্যাম্পসে নির্বাচন করাতে তাঁরা সমর্থ হয়েছেন, এটাই তাঁদের একটা বড় নৈতিক জয় বলে তিনি মনে করছেন।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement