গোলমাল: পুরুলিয়া জেলাশাসকের অফিসের বাইরে। নিজস্ব চিত্র
বিজেপির মহিলা মোর্চার কর্মী-সমর্থকদের সঙ্গে পুলিশের ধস্তাধস্তিকে কেন্দ্র করে তেতে উঠল পুরুলিয়া শহর। বৃহস্পতিবার দুপুরের ঘটনা। বিনা প্ররোচনায় পুলিশের বিরুদ্ধে লাঠিচার্জের অভিযোগ তুলেছে বিজেপি। পুলিশের লাঠির ঘায়ে মহিলা মোর্চার জেলা সভানেত্রী কাবেরী চট্টোপাধ্যায় ও দলের জেলা সভাপতি বিদ্যাসাগর চক্রবর্তী-সহ মোট পাঁচ জন আহত হয়েছেন বিজেপি নেতৃত্বের দাবি। যদিও পুলিশ লাঠিচার্জের অভিযোগ অস্বীকার করেছে।
এ দিন বিজেপির মহিলা মোর্চার পক্ষ থেকে জেলা পুলিশ সুপারের অফিসের সামনে বিক্ষোভ এবং পুলিশ সুপারকে স্মারকলিপি দেওয়ার কর্মসূচি নেওয়া হয়েছিল। দাবির মধ্যে ছিল, বলরামপুরের দলীয় কর্মীদের মৃত্যুর ঘটনার সিবিআই তদন্ত, মহিলাদের উপরে নির্যাতন বন্ধ করা ইত্যাদি। এ দিন বেলা সাড়ে ১২টা নাগাদ শহরের জুবিলি ময়দান থেকে দলের মহিলা মোর্চার কর্মী-সমর্থকদের মিছিল পুলিশ সুপারের অফিসের দিকে রওনা দেয়। মিছিলে বিজেপি কর্মীদের মিথ্যা মামলায় ফাঁসানো-সহ পুলিশ ও রাজ্য সরকারের বিরুদ্ধে স্লোগানও দেওয়া হচ্ছিল। মিছিল যখন পুলিশ সুপারের অফিসের দিকে এগোচ্ছিল, সেই সময় জেলাশাসকের অফিসের গেটের কাছে মিছিল আটকায় পুলিশ বাহিনী। সামনে ছিলেন মহিলা পুলিশ কর্মীরাও।
সঙ্গে সঙ্গে পুলিশের সঙ্গে মিছিলের সামনের সারিতে থাকা বিজেপির মহিলা মোর্চার নেত্রী ও কর্মীদের তর্ক-বিতর্ক শুরু হয়। পুলিশের বাধা উপেক্ষা করে মিছিল সামনের দিকে এগোনোর চেষ্টা করে। ঝাঁটা হাতে থাকা মোর্চার বেশ কয়েকজন মহিলা কর্মী সমর্থক পুলিশের উপর চড়াও হন বলে অভিযোগ। সেই সময় ধস্তাধস্তির মধ্যে পুলিশ বিজেপির মহিলা কর্মীদের উপর লাঠিচার্জ করে বলে অভিযোগ।
দলের মহিলা মোর্চার সভানেত্রী কাবেরী চট্টোপাধ্যায়ের দাবি, তাঁরা শান্তিপূর্ণ ভাবে মিছিল করছিলেন। কিন্তু জেলাশাসকের অফিসের গেটের কাছে মিছিল আটকায় পুলিশ। পুলিশ জানায়, মিছিলের অনুমতি নেই। তখন মহিলা মোর্চার নেতৃত্ব তাঁদের জানান, পুলিশ সুপারের অফিসের বাইরে তাঁরা বিক্ষোভ দেখাবেন। আর পাঁচ জন প্রতিনিধি পুলিশ সুপারের অফিসে ঢুকে স্মারকলিপি দেবেন। কাবেরীর অভিযোগ, ‘‘কিন্তু কোনও কথা শুনতে চায়নি পুলিশ। ঠেলাঠেলির মাঝে আচমকা পুলিশ আমাদের উপরে লাঠিচার্জ শুরু করে। পুলিশের লাঠিতে আমার মাথায় চোট লাগে। আমাদের আরও তিন মহিলা কর্মী আহত হয়েছেন।’’ দলের জেলা সম্পাদক বিবেক রঙ্গার দাবি, ‘‘দলের জেলা সভাপতি বিদ্যাসাগর চক্রবর্তীকেও পুলিশ লাঠিপেটা করেছে। মহিলা মোর্চার চার জনকে পুরুলিয়া সদর হাসপাতালে ভর্তি করানো হয়েছে। বিদ্যাসাগরদাকে চিকিৎসার জন্য বোকারো নিয়ে যাওয়া হয়েছে।’’
বিজেপির তোলা লাঠিচার্জের অভিযোগ অস্বীকার করেছেন জেলা পুলিশ সুপার আকাশ মাঘারিয়া। তিনি বলেন, ‘‘অনুমতি ছাড়া বিজেপি নেতৃত্ব মিছিল নিয়ে জেলা পুলিশ অফিসের দিকে আসছিলেন। পুলিশ মিছিল আটকালে ওরাই পুলিশ কর্মীদের হেনস্থা ও নিগ্রহ করে। এই ঘটনায় একটি মামলাও রুজু করা হয়েছে।’’