রোগীর আত্মীয়াকে নিগ্রহ করার অভিযোগ উঠল ব্লক স্বাস্থ্যকেন্দ্রের এক চিকিৎসকের বিরুদ্ধে। ওই চিকিৎসককে আবার পাল্টা মারধর করার অভিযোগও উঠেছে। এই গণ্ডগোলের জেরে সব মিলিয়ে বৃহস্পতিবার চাঞ্চল্য ছড়াল রঘুনাথপুর ২ ব্লকের বান্দা ব্লক প্রাথমিক স্বাস্থ্যকেন্দ্রে। বিনীত রঞ্জন নামের ওই চিকিৎসক রোগীর আত্মীয়দের কয়েকজনের বিরুদ্ধে রঘুনাথপুর থানায় অভিযোগ দায়ের করলেন। অন্যদিকে ওই চিকিৎসকের বিরুদ্ধে বিওএমএইচ এবং ব্লক প্রশাসনের কাছে মৌখিক অভিযোগ জানিয়েছেন রোগীর আত্মীয়েরাও।
রঘুনাথপুর ২ ব্লক স্বাস্থ্য আধিকারিক ইন্দ্রনীল মিত্র বলেন, ‘‘চিকিৎসক বিনীতকে রোগীর আত্মীয়েরা মারধর করেছেন। রোগীর আত্মীয়দের আবার অভিযোগ ওই চিকিৎসক না কি তাঁদের নিগ্রহ করেছেন। মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিককে ঘটনাটি জানিয়েছি। রোগীর আত্মীয়েরা লিখিত অভিযোগ জানালে বিভাগীয় তদন্ত করা হবে।”
ব্লক স্বাস্থ্যকেন্দ্রে সূত্রে জানা গিয়েছে, বৃহস্পতিবার সকালে পাড়া থানার ধুলাগড় গ্রামের বাসিন্দা তথা দুবড়া পঞ্চায়েতের তৃণমূল সদস্য মানিক বাউরি তাঁর চার বছরের মেয়ে পুনম বাউরিকে পেটে যন্ত্রণা ও বমির উপসর্গ নিয়ে ওই স্বাস্থ্যকেন্দ্রে যান। সঙ্গে ছিলেন কয়েকজন আত্মীয়ও। জরুরি বিভাগ ও অন্তর্বিভাগের দায়িত্বে থাকা বিনীতবাবু পুনমকে পরীক্ষা করে তাকে ভর্তি করিয়ে নেন।
আত্মীয়দের দাবি, পুনমকে স্যালাইন দেওয়া হবে বলেও ওই চিকিৎসক তাকে স্যালাইন দেননি। পুনম ক্রমশ নেতিয়ে পড়ায়, কেন তাকে স্যালাইন দেওয়া হচ্ছে না, বিনীতবাবুর কাছে তা জানতে চান পুনমের দিদিমা গীতা বাউরি। অভিযোগ সেই সময়েই বিনীতবাবু গীতাদেবীকে নিগ্রহ করেন।
গীতাদেবীর অভিযোগ, ‘‘কেন বাচ্চাটির ঠিক মতো চিকিৎসা হচ্ছে না চিকিৎসকের কাছে জানতে গিয়েছিলাম। উনি আমাদের সাথে অত্যন্ত খারাপ ব্যবহার করেন। প্রতিবাদ করায় আমাকে মারধরও করেছেন তিনি।” অন্য দিকে, ওই চিকিৎসকের পাল্টা অভিযোগ, ‘‘পুনমের প্রয়োজনীয় চিকিৎসাই করা হচ্ছিল। প্রথমে ওআরএস খাইয়ে দিতে বলেছিলাম। প্রয়োজনে স্যালাইন দেওয়ার কথা ভেবেছিলাম। কিন্তু মেয়েটির আত্মীয়েরা প্রথমেই স্যালাইন দেওয়ার দাবি করেছিলেন। ওঁদের বোঝানোর চেষ্টা করা হলেও কিছু না শুনেই কয়েকজন মিলে ওঁরা আমার উপরে চড়াও হয়ে মারধর করে জামা ছিঁড়ে দেয়।” স্বাস্থ্য কর্মীদের হস্তক্ষেপে ঝামেলা মেটে।
মানিকবাবুর দাবি, ‘‘আমার শ্বাশুড়িকেই চিকিৎসক নিগ্রহ করে উল্টে আমাদের বিরুদ্ধেই মিথ্যা অভিযোগ করছেন তিনি।’’ খবর পেয়ে সেখানে যান তৃণমূলের স্থানীয় নেতা দিলীপ মণ্ডল। তিনি বলেন, ‘‘বিষয়টি আমরা ব্লক স্বাস্থ্য আধিকারিক ও ব্লক প্রশাসনকে জানিয়েছি।”
বিডিও সুরজিৎ চট্টোপাধ্যায় বলেন, ‘‘কী ঘটেছে তা জানতে বিএমওএইচের সঙ্গে কথা বলব। এমন যাতে আর না ঘটে, সে জন্য কী করা যায় তাও দেখা হবে।’’