দেবেন মাহাতো সরকারি মেডিক্যাল কলেজ ও হাসপাতাল। —ছবি : সংগৃহীত
র্যাগিংয়ের অভিযোগ উঠল পুরুলিয়া দেবেন মাহাতো সরকারি মেডিক্যাল কলেজ ও হাসপাতালের একাধিক পড়ুয়ার বিরুদ্ধে। ঘটনায় দিল্লিতে জাতীয় মেডিক্যাল কমিশনের দ্বারস্থ হয়েছেন অভিযোগকারী, মেডিক্যালের দ্বিতীয় বর্ষের ওই পড়ুয়া। অভিযোগের প্রেক্ষিতে পুরুলিয়া মেডিক্যাল কলেজ কর্তৃপক্ষের কাছে ‘অ্যাকশন টেকেন রিপোর্ট’ তলব করেছে কমিশন। মেডিক্যালের সুপার সুকোমল বিষয়ী বলেন, “র্যাগিংয়ের একটি অভিযোগ এসেছে। এখান থেকেও যেমন বিষয়টি আমরা জানতে পেরেছি, তেমন দিল্লির ন্যাশন্যাল মেডিক্যাল কমিশনের কাছ থেকেও বিষয়টি আমরা জানতে পেরেছি। পদক্ষেপ হয়েছে।” অ্যান্টি র্যাগিং কমিটির তদন্ত রিপোর্ট দিল্লিতে ন্যাশন্যাল মেডিক্যাল কমিশনের কাছে পাঠানো হয়েছে বলে জানিয়েছেন মেডিক্যাল কলেজের অধ্যক্ষ সব্যসাচী দাস।
মেডিক্যাল কলেজ সূত্রের খবর, গত ১৬ ফেব্রুয়ারি সরস্বতী পুজোর বিসর্জনের সময়ে আবির ছোড়াকে কেন্দ্র করে ঘটনার সূত্রপাত। অভিযোগকারী ছাত্রের দাবি, আবির তাঁর চোখে ঢুকে গিয়েছিল। প্রতিবাদ করায় তৃতীয় বর্ষের এক ছাত্র-সহ আরও তিন পড়ুয়া তাঁকে মারধর করে। এর পরে, জাতীয় মেডিক্যাল কমিশনে অভিযোগ জানান তিনি। গত ১৮ ফেব্রুয়ারি কমিশনের কাছ থেকে চিঠি পাওয়ার পরে ঘটনার তদন্ত শুরু করে পুরুলিয়া মেডিক্যাল কলেজ কর্তৃপক্ষ। অভিযোগকারী ও অভিযুক্ত পড়ুয়াদের অভিভাবকদের তলব করার পাশাপাশি অ্যান্টি র্যাগিং কমিটির বৈঠকও হয়েছে।
সুপার জানান, ওই দিন সরস্বতী পুজোর ভাসানের সময়ে ক্যাম্পাসের বাইরে আবির ছোড়া নিয়ে পড়ুয়াদের দু’পক্ষের মধ্যে তর্কাতর্কি ও কথা কাটাকাটি হয়। এক জনের চোখে আবির লাগে। তাঁর দাবি, “ঘটনাটি খুব বড় না হলেও যেহেতু অভিযোগ উঠেছে, তাই দু’দফায় অ্যান্টি র্যাগিং কমিটির বৈঠক হয়েছে। মারপিটের তেমন কোনও ঘটনা ঘটেনি। ঘটনার পরে পড়ুয়াদের অভিভাবকদের ডাকা হয়েছে।” তাঁর সংযোজন, “আজ ছোট ঘটনা ঘটেছে। কাল বড় কিছু ঘটতেই পারে। তাই সতর্ক করা হয়েছে। তবে ঘটনাটি ক্যাম্পাসের বাইরে হয়েছে, তাই সরাসরি কর্তৃপক্ষের এক্তিয়ারে পড়ে না। এ ব্যাপারে আইনি পদক্ষেপ নিতে হলে ঘটনাটি নিয়ে পুলিশের কাছে অভিযোগ দায়ের করতে হবে। তা পড়ুয়া বা অভিভাবকদের জানিয়েও দেওয়া হয়েছে।” তিনি আরও জানান, এখন কলেজে পরীক্ষা চলছে। পরীক্ষা শেষ হলে পড়ুয়াদের কাউন্সেলিংয়ের বিষয়ে আরও বেশি গুরুত্ব দেওয়ার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। প্রয়োজনে ১৫ জন পড়ুয়াপিছু এক জন ‘মেন্টর’ কাউন্সেলিংয়ের বিষয়টি দেখবেন।
মেডিক্যালের রোগীকল্যাণ সমিতির চেয়ারম্যান শান্তিরাম মাহাতো বলেন, “পুরুলিয়ায় এ ধরনের ঘটনা ঘটে না। আর যাতে তা না ঘটে, তা দেখা হবে।” তাঁর অভিযোগের প্রেক্ষিতে কলেজে কী ব্যবস্থা নেয়, তা দেখার পরে পরবর্তী পদক্ষেপের বিষয়ে ভাববেন বলে জানিয়েছেন অভিযোগকারী পড়ুয়া।