বরাবাজারে মন্ত্রী চন্দ্রিমা ভট্টাচার্য। — ফাইল চিত্র।
দুই জেলার দু’প্রান্তে বৃহস্পতিবার রাজ্যের দুই মন্ত্রী এক যোগে কেন্দ্রের বিরুদ্ধে বঞ্চনার অভিযোগে সুর চড়ালেন। বরাবাজারের ইন্দট্যাঁড় মাঠে মন্ত্রী চন্দ্রিমা ভট্টাচার্য এবং পাত্রসায়রের কুশদ্বীপে শশী পাঁজা আবাস যোজনা থেকে একশো দিনের কাজের প্রকল্পে কেন্দ্রের এত দিন টাকা আটকে রাখা নিয়ে সরব হন।
প্রধানমন্ত্রী আবাস যোজনায় (প্লাস) সম্প্রতি কেন্দ্র টাকা দেওয়ায় কাজ শুরু হয়েছে রাজ্যে। কিন্তু ২০১৮ সালের সমীক্ষায় উপভোক্তার তালিকায় যাঁদের নাম উঠেছিল, তাঁদের অনেকরই পাকা বাড়ি রয়েছে বিরোধীদের অভিযোগ।
চন্দ্রিমা দাবি করেন, ‘‘দুর্নীতি হলে আমি সমর্থন করছি না। তবে আমি বলতে চাই, এই লোকগুলো ২০১৮ সাল থেকে প্রায় ২০২৩ সাল পর্যন্ত ফুটো ছাদ নিয়ে বসে থাকবেন? ২০১৮ সালের টাকা এখন আসছে কেন? ওই মানুষগুলো ধার-দেনা করে ঘরের ছাদটুকু করেছেন। তুমি সেটা দেখবে না? তোমার মাপকাঠিতে সেসব আবার নেই। সুতরাং যাঁর পাকা বাড়ি হয়ে গিয়েছে, সেই আর পাবে না!’’ তাঁর অভিযোগ, এ রাজ্যের রাজনৈতিক রং আলাদা বলেই কেন্দ্র বঞ্চনা করছে।
বিজেপির জেলা সভাপতি বিবেক রঙ্গার দাবি, ‘‘সারা দেশেই কেন্দ্র টাকা দিচ্ছে। কিন্তু খরচের হিসেব দেয়নি পশ্চিমবঙ্গ। তাই টাকা আটকে রাখা হয়। দোতলা, তিনতলা বাড়ির মালিকের নাম কী করে তালিকায় থাকে, তার কী ব্যাখ্যা দেবে তৃণমূল?’’
পাত্রসায়রে মন্ত্রী শশী পাঁজা দাবি করেন, ‘‘কেন্দ্রীয় সরকার আমাদের বন্ধু সরকার নয়। ভোট পায়নি বলেই বাংলার পাঁচ হাজার কোটি টাকা বাকি রেখেছে কেন্দ্র। একশো দিনের কাজে যেখানে বার বার পুরস্কার পায় বাংলা, সেই প্রকল্পে টাকা দেয় না কেন?’’
পাত্রসায়রে গত বিধিনসভা নির্বাচনে পরাজিত হয় তৃণমূল। সে প্রসঙ্গে শশীর মন্তব্য, ‘‘আপনারা আমাদের এখান থেকে জয়ী করেননি। কিন্তু মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় শিখিয়েছেন, যেখানে ভোট পাইনি, সেখানে আরও বেশি করে কাজ করতে।’’ ইন্দাসের বিজেপি বিধায়ককে বিধানসভায় দেখা যায় না বলে তিনি কটাক্ষ করেন।
যদিও ইন্দাসের বিজেপি বিধায়ক নির্মল ধাড়ার দাবি, ‘‘মানুষ জানেন বিধায়ক কী কাজ করেন। রাজ্য একশো দিনের কাজে দুর্নীতি করে সঠিক হিসাব দিতে পারেনি।’’
তবে চন্দ্রিমা বরাবাজারে দলীয় কর্মীদের মনে করিয়ে দেন, ‘‘আমাদের সরকার দুর্নীতির সঙ্গে আপোশ করে না। এটা সব সময় আপনাদের মাথায় রাখতে হবে। তেমনটা করলে তার উপযুক্ত শাস্তি হবে। তার জন্য বিচার ব্যবস্থা আছে।’’
কর্মীদের তিনি পঞ্চায়েত ভোটে ঝাঁপিয়ে কাজ করার পরামর্শ দেন। তৃণমূল মহিলাদের ক্ষমতায়নের জন্য পঞ্চায়েতের ৫০ শতাংশ আসন সংরক্ষিত করেছে। ঘটনাচক্রে চন্দ্রিমার সভায় মহিলাদের আসন ভর্তি থাকলেও পুরুষদের জায়গা অনেকখানি খালি ছিল। যা নিয়ে বিজেপির জেলা সভাপতির কটাক্ষ, ‘‘শুধু টাকা আর গাড়ি পাঠিয়ে তৃণমূল আর লোক টানতে পারবে না।’’ তবে মহিলা তৃণমূলের জেলা সভাপতি সুমিতা সিং মল্লের দাবি, ‘‘শুধু বরাবাজার ও লাগোয়া এলাকার মানুষের ভিড়েই মাঠ উপচে গিয়েছে। বিজেপির পাশেই মানুষ নেই।’’