বীরভূম থেকে মমতাকে নিশানা শুভেন্দুর। নিজস্ব চিত্র।
তৃতীয় বার মুখ্যমন্ত্রীর কুর্সিতে বসে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় জানিয়েছিলেন, রাজ্যে আরও শিল্প আনা এবং কর্মসংস্থান তৈরি করাই তাঁর মূল লক্ষ্য। বুধবার থেকে শুরু হয়েছে দু’দিনের বিশ্ববঙ্গ বাণিজ্য সম্মেলন। আর ওই দিনই রাজ্য সরকারের বড় প্রকল্প ডেউচা-পাঁচামিকে কটাক্ষ করলেন রাজ্যের বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী।
বুধবার বীরভূমের ডেউচা থেকে তৃণমূল সরকারকে আক্রমণ করে বিরোধী নেতার মন্তব্য, ‘‘এই রাজ্যে শুধু চপ শিল্প হবে। আর চপ ব্যবসায়ীরাও সপ্তাহে তিন দিন দোকান খুলবেন না। কারণ সবাইকে সম্মেলনে (তৃণমূলের) যেতে হবে।’’
তবে ডেউচা এলেও পাঁচামি যাননি শুভেন্দু। ডেউচা এলাকার আদিবাসীদের সঙ্গে দীর্ঘক্ষণ কথা বলেন তিনি। শুভেন্দু বলেন, ‘‘পাঁচামি এলাকার আন্দোলনকারীদের অবস্থানে আমাদের সমর্থন রয়েছে। অরাজনৈতিক মঞ্চ বলে আমিআর গেলাম না। তবে তাঁরা যখনই ডাকবেন, আমাদের পাশে পাবেন।’’
শুভেন্দুর সঙ্গে ছিল বিজেপি বিধায়কদের একটি দল। প্রথমে সিউড়ি বিজেপি জেলা পার্টি অফিসে একটি বৈঠক হয়। সেখান থেকে শুভেন্দুরা চলে যান ডেউচা এলাকায়। সেখানে আদিবাসীদের সঙ্গে কথা বলার পর রাজ্য সরকারের বিরুদ্ধে একাধিক অভিযোগ তোলেন শুভেন্দু। তিনি বলেন, ‘‘এখানে ডেউচা-পাঁচামি (প্রকল্প) হবে না। সাধারণ মানুষ চায় না। ইতিমধ্যে অনেক আদিবাসীর পেনশন বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে। আমরা সমস্ত বিষয় নিয়ে আদালতে যাব।’’
এর পরেই শুভেন্দুর সংযোজন, এ বার থেকে মাঝেমধ্যেই তিনি ডেউচা-পাঁচামি এলাকায় আসবেন। এখানে প্রকল্প হবে না বলে হুঁশিয়ারি দেন নন্দীগ্রামের বিজেপি বিধায়ক। বলেন, ‘‘এই এলাকায় বারবার আসব। আন্দোলনকারীদের পাশে থাকব।’’এর পর কলকাতায় হওয়া বাণিজ্য সম্মেলনকে কটাক্ষ করে শুভেন্দু বলেন, ‘‘এই রাজ্যে শুধু চপ শিল্প হবে।’’ পরে সিউড়িতে শুভেন্দু জানান, আগামী ১২ মে ডেউচা-পাঁচামি এলাকায় ৫ কিলোমিটার মিছিল করবেন তিনি। মিছিলে থাকবে ২০ হাজার লোক।
শুভেন্দুর ডেউচা সফর এবং প্রকল্প নিয়ে তাঁর মন্তব্য প্রসঙ্গে বীরভূম জেলা তৃণমূলের সহ-সভাপতি মলয় মুখোপাধ্যায় বলেন, ‘‘সরকার সব রকম ভাবে কাজ করছে। আদিবাসীদের অভাব অভিযোগ বোঝার চেষ্টা করছে। এখানে বিরোধীরা এসে উন্নয়নে বাধা দেবার চেষ্টা করছে। তবে তারা সফল হবে না। আমরা সরকারের পাশে থেকে কাজ করার চেষ্টা করব।’’
প্রসঙ্গত, বুধবার ডেউচায় আসেন প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি অধীর চৌধুরীও। তবে ডেউচা-পাঁচামি এলাকায় তাঁকে ঢুকতে বাধা দেন আদিবাসী সমাজের মানুষজন। স্থানীয় যে মহাসভার সংগঠন রয়েছে, তাদের পক্ষ থেকে বলা হয়, ‘‘আমরা কোনও রাজনৈতিক দলকে ডেউচা-পাঁচামি এলাকায় ঢুকতে দেব না। ভারতবর্ষের কোনও না কোনও রাজ্যে সব রাজনৈতিক দলই আদিবাসী সমাজকে উচ্ছেদ করেছে। তাই আমরা এখানে কোন রাজনীতির রং চাই না।’’