মঙ্গলবার কাশীপুর স্টেডিয়াম ও বিষ্ণুপুরের রাসমঞ্চ সংলগ্ন গোশালার মাঠে শুরু হল বইমেলা। নিজস্ব চিত্র।
‘বই কিনে কেউ কোনও দিন দেউলে হয় না, আমার মধ্যে যা কিছু ভাল তার জন্য আমি বইয়ের কাছেই ঋণী’, কাশীপুর বইমেলার উদ্বোধনে প্রমথ চৌধুরী ও ম্যাক্সিম গোর্কির কথা এ ভাবেই তুলে ধরলেন পুরুলিয়া সিধো-কানহো-বীরসা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য দীপককুমার কর।
মঙ্গলবার কাশীপুর স্টেডিয়ামে শুরু হল বইমেলা। মাইকেল মধুসূদন দত্তের দ্বিশততম জন্মবার্ষিকী ও তাঁর কাশীপুরে পদার্পণের দেড়শো বছরকে স্মরণে রেখে এ বারের মেলা তাঁকে উৎসর্গ করা হয়েছে বলে জানান মেলা কমিটির সম্পাদক সৌমেন বেলথরিয়া। তিনি বলেন, “মাইকেলের মতো মহাকবির পদার্পণকে স্মরণ রেখে এ বারের মেলা। পাশাপাশি, কাশীপুরের নানা সাংস্কৃতিক ঐতিহ্যকে মেলায় তুলে ধরা হয়েছে।”
এ দিন ঘণ্টাধ্বনি দিয়ে মেলার উদ্বোধন করেন জেলা পুলিশ সুপার অভিজিৎ বন্দ্যোপাধ্যায়। মেলার দর্শকাসনে হাজির পড়ুয়াদের উদ্দেশে তিনি বলেন, “বিবেকানন্দকে আমরা কেউ দেখিনি। যাঁরা দেশ স্বাধীন করেছিলেন, সেই বিপ্লবীদের আমরা দেখিনি। কিন্তু আমরা তাঁদের কথা জানি। তাঁদের জীবনাদর্শ জেনেছি আমরা বই পড়ে। তথ্য-প্রযুক্তিকে স্বাগত জানিয়েও বলছি, বইয়ের বিকল্প কিছু হতে পারে না।” উপাচার্যও জানান, জেলা বইমেলার পাশাপাশি পুরুলিয়ার বিভিন্ন ব্লকে বইমেলা হচ্ছে, এটা অবশ্যই সদর্থক দিক। পড়ুয়া-সহ বিভিন্ন স্তরের মানুষজনকে এই মেলা তাঁদের বৌদ্ধিক বিকাশেসহায়তা করবে।
মেলার সূচনার আগে এ দিন বইয়ের জন্য পদযাত্রায় বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের পড়ুয়া-সহ বইপ্রেমী মানুষজন যোগ দেন। ছিলেন সমাজকর্মী জয়প্রকাশ মজুমদার, বিধায়ক সুশান্ত মাহাতো, প্রাক্তন বিধায়ক স্বপন বেলথরিয়া, স্থানীয় বিডিও সুপ্রিম দাস, কাশীপুর পঞ্চায়েত সমিতির সভাপতি সুপ্রিয়া বেলথরিয়া প্রমুখ।
এ দিকে, দ্বাদশ বর্ষের শিশু বই উৎসব ও বই মেলা শুরু হয়েছে বিষ্ণুপুর রাসমঞ্চ সংলগ্ন গোশালার মাঠে। চলবে আগামী বৃহস্পতিবার পর্যন্ত। মেলা ঘিরে প্রতিদিনই স্থানীয় শিল্পীদের সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান ছাড়াও থাকছে কবি সম্মেলন ও আলোচনাসভা। মোট ৩২টি স্টল রয়েছে মেলায়। মেলায় আসা সুমন নিয়োগী, কবিতা পাঠক, তনুশ্রী মাইতিরা বলেন, “খোলামেলা জায়গায় মেলা হয়ে ভাল হয়েছে। নামী প্রকাশকদের বইয়ের পাশাপাশি অনেক দুষ্প্রাপ্য বইও মিলছে।” গত চার দিনে প্রায় চার লক্ষ টাকার বই বিক্রি হয়েছে বলে জানান মেলা কমিটির সম্পাদক রবীন্দ্রনাথ পাত্র।