ভরা তিলপাড়া জলাধার। তর্পণ নিয়ে শঙ্কা। —ফাইল চিত্র।
রাত ফুরোলেই মহালয়ার ভোর। তর্পণে শামিল হবেন বহু মানুষ। কিন্তু সিউড়ি শহরে তর্পণের জন্য আলাদা করে কোনও ঘাটের ব্যবস্থা নেই। প্রতি বছর ময়ূরাক্ষীর পাড়েই শয়ে শয়ে মানুষ তর্পণ করেন। অভিযোগ, সেখানে তর্পণের জন্য আলাদা কোনও ব্যবস্থা নেই। অন্য বছর কোনও রকমে সেখানে তর্পণ করা গেলেও এ বার টানা বৃষ্টির জন্য তিলপাড়া জলাধার থেকে জল ছাড়া হয়েছে। ফলে ময়ূরাক্ষীর জল স্তর বেশ খানিকটা বেড়েছে। এই পরিস্থিতিতে কী ভাবে পাড়ে তর্পণ করা যাবে তা নিয়ে শঙ্কায় রয়েছে শহরবাসীর একাংশ। তাঁরা বিপদের আশঙ্কাও উড়িয়ে দিচ্ছেন না।
সেচ দফতর সূত্রে জানা গিয়েছে, গত কয়েক দিনের মতো সোমবারও তিলপাড়া থেকে জল ছাড়া হয়েছে। জেলা প্রশাসন সূত্রে জানা গিয়েছে, বিপদের কথা মাথায় রেখে বুধবার ভোরে ময়ূরাক্ষী নদীর পাড়ে বিশেষ নিরাপত্তার ব্যবস্থা রাখা হবে। প্রসঙ্গত, সিউড়ি শহরের কয়েকটি পুকুরে মহালয়ার ভোরে তর্পণের ব্যবস্থা থাকলেও সিংহভাগ মানুষ ভিড় জমান ময়ূরাক্ষীর তীরে। পরিবেশ খুব একটা স্বাস্থ্যকর না হলেও, বছরের পর বছর সেখানেই তর্পণ হয়ে আসবে।
এ বছর পরিস্থিতি অন্য রকম। সেচ দফতরের এগ্জ়িকিউটিভ ইঞ্জিনিয়ার সন্দীপ দাস বলেন, “গত তিন-চার দিন ধরে দৈনিক গড়ে সাড়ে তিন থেকে চার হাজার কিউসেক জল ছাড়া হচ্ছে তিলপাড়া জলাধার থেকে। মঙ্গলবারও প্রায় একই পরিমাণে জল ছাড়া হবে। জল ছাড়া হতে পারে বুধবারেও। তবে এর ফলে নদীর জলস্তর কতটা বাড়বে, তা নির্দিষ্ট করে বলার মতো পরিকাঠামো আমাদের হাতে নেই। ময়ূরাক্ষী নদীর তীরে তর্পণের কাজ হলে সেখানে নিরাপত্তা দেওয়া আমাদের এক্তিয়ারে নয়। তবে, জল ছাড়ার পরিমাণের বিষয়টি আমরা জেলা প্রশাসনের সংশ্লিষ্ট বিভাগগুলিকে জানিয়েছি।”
জেলা প্রশাসন সূত্রে জানা গিয়েছে, সোমবার এই বিষয়টি নিয়ে সদর প্রশাসনের সঙ্গে সিউড়ি থানার আইসির একটি বৈঠক হওয়ার কথা ছিল। তবে অন্য প্রশাসনিক ব্যস্ততার কারণে সে বৈঠক সম্ভব হয়নি। যদিও জেলা প্রশাসনের তরফ থেকে সিভিল ডিফেন্স এবং সিউরি থানাকে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে, মহালয়ার ভোরে ময়ূরাক্ষী নদীর তীরে বিশেষ নিরাপত্তার ব্যবস্থা রাখার জন্য।
সদর মহকুমাশাসক সুপ্রতীক সিংহ বলেন, “জল ছাড়ার বিষয়টি আমাদের গোচরে রয়েছে। সাধারণের নিরাপত্তা যাতে সুনিশ্চিত করা যায়, তার জন্য অবশ্যই প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।”