বগটুই গনহত্যার আসমিদের কোর্ট থেকে জেলে নিয়ে যাওয়া হচ্ছে। মুল অভিযুক্ত আনারুল কে নামানো হচ্ছে পুলিশের প্রিজন ভ্যান থেকে। নিজস্ব চিত্র।
দু’জন অভিযুক্ত আদালতে হাজির না-হওয়ায় শুক্রবার বগটুই হত্যাকাণ্ড মামলার চার্জ গঠনের দিন পিছিয়ে গেল। আগামী ১২ জুলাই পুনরায় চার্জ গঠনের দিন ধার্য করা হয়েছে। একই সঙ্গে এ দিন রামপুরহাট আদালতে খারিজ হয়েছে বগটুই হত্যাকাণ্ডে অন্যতম অভিযুক্ত প্রাক্তন তৃণমূল নেতা আনারুল হোসেনের জামিনের আবেদনও।
প্রসঙ্গত, ২০২২ সালের ২১ মার্চ রাতে রামপুরহাট থানার ১৪ নম্বর জাতীয় সড়কের বগটুই মোড়ে বোমা মেরে খুন করা হয় এলাকার দাপুটে তৃণমূল নেতা তথা স্থানীয় বড়শাল গ্রাম পঞ্চায়েতের তৎকালীন উপ-প্রধান ভাদু শেখকে। সেই রাতেই ভাদুর অনুগামীরা বগটুইয়ের বেশ কয়েকটি বাড়িতে আগুন ধরিয়ে দেন বলে অভিযোগ। তাতে মৃত্যু হয় ১০ জনের। কলকাতা হাই কোর্টের নির্দেশে বগটুই হত্যাকাণ্ডের তদন্তভার পায় সিবিআই। সিবিআই তৎকালীন রামপুরহাট ১ ব্লক তৃণমূলের সভাপতি আনারুল হোসেন-সহ ২৩ জনের নামে প্রথম চার্জশিট জমা দেয়।
আইনজীবীদের সূত্রে জানা গিয়েছে, বগটুই হত্যা মামলার সাক্ষ্যগ্রহণের পূর্বে চার্জ গঠনের দিন ছিল শুক্রবার। সেই মতো রামপুরহাট দ্রুত নিষ্পত্তি বা ফাস্ট ট্র্যাক আদালতের অতিরিক্ত জেলা দায়রা বিচারক সন্দীপ কুণ্ডুর এজলাসে এ দিন ২৩ জন অভিযুক্তের হাজির হওয়ার কথা ছিল। চার্জ গঠনের দিন বলে এজলাসে সিবিআইয়ের আইনজীবীরা উপস্থিত ছিলেন। ছিলেন অভিযুক্ত পক্ষের আইনজীবীরাও। আইনজীবীরা জানান, চার্জ গঠনের দিন মামলায় গ্রেফতার হওয়া আসামিদের মতামত নেওয়া হয়। এ দিন আদালতে আনারুল হোসেন-২১ জন অভিযুক্ত হাজির থাকলেও বর্ধমান সংশোধনাগারে বন্দি জাহাঙ্গির শেখ ও মফিজুল শেখ নামে দুই অভিযুক্ত ছিলেন না।
হত্যাকাণ্ডে অন্যতম অভিযুক্ত বিকির শেখের আইনজীবী সুজয় সরকার বলেন, ‘‘ওই দু’জন অভিযুক্ত হাজির না-থাকায় চার্জ গঠনের দিন পিছিয়ে যায়। আগামী ১২ জুলাই চার্জ গঠনের দিন ধার্য করেছেন বিচারক।’’ চার্জ গঠন পিছিয়েছে শুনে হতাশ বগটুইয়ের স্বজনহারা পরিবারের সদস্যেরা। তাঁদের অন্যতম ফটিক শেখ বলেন, ‘‘দু’জন বাদে বাকিদের আদালতে আনা হল। এর পিছনে অন্য কিছু ব্যাপার আছে কি না, বুঝে উঠতে পারছি না। দু’বছর আগের ঘটনা। এখনও চার্জ গঠন হল না। আমরা শুধু চাই, দোষীদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি হোক।’’
এ দিন ফের আদালতে আনারুলের জামিনের আবেদন করেন তাঁর আইনজীবী। কিন্তু, আবেদন খারিজ হয়ে যায়। অভিযুক্তদের পরিবারের লোকজন আদালতে উপস্থিত হয়েছিলেন। ছিলেন আনারুলের আত্মীয় পরিজনও। এর আগে একাধিক বার আনারুল নিজেকে নির্দোষ দাবি করে তাঁকে ফাঁসানো হয়েছে বলে অভিযোগ করেছিলেন। সময় হলে সমস্ত কিছু জানাবেন বলেও দাবি করেছিলেন। এ দিন অবশ্য আদালত চত্বরে আনারুল কোনও কথা বলেননি।