কাশীপুরে মন্ত্রী। —নিজস্ব চিত্র।
মহিলা ভোটার বেড়েছে। আনুপাতিক হারে প্রায় ৫০ শতাংশে পৌঁছেছে মহিলা ভোটারের সংখ্যা। লোকসভার লড়াইয়ে তাই তাঁদের সমর্থনের দিকে তাকিয়ে তৃণমূল।পুরুলিয়ার কাশীপুরে সেবাব্রতী সঙ্ঘের মাঠে পুরুলিয়া সাংগঠনিক জেলা তৃণমূল মহিলা কংগ্রেসের ডাকে ‘সঙ্ঘবদ্ধ শপথ’ কর্মসূচিতে এসে সেই বার্তাই দিলেন সংগঠনের রাজ্য সভানেত্রী তথা রাজ্যের স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ প্রতিমন্ত্রী চন্দ্রিমা ভট্টাচার্য।
রাজনীতির পর্যবেক্ষকরা মনে করিয়ে দিচ্ছেন, ২০২১ সালের বিধানসভা নির্বাচন, পরে পুরসভা ও পঞ্চায়েত নির্বাচনেও তৃণমূলের বড় জয়ের পিছনে রয়েছে মহিলা ভোটারদের সমর্থন। বিশেষ করে 'লক্ষীর ভান্ডার' প্রকল্পের জনপ্রিয়তার পরে প্রায় ৪৯ শতাংশ মহিলা ভোটারের একটা বড় অংশের সমর্থন পেয়েছেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।বুধবার চন্দ্রিমা বলেন, ‘‘দেশের স্বাধীনতার পরে এটা প্রথম হলো যে ৫০ শতাংশে পৌঁছলেন মহিলারা। মেয়েরা সংখ্যায় বেড়েছে। মেয়েদের যে এগিয়ে নিয়ে যাচ্ছেন আমাদের নেত্রী এটা তারই ফল। মেয়েরা এ বার পঞ্চায়েতে দেখিয়েছে। আগে একুশের বিধানসভায় দেখিয়েছে। আবারও দেখাবে লোকসভায়। আমাদের ফল নিশ্চিত আরও ভাল হবে।’’
লোকসভা ভোটের আগে তাই মহিলাদের কাছে রাজ্যের উন্নয়নমুখী প্রকল্পগুলি নিয়ে আরও নিবিড় প্রচারে গুচ্ছ কর্মসূচি নিয়েছে শাসকদলের মহিলা সংগঠন। হয়েছে পাড়া বৈঠক। চলছে ‘চলো পাল্টাই’ কর্মসূচি। এ দিন চন্দ্রিমা জানান, আগামী ৩০ জানুয়ারি ‘চলো পাল্টাই’ স্লোগান সামনে রেখেই রাজ্যের প্রতি জেলায় হবে মহিলাদের মিছিল। ৪৫ দিনের কর্মসূচি শেষ হবে ৪ ফেব্রুয়ারি। এ দিনের সভায় তৃণমূলের মহিলা সংগঠনের জেলা সভাপতি সুমিতা সিং মল্ল-সহ নানা স্তরের নেত্রীরা উপস্থিত ছিলেন। ছিলেন তৃণমূলের দুই রাজ্য নেতা শান্তিরাম মাহাতো, স্বপন বেলথরিয়া-সহ মন্ত্রী সন্ধ্যারানি টুডু, সভাধিপতি নিবেদিতা মাহাতো, দলের জেলা সভাপতি সৌমেন বেলথরিয়া, চেয়ারম্যান হংসেশ্বর মাহাতো, শ্রমিক নেতা উজ্জ্বল কুমার প্রমুখ।মহিলা সংগঠনের ডাকে কর্মসূচি হলেও ছিলেন দলের পুরুষ কর্মীরাও। তার প্রশংসাই করেছেন চন্দ্রিমা।
জেলার নেতা, মন্ত্রীরা এ দিন আসন্ন লোকসভা ভোটে পুরুলিয়া, বাঁকুড়া ও ঝাড়গ্রাম— এই তিন আসন বিজেপির হাত থেকে ছিনিয়ে আনতে সর্বশক্তি দিয়ে এখন থেকেই ময়দানে নেমে পড়ার আহ্বান জানিয়েছেন। আর মন্ত্রী চন্দ্রিমা মনে করিয়েছেন দেশের একমাত্র মহিলা মুখ্যমন্ত্রী সরকার মেয়েদের উন্নয়নে কী করেছে। চন্দ্রিমা বলেন, ‘‘মহিলাদের সাবলম্বী করতে আপনাদেরই টাকা আপনাদের দিচ্ছেন মুখ্যমন্ত্রী। ওই টাকা নিয়ে মহিলারা বাজারে যান বলেই অর্থনীতি চাঙ্গা আছে।’’
বিজেপি-র প্রতি তাঁর কটাক্ষ, ‘‘বেটি বাঁচাও বেটি পড়াও এখন আর নেই। এখন নানা জায়গায় বেটিরা পুড়ছে। সংসদে মহিলা সংরক্ষণ বিল পেশ করা হলেও তা কবে কার্যকর হবে তার নিশ্চয়তা দিতে পারছেনা কেন্দ্র।’’
বিজেপির মহিলা শাখার পুরুলিয়ার সভানেত্রী পুনম সিং পান্ডের অবশ্য দাবি, ‘‘পঞ্চায়েত নির্বাচনে মহিলাদের সমর্থন নয়, পুলিশ-প্রশাসনের মদতে গণনায় রিগিং করে তৃণমূল জিতেছে। আর লোকসভায় পুরুলিয়া বিজেপিরই থাকবে। মহিলাদের সমর্থনও পাব আমরা। কারণ উজ্জ্বলা গ্যাস থেকে বিনামূল্যে রেশন, সবই প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী করেছেন।’’