প্রচার: অমিত শাহের সফরের প্রচার বোলপুরে। নিজস্ব চিত্র
এমন ছবি শেষ কবে দেখেছেন, মনে করতে পারছেন না বোলপুরের মানুষ। শহর বোলপুর তো বটেই, এমনকি বিশ্বভারতী সংলগ্ন রাস্তাও ছেয়ে গেছে বিজেপির পতাকায়। প্রচার এবং পতাকাই বুঝিয়ে দিচ্ছে কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহের সফর সফল করতে কোনও ত্রুটি রাখতে চান না বিজেপি নেতৃত্ব।
সেই প্রস্তুতির উদ্দেশ্যেই শুক্রবার বোলপুর ঘুরে গেলেন বিজেপি নেতা অনুপম হাজরা ও রাজু বন্দ্যোপাধ্যায়। এ দিন দলীয় কর্মসূচির পাশাপাশি এক ধাপ এগিয়ে অনুপমের দাবি, “জেলার এক মন্ত্রী যোগাযোগ রাখছেন আমাদের সঙ্গে। সঠিক সময় এলেই সব জানতে পারবেন।’’ এমনিতেই কাল, রবিবার শাহের বোলপুর সফরে কোনও চমক অপেক্ষা করছে, তা নিয়ে জোর আলোচনা শুরু হয়েছে বীরভূমে। শুভেন্দু অধিকারীর সঙ্গে এই জেলার কোনও নেতাও কি যাবেন বিজেপি-তে, প্রশ্ন ঘুরছে জেলা তৃণমূলেও। এ দিন অনুপমের দাবি সামনে আসতেই নতুন করে জল্পনা ছড়িয়েছে জেলার রাজনৈতিক মহলে। যদিও অনুপম এখনই এই মন্ত্রীর নাম খোলসা করতে চাননি।
যদিও অনুপমের এই বক্তব্যকে পাত্তা দিতে নারাজ জেলা তৃণমূল। দলের জেলা সভাপতি অনুব্রত মণ্ডল এ দিন বলে দেন, “দু’পয়সার নেতার কথায় গুরুত্ব দিয়ে লাভ নেই!’’
এ দিন সকালে বিজেপি রাজ্য সহ-সভাপতি রাজু বন্দ্যোপাধ্যায় এবং জেলা নেতৃত্ব প্রথমে বাউলশিল্পী বাসুদেব দাস বাউলের বাড়িতে যান। সেখানে সমস্ত প্রস্তুতি খতিয়ে দেখার পরে তাঁরা কুমিরডাঙার হেলিপ্যাড পরিদর্শনে যান। রবিবার সকাল থেকে নির্বিঘ্নে মিছিল আয়োজন করতে এবং মিছিলে পর্যাপ্ত লোক জড়ো করতে দফায় দফায় বৈঠকেও বসেন বিজেপি নেতৃত্ব।
দুপুর দেড়টা নাগাদ আয়োজন খতিয়ে দেখতে বোলপুর ডাকবাংলো মাঠে আসেন অনুপম। সেখানে মাঠের প্রবেশদ্বার গঙ্গাজল ছিটিয়ে শুদ্ধ করেন তিনি। তার দাবি, “তৃণমূলের পা যেখানে পড়ে, সেই স্থানই কলুষিত হয়ে যায়। তাই অমিত শাহের সফরের আগে আমরা ডাকবাংলো মাঠকে গঙ্গাজল ছড়িয়ে শুদ্ধকরণ করছি।’’ এই প্রসঙ্গে এ দিন অনুব্রত মণ্ডলের প্রতিক্রিয়া, “তৃণমূলের ছোঁয়া এড়াতে চাইলে বিজেপি ডাকবাংলো মাঠ নিল কেন? মাঠ তো জেলা পরিষদের, আর জেলা পরিষদ তৃণমূলের। জেলা পরিষদ তো মাঠ দিতে আপত্তি করেনি!’’
এ দিন সকাল থেকে মাইকিং-এর মাধ্যমে শাহের সফরের লাগাতার প্রচার করা হয়েছে বিজেপির পক্ষ থেকে। গোটা শহর মুড়ে ফেলা হয়েছে বিজেপির দলীয় পতাকায়। বোলপুরের ডাকবাংলো মাঠ থেকে চৌরাস্তা পর্যন্ত পুরো রাস্তায় তৈরি করা হচ্ছে ব্যারিকেড। শাহের পদযাত্রায় ভিড় নিয়ন্ত্রণের জন্য সেই ব্যারিকেডের দু’ধারে লোক দাঁড় করানোর পরিকল্পনা রয়েছে বিজেপি-র।