প্রথমে প্রেম। তারপরে সম্বন্ধ করে হৈ, হুল্লোড় করে বিয়ে। তিন বছর যেতে না যেতে সেই বউকেই কার্বলিক অ্যাসিড খাইয়ে খুনের অভিযোগ!
এখনও পুলিশের কাছে অভিযোগ দায়ের না করলেও তরুণীর বাবা অমিয়কুমার সাহার দাবি, টাকার জন্যে জামাই, শ্বশুর-শাশুড়ি মিলে পরিকল্পনা করে এমন কাণ্ড করেছে। ওই তরুণীর চিকিৎসক বঙ্কু দত্ত জানান, একেবারে শেষ অবস্থায় ওঁকে রামপুরহাট হাসপাতালে আনা হয়েছিল। কথা বলার মতো অবস্থায় ছিল না। সে কারণে জবানবন্দিও নেওয়া যায়নি। মৃত পারমিতা সাহার (২৩) বাড়ি মুর্শিদাবাদের খড়গ্রাম থানার মল্লিকপুরে। সোমবার সকালে পারমিতাকে পাশের জেলার হাসপাতালে ভর্তি করানোর কিছু পরেই মৃত্যু হয়।
পরিবার সূত্রের খবর, বছর তিনেক আগে পারমিতার সঙ্গে খড়গ্রামের মল্লিকপুর গ্রামের বাসিন্দা, স্থানীয় ব্যবসায়ী মিলন সাহার বিয়ে হয়। পারমিতার বাড়িও খড়গ্রামেরই পোড্ডা গ্রামে। তাঁদের একটি ছেলেও রয়েছে। অমিয়বাবুর অভিযোগ, রীতিমতো পণ দিয়ে বিয়ে দেওয়ার পরেও জামাইয়ের চাহিদা পূরণ করতে পারেননি। তাঁর কথায়, ‘‘গত বছরের মে মাসে জামাই একটা জায়গা কেনার জন্যে মেয়েকে দিয়ে দু’লাখ টাকা দিতে বলে। সেই টাকা জোগাড় করতে না পারায় মেয়ের উপরে শারীরিক, মানসিক নির্যাতন করত।’’ এ ব্যাপারে প্রথমেই পুলিশের দ্বারস্থ না হয়ে স্থানীয় ভাবে সমস্যা মেটানোর চেষ্টা করেন অমিয়বাবু। তাতে যে কাজের কাজ কিছুই হয়নি এই ঘটনাই তার প্রমাণ।
পরিবার সূত্রেই জানা গিয়েছে, সোমবার সকালে পারমিতা খড়গ্রামের বাড়িতে মাকে ফোন করে শ্বশুর বাড়ি থেকে নিয়ে যাওয়ার অনুরোধ করে। ঘণ্টাখানেক পরেই একটি অপরিচিত ফোন নম্বর থেকে অমিয়বাবুরা জানতে পারেন, পারমিতাকে রামপুরহাট হাসপাতালে ভর্তি করানো হয়েছে। সেখানে পৌঁছনোর আগেই মৃত্যু হয় পারমিতার। অমিয়বাবুর দাবি, মেয়ের ঠোঁটের কাছে, গলায় অ্যাসিডে পোড়ার দাগ দেখে জামাই কিংবা শ্বশুর-শাশুড়ির সঙ্গে যোগাযোগ করার চেষ্টা করেন। কিন্তু যোগাযোগ করতে পারেননি।
অমিয়বাবুর কথায়, ‘‘যে মেয়ে এক ঘণ্টা আগে ফোন করে বাড়ি ফিরতে চাইল সে নিশ্চয়ই আত্মহত্যা করতে পারে না। টাকার জন্যে ওকে রীতিমতো পরিকল্পনা করে কার্বলিক অ্যাসিড খাইয়ে খুন করেছে জামাই-সহ ওর শ্বশুরবাড়ির লোকেরা।’’ দ্রুত পুলিশে অভিযোগ দায়ের করার কথাও জানিয়েছেন। পারমিতার স্বামী মিলন, শ্বশুর বাবলু সাহার সঙ্গে বহু চেষ্টা করেও যোগাযোগ করা যায়নি। পুলিশ জানিয়েছে, অভিযোগ দায়ের হলে তদন্ত করে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।