বোলপুরে বামেদের কর্মিসভা। এলেন সূর্যকান্ত মিশ্র। —নিজস্ব চিত্র।
শিবপুর নিয়ে ফের সরব বামেরা।
সোমবার বোলপুরের গীতাঞ্জলি প্রেক্ষাগৃহে দলের জেলা শাখা সম্পাদক স্তর পর্যন্ত সাধারণ সভার ঘণ্টা দু’য়েকের বৈঠক শেষে জমি অধিগ্রহণ প্রসঙ্গে সূর্যকান্তবাবু বলেন, ‘‘বর্তমান বাজার মূল্যের চার গুন দাম দিতে হবে। গণ শুনানির ব্যবস্থা করে, যা নিয়ম রয়েছে সেই অনুযায়ী জমি অধিগ্রহণ করতে হবে সরকারকে। জমি ফেলে রেখে কি হবে। যে উদ্দেশ্যে জমি নেওয়া, সে কাজে জমি ব্যবহার না হলে, ফেরত দিতে হবে। শিল্প স্থাপন করতে হলে সরকারকে শিল্প করতে হবে।’’
গত শনিবারই শিবপুর মৌজায় জমি আন্দোলনের নামে বিরোধীদের ‘প্ররোচনা’য় পা না দিতে স্থানীয় বাসিন্দাদের অনুরোধ করছিলেন তৃণমূলের মন্ত্রী-নেতারা। সেই সঙ্গে রাজ্য সরকারের চেষ্টায় স্থানীয়দের কর্মসংস্থানের সুযোগ হবে বলেও আশ্বাস দেন। মঞ্চ থেকে মন্ত্রী ফিরহাদ হাকিম, তৃণমূলের শীর্ষ নেতা সুব্রত বক্সির মুখে এই কথা শুনে খুশি হয়েছিলেন জমিদাতাদের একটা বড় অংশ। তবে জমিদাতাদের একটি অংশ ওই জমিতে শিল্পের দাবিতে আন্দোলনের পথ থেকে সরে আসতে নারাজ। তৃণমূল রাজ্যে ক্ষমতায় আসার পরে ওই জমিতে শিল্পের দাবিতে আন্দোলন করেছেন স্থানীয় জমি মালিক এবং কৃষক ও বর্গাদারদের একাংশ। কংগ্রেস এবং বিজেপির মতো সিপিএমও আন্দোলনকারীদের সমর্থন জানিয়েছে বরাবরই। ঘটনা হল, বাম জমানাতেই ২০০১ সালে শিবপুর মৌজায় শিল্পের জন্য প্রায় তিনশো একর জমি অধিগৃহীত হয়। এবং অধিগৃহীত জমিতে শিল্প, কর্ম সংস্থান, ন্যায্য ক্ষতিপূরণের দাবিতে এক সময় সরব হয় তৎকালীন বিরোধী তৃণমূল।
এ দিনের সভায় জেলার শাখা সম্পাদক স্তর পর্যন্ত প্রায় সাড়ে আটশো নেতা উপস্থিত ছিলেন। সূত্রের খবর, ওই সভায় মতাদর্শ, রাজনীতি, সংগ্রাম আর সংগঠন এই চারটে হাতিয়ারকে আরও শাণিত করে মানুষের লড়াইয়ের পাশে দাঁড়াতে নির্দেশ দেন সূর্যকান্তবাবু।
পঞ্চায়েত নির্বাচন নিয়ে এক প্রশ্নের উত্তরে তিনি বলেন, “ওরা থাকুন ( তৃণমূল নেতারা)। যে ভাবে হানাহানি করছে, যেমন করে যদু বংশ ধ্বংস হয়েছে, সেটা ওদের বড় চিন্তা হওয়া উচিত। আর পঞ্চায়েত নির্বাচন এখন ঘোষণা হয়নি। আদৌ হবে কি না, জানি না। ক’ দিন আগে পুরসভা নির্বাচন নিয়ে, যা হল। ৩৪ বছর সরকারে থাকার সময়ে, আমরা নিয়ম মেনে পাঁচ বছর অন্তরে নির্বাচন করেছি। কোন জায়াগায় আদালতে যেতে হয়নি, নির্বাচন করবার জন্য। নির্বাচন নিয়ে মোটেও ভাবিত নই। আমরা নির্বাচনে লড়াই করব, তবে সবার আগে মানুষের সমস্যা নিয়ে আন্দোলন ও সংগ্রাম করব।’’ এ দিনের সভায় ছিলেন, কেন্দ্রীয় কমিটি সদস্য তথা প্রাক্তন সাংসদ রামচন্দ্র ডোম, জেলা সম্পাদক মনসা হাঁসদা সহ জেলা নেতারা।