পরীক্ষার আগেই পছন্দের পাত্রকে বিয়ে করতে চেয়েছিল নাবালিকা উচ্চ মাধ্যমিক পরীক্ষার্থী। মন্দিরে বিয়ের পরিকল্পনাও হয়ে গিয়েছিল। একটি ফোন মারফত সেই খবর পেয়ে বিয়ে রুখে দিল চাইল্ড লাইন এবং পুলিশ-প্রশাসন।
ঘটনাটি ইলামবাজারের দ্বারোন্দা গ্রামের। বীরভূম চাইল্ড লাইন সূত্রে জানা গিয়েছে, ১০৯৮ হেল্পলাইন নম্বরে খবর আসে দ্বারোন্দায় গোপনে এক নাবালিকা উচ্চ মাধ্যমিক পরীক্ষার্থীর বিয়ে দেওয়া হচ্ছে। চাইল্ড লাইন ঘটনাটি ইলামবাজার থানা এবং ইলামবাজারের বিডিও-কে জানায়। সেই মতো বুধবার চাইল্ড লাইনের প্রতিনিধি নূপুর মজুমদার, বিশ্বভারতীর গ্রামীণ উন্নয়ন বিভাগের দুই ছাত্র অর্ক মজুমদার ও শুভজিৎ চন্দ্র, যুগ্ম বিডিও চঞ্চলকুমার মণ্ডল এবং ইলামবাজার থানার পুলিশ ওই নাবালিকার বাড়ি গিয়ে বিয়ে বন্ধ করেন। চাইন্ড লাইন সূত্রের খবর, দ্বারোন্দা উচ্চ বিদ্যালয় থেকে এ বছরই উচ্চ মাধ্যমিক দেওয়ার কথা ওই নাবালিকার। নিজের পছন্দেই পরীক্ষার আগে বিয়ে সেরে নিতে চেয়েছিল সে। সে কথা বাড়িতেও জানায় মেয়েটি। বাড়ির লোক বিয়ে দিতে রাজি হয়। ঠিক হয়, অনুষ্ঠান ছাড়াই গোপনে মন্দিরে চার হাত এক করে দেওয়া হবে। ইলামবাজার ব্লকেরই একটি গ্রামের একটি মন্দিরে কাল, বৃহস্পতিবার বিয়ে হবে বলে ঠিক করে পরিবার। চাইল্ড লাইনের সদস্য এবং পুলিশ-প্রশাসনের কর্তারা এ দিন ওই নাবালিকার পরিবারকে বোঝাক, প্রাপ্তবয়স্ক হওয়ার আগেই মেয়ের বিয়ে দেওয়া আইনত দণ্ডনীয়। নূপুর মজুমদার এ দিন বলেন, ‘‘মেয়েটির বিয়ের বয়স হয়নি। সামনে জীবনের বড় পরীক্ষা। অথচ সে পরীক্ষা না দিয়ে বিয়ে করতে চেয়েছিল। তাই চাইল্ড লাইনের পক্ষ থেকে মেয়েটিকে আমরা বোঝাই। মেয়েটি আমাদের প্রতিশ্রুতি দেয়, সে উচ্চ মাধ্যমিক পরীক্ষা দেবে এবং প্রাপ্তবয়স্ক হওয়ার পরে বিয়ে করবে।’’
মেয়েটির পরিবারকে চাইল্ড লাইনের পক্ষ থেকে বোঝানো হয় যে, এখন বিয়ে করলে সরকারি প্রকল্প রূপশ্রী ও কন্যাশ্রী থেকেও ওই নাবালিকা বঞ্চিত হবে। যুগ্ম-বিডিও ( ইলামবাজার) চঞ্চলবাবুর কথায়, ‘‘আমরা মেয়েটির বাড়িতে গিয়ে পরিবারের সদস্যদের বোঝাই। সেই মতো তাঁরা এখন মেয়েটির বিয়ে দেবে না বলে মুচলেকা দেন আমাদের কাছে।’’ স্থানীয় বাসিন্দাদের একাংশও প্রশাসনের ভূমিকায় খুশি। তাঁদের বক্তব্য, নাবালিকার পরীক্ষার আগেই বিয়ে হয়ে গেলে তার আর পরীক্ষা দেওয়া হতো না। প্রশাসন ও চাইল্ড লাইনের পদক্ষেপে সে আবার পরীক্ষা দিতে পারবে।