শুক্রবার তোলা নিজস্ব চিত্র।
প্রায় এক বছর ধরে বন্ধ থাকা কেন্দ্রীয় সমবায় ব্যাঙ্ক অবিলম্বে চালুর দাবিতে এ বার পথে নামল বিজেপি-ও। শুক্রবার বোলপুর পুরসভায় দলের প্রার্থীদের নিয়ে ওই দাবিতে পথ অবরোধের পাশাপাশি বিক্ষোভও দেখায় বিজেপি। এ দিন বোলপুরের চৌরাস্তায় সকাল ১১টা থেকে প্রায় আধঘণ্টার প্রতীকী অবরোধে সামিল হয় বিজেপি। সাড়ে ১১টা নাগাদ তারা কর্মসূচি প্রত্যাহার করে নেন। ওই কর্মসূচিতে বিজেপি কেন্দ্রীয় সমবায় ব্যাঙ্কের আমানতকারীদের টাকা ফেরত-সহ একাধিক দাবি জানিয়েছে। এরই সঙ্গে শাসকদল তৃণমূলের ‘মিথ্যা প্রতিশ্রুতি ও ভাঁওতাবাজি’র বিরুদ্ধে আসন্ন পুরভোটের ব্যালটে জবাব দেওয়ার আহ্বানও জানান বিজেপি নেতৃত্ব।
প্রসঙ্গত, প্রায় ৬২ কোটি টাকার ঋণ খেলাপি হওয়ায় ২০০৭ সালে রিজার্ভ ব্যাঙ্ক ‘ব্যাঙ্কিং রেগুলেশন অ্যাক্ট ১১/১’ আরোপ করে ‘বীরভূম কেন্দ্রীয় সমবায় ব্যাঙ্কে’র সব ক’টি শাখায় ঋণদানের উপর নিষেধাজ্ঞা জারি করেছিল। রিজার্ভ ব্যাঙ্কের নিয়ম অনুযায়ী, কোনও ঋণ তথা অনুৎপাদক সম্পদের (এনপিএ) পরিমাণ পাঁচ শতাংশের বেশি হওয়া চলবে না। কিন্তু, বীরভূম জেলা কেন্দ্রীয় সমবায় ব্যাঙ্ক যে পরিমাণ ঋণ দিয়েছিল, তার ৫২ শতাংশই খেলাপি বা অনুৎপাদক সম্পদে পরিণত হয়। সংশ্লিষ্ট মহলের দাবি, ব্যাঙ্ক বাঁচাতে রাজ্য সরকার যদি ওই পরিমাণ অর্থ দিয়ে দিত, তা হলে এই সমস্যা হত না। অভিযোগ, রাজ্য সরকার তেমন কোনও উদ্যোগ না নেওয়ায় চরম পদক্ষেপ করে রিজার্ভ ব্যাঙ্ক। লাইসেন্স বাতিল হয়ে তালা ঝোলে জেলার সংশ্লিষ্ট ব্যাঙ্কের ১৭টি শাখাতেই। ওই ঘটনার পর থেকে সমানে আন্দোলন অবস্থান, বিক্ষোভ জেলার বিভিন্ন প্রান্তে চলছে।
এ দিন বিজেপি-র জেলা সহ-সভাপতি দিলীপ ঘোষ বলেন, “সম্প্রতি ওই ব্যাঙ্ক চালু করার জন্য কেন্দ্র সরকার এবং নাবাড প্রয়োজন মোতাবেক অর্থ মঞ্জুর করেছেন। তার পরেও রাজ্যের তৃণমূল সরকার ব্যাঙ্ক চালু করা নিয়ে টালবাহানা করছে। মিথ্যা প্রতিশ্রুতি দিচ্ছে। পয়লা বৈশাখ খোলার অঙ্গীকার এবং প্রতিশ্রুতি দিয়েছিল। কিন্তু হয়নি।’’ তারই প্রতিবাদে, এ দিনের প্রতীকী পথ অবরোধ ও অবস্থান-বিক্ষোভ বলে তিনি জানান। তাঁর দাবি, রাজ্য সরকার অবিলম্বে ব্যাঙ্ক চালু করে, আমনতকারীদের সুরাহা করুক। জেলা বিজেপি নেতৃত্বের দাবি, আসন্ন পুরভোটে জেলার চারটি পুরসভার নির্বাচনী ফলাফলেই সংশ্লিষ্ট ব্যাঙ্কের আমানতকারীরা এর জবাব দেবেন। তৃণমূল অবশ্য বিজেপি-র দাবিকে উড়িয়ে দিয়েছে। দলের নেতাদের বক্তব্য, রাজ্য সরকার বীরভূম জেলা কেন্দ্রীয় সমবায় ব্যাঙ্কের পুনরুজ্জীবনের ব্যাপারে সক্রিয়। খুব শীঘ্রই জট কেটে ব্যাঙ্ক খুলতে চলেছে।