আদ্রা স্টেশনে বুধবার এই ফুটওভার ব্রিজের উদ্বোধন হল। ছবি: সঙ্গীত নাগ
রেলের উন্নয়নমূলক কাজ নিয়ে তরজায় জড়ালেন পুরুলিয়ার বিজেপি সাংসদ জ্যোতির্ময় সিং মাহাতো এবং জেলা তৃণমূল সভাপতি সৌমেন বেলথরিয়া। বুধবার আদ্রা স্টেশনে ফুটওভার ব্রিজ ও লিফটের উদ্বোধন করতে এসে বিজেপি সাংসদ অভিযোগ করেন, ‘‘অনেক পরিকল্পনা আটকে আছে রাজ্য সরকারের ‘এনওসি’-র অভাবে।’’ তাঁর এই দাবিকে ‘মিথ্যাচারের রাজনীতি’ বলে কটাক্ষ করেন সৌমেন।
জ্যোর্তিময়ের অভিযোগ, রাজ্য সরকারের অসহযোগিতার কারণেই আটকে রয়েছে পুরুলিয়া-বরাকর রাজ্য সড়কে, পুরুলিয়া শহরের গোশালা মোড়ে রেল লাইনের উপরে উড়ালপুল নির্মাণ।
সাংসদের দাবি, ‘‘রেল মন্ত্রক উড়ালপুল নির্মাণের অনুমোদন দিয়েছে। রেলের তরফে রাজ্য সরকারকে বিষয়টি জানানো হলেও ‘এনওসি’ মেলেনি।’’ তিনি জানান, পুরুলিয়া-বরাকর রাজ্য সড়কে গোশালাতে লেভেল ক্রসিং বন্ধ থাকলে দীর্ঘ সময় আটকে থাকে অ্যাম্বুল্যান্স-সহ বিভিন্ন যানবাহন। সেখানে উড়ালপুল নির্মাণের দাবি দীর্ঘদিনের। রেল উদ্যোগী হলেও রাজ্যের ‘অনীহার’ কারণেই প্রকল্প রূপায়িত হচ্ছে না বলে অভিযোগ জ্যোর্তিময়ের।
পক্ষান্তরে, সাংসদের দাবিকে ‘ভিত্তিহীন’ বলে উড়িয়ে দিয়েছেন সৌমেন। জেলা তৃণমূল সভাপতির দাবি ‘‘বিজেপি সাংসদ মিথ্যার রাজনীতি করছেন। গোশালা মোড়ে উড়ালপুল তৈরির কোনও প্রস্তাব রেলের তরফে রাজ্যকে দেওয়া হয়নি। উল্টে রাজ্যের তরফেই জেলার গুরুত্বপূর্ণ রাস্তাগুলিতে রেল লাইনের উপরে উড়ালপুল তৈরির প্রস্তাব দেওয়া হয়েছে। কিন্তু রেলের থেকে কোনও সদুত্তর মেলেনি।’’ জেলা পূর্ত দফতরের এক আধিকারিক বলেন, ‘‘রেলের তরফে এমন কোনও প্রস্তাব জেলায় আসেনি।’’
সাংসদের দাবির ভিত্তিতে সৌমেনের প্রশ্ন, ‘‘রাজ্য সহযোগিতা না করলে আদ্রা, বিষ্ণুপুর, ঝাড়গ্রামের মতো এলাকায় কী ভাবে উড়ালপুল তৈরি করছে রেল।’’ সঙ্গে তিনি এ-ও মনে করিয়ে দেন, ‘‘রেল লাইনের উপরে উড়ালপুলের শুধুমাত্র ২০ শতাংশ করে রেল। বাকি ৮০ শতাংশ নির্মাণ করে রাজ্যের পূর্ত দফতর। উন্নয়নের প্রশ্নে রাজ্য সবসময় সদর্থক ভূমিকা নেয়। সে কারণেই রাজ্যে উন্নয়নমূলক কাজ করতে সক্ষম হচ্ছে রেল।’’
এ দিন আদ্রা স্টেশনের ফুটওভার ব্রিজ ও লিফটের উদ্বোধনে সাংসদের সঙ্গে উপস্থিত ছিলেন কাশীপুরের বিজেপি বিধায়ক কমলাকান্ত হাঁসদা, ডিআরএম (আদ্রা) মনীশ কুমার প্রমুখ। ডিআরএম জানান, ফুটওভার ব্রিজ তৈরিতে চার কোটি টাকা এবং দু’টি লিফটের জন্য এক কোটি টাকা খরচ হয়েছে। আদ্রা স্টেশন রেলের ‘অমৃত ভারত’ যোজনার অন্তর্ভুক্ত। পরে, সেখানে আরও উন্নয়নমূলক কাজ হবে বলে আশ্বাস সাংসদের।