ইদের কেনাকাটা। পুরুলিয়া শহরের চাইবাসা রোডে। নিজস্ব চিত্র।
দূরত্ব বজায় রেখে, স্বাস্থ্য-বিধি মেনে, যথাসম্ভব কম জমায়েত করে এ বার ইদের নমাজ হবে পুরুলিয়া ও বাঁকুড়ার বিভিন্ন এলাকায়। বৃহস্পতিবার অধিকাংশ আয়োজক এমনটাই জানিয়েছেন।
প্রতি বছর ইদের দিন পুরুলিয়া শহরের ইদগা ময়দানে কয়েক হাজার মানুষ নমাজ পড়েন। বর্তমান পরিস্থিতির কথা ভেবে এ বার সেখানে জমায়েত বন্ধ করা হয়েছে বলে পুরুলিয়া ষোলোআনা ইদগা কবরস্থান কমিটির তরফে মহম্মদ আসিফ জানান। তিনি বলেন, ‘‘পুরুলিয়া শহরের সংক্রমণের পরিস্থিতি বিবেচনা করে বৈঠকে এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।’’ পুরুলিয়া বড় মসজিদের ইমাম জয়নুল আবেদিন জানান, পরিস্থিতির কথা বিবেচনা করে স্বাস্থ্য-বিধি মেনেই এ বার নমাজ হবে। ঝালদা ১ পঞ্চায়েত সমিতির সহ সভাপতি শেখ সোলেমান বলেন, ‘‘ঝালদায় ইদগাতে নমাজ পড়া হলেও নির্দিষ্ট দূরত্ব-বিধি মেনে, সীমিত লোকজনই সেখানে নমাজে যোগ দেবেন।’’
‘পুরুলিয়া জেলা ইমাম অ্যান্ড মোয়াজ্জিম অ্যাসোসিয়েশন’-এর সম্পাদক মহম্মদ আব্বাস আনসারি জানান, জেলায় তিনশোর বেশি মসজিদ রয়েছে। সংক্রমণ ছড়ানোর আশঙ্কা থাকায় প্রতিটি মসজিদ কমিটিকে জমায়েত না করার কথা জানিয়ে দেওয়া হয়েছে। তিনি বলেন, ‘‘ওয়াকফ চিঠি দিয়ে আমাদের জানিয়েছে, শারীরিক দূরত্ব ও কোভিড আচরণ-বিধি মেনে ৫০ জন পর্যন্ত জমায়েতের অনুমতি দেওয়া যেতে পারে। কিন্তু জেলার যা সংক্রমণ পরিস্থিতি, তাতে আরও কম জমায়েত করার সিদ্ধান্ত নিয়েছি আমরা।’’ তিনি জানান, ইদের নমাজ এ বার বাড়িতেই পড়ার বার্তা দেওয়া হয়েছে। পুরুলিয়া পুরসভার প্রাক্তন পুরপ্রধান সামিমদাদ খান বলেন, ‘‘গত বারও আমি ইদের নমাজ বাড়িতেই পড়েছিলাম। এ বারও সে ভাবেই পড়ব।’’
বাঁকুড়া জেলা ইমাম পরিষদের সম্পাদক সরিফুল ইসলাম জানান, স্বাস্থ্য-বিধি মেনে চলার ব্যাপারে জেলার মসজিদগুলির ইমামদের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। কোনও মসজিদে পঞ্চাশ জনের বেশি জমায়েত করা যাবে না। পাড়ায়-পাড়ায় কম সংখ্যক মানুষ নিয়ে নমাজ পড়তে বলা হয়েছে। সর্বত্র মাস্ক ও জীবাণুনাশক রাখা বাধ্যতামূলক। শিশুদের বাইরে আনতে মানা করা হয়েছে। তিনি বলেন, ‘‘নমাজের পরে কোলাকুলি বা হাত মেলানো বারণ। বলা হয়েছে, মৌখিক ভাবে শুভেচ্ছা বিনিময় করতে।’’
বড়জোড়ার দন্ত চিকিৎসক মহম্মদ আলি জানান, পাড়ার বেশ কয়েকটি জায়গায় নমাজ পড়ার ব্যবস্থা হচ্ছে। জীবাণুমুক্ত করা হচ্ছে জায়গাগুলি। ইন্দাসের রোল গ্রামের বড় মসজিদ কমিটির অন্যতম সদস্য সাহিদুর রহমান চৌধুরী জানান, থানার নির্দেশ পুরোপুরি মেনে চলা হবে। বেশিরভাগ মানুষ নিজের নিজের পাড়ায় নমাজ পড়বেন বলে জানিয়েছেন পাত্রসায়রের জিয়ারুল ইসলাম। তাঁরা জানান, শিশুদের মন খারাপ হতে পারে। কিন্তু তাদের সুরক্ষার কথা ভেবেই বাইরে আনা হবে না।