বাঁকুড়ার জেল রোডের হনুমান মন্দিরে বিজেপির বিদায়ী কাউন্সিলর। নিজস্ব চিত্র
অশান্তি না হলেও ‘লকডাউন’ ভেঙে পুরুলিয়া জেলার বিভিন্ন মন্দিরে এ দিন পুজো দিলেন বিজেপির নেতা-কর্মীরা। কোথাও মন্দিরে ভিড় হল, কোথাও বেরোল শোভাযাত্রা, কোথাও আবার আয়োজন করা হল ভোগ রান্নার। কোথাও কোথাও পুলিশ বিজেপি কর্মীদের বাধা দেয় বলেও অভিযোগ।
জেলা তৃণমূলের কো-অর্ডিনেটর সুজয় বন্দ্যোপাধ্যায়ের দাবি, ‘‘রাম শুধু বিজেপির নয়, আমাদের হৃদয়েও আছেন। কিন্তু বিজেপি রামকে রাজনীতিতে নামিয়েছে নিজেদের স্বার্থসিদ্ধির উদ্দেশ্যে। সে জন্য ‘লকডাউন’ ভেঙে বিজেপি নেতাদের এই পরিস্থিতিতে ভিড় করাটা কি খুব জরুরি ছিল? পুজো তো বাড়িতেও করা যায়।’’ বিজেপির জেলা সভাপতি বিদ্যাসাগর চক্রবর্তীর পাল্টা দাবি, ‘‘এ দিনটি মানুষের স্বপ্নপূরণের দিন। সেই আনন্দের অংশীদার হয়ে মানুষ মন্দিরে মন্দিরে গিয়ে পুজো দিয়েছেন। কোথাও কোথাও পুলিশ বাধাও দিয়েছে। তবে কোথাও আমরা ভিড় করিনি। তাতে যদি কোথাও বিধি ভেঙে থাকে, আমাদের কিছু করার নেই।’’ পুরুলিয়া জেলা পুলিশ সুপার এস সেলভামুরুগান বলেন, ‘‘কোথাও কোনও মন্দিরে ভিড় হয়নি। রোজকার মতোই মন্দিরে পুজো হয়েছে।’’
পুরুলিয়া ২ ব্লকের গেঙ্গাড়া গ্রামে হনুমান মন্দিরে এ দিন পুজো দেন বিদ্যাসাগরবাবু, দলের দুই জেলা সহ-সভাপতি দয়াময় চক্রবর্তী, বিনোদ তিওয়ারি, জেলা মহিলা মোর্চার সভানেত্রী কাবেরী চট্টোপাধ্যায় প্রমুখ। সেখানে দুপুরে অন্নকূটের আয়োজন করা হলেও রাঁধুনি ও দলের কর্মীদের পুলিশ সেখান থেকে ফেরত পাঠিয়ে দেন বলে অভিযোগ করেছেন এলাকার বিজেপি মণ্ডল সাধারণ সম্পাদক সুবর্ণ পাঠক।
কাশীপুরে বিজেপির দলীয় কার্যালয়েই রামের প্রতিকৃতি সামনে রেখে পুজোপাঠ ও হোম-যজ্ঞ করেন নেতা-কর্মীরা। পুজো শেষে মিছিলও করেন নেতা-কর্মীরা। এখানে অবশ্য তাঁদের পুলিশি বাধার মুখে পড়তে হয়নি।
অযোধ্যা পাহাড়ের রামমন্দিরেও এ দিন হোম-যজ্ঞের আয়োজন করেছিলেন স্থানীয় বিজেপি নেতৃত্ব। ছিলেন দলের জেলা সাধারণ সম্পাদক শঙ্কর মাহাতো, বাঘমুণ্ডি বিধানসভার আহ্বায়ক জগদীশ কুমার প্রমুখ। এখানে পুলিশ প্রথমে তাঁদের বাধা দেয় বলে অভিযোগ। তবে তাঁরা স্বাস্থ্যবিধি মেনে পুজো করবেন বলে আশ্বাস দেওয়ার পরে, ছাড় পান।
বাঘমুণ্ডি ব্লকের বীরগ্রাম বজরংবলী মন্দিরেও বৃষ্টি উপেক্ষা করে পুজোপাঠ হয়। সেখানে ভোগ রান্নার আয়োজন করা হয়। যুব মোর্চার নেতা রোহিনচন্দ্র মাঝি বলেন, ‘‘পুজোয় বজরং দলের কর্মী-সমর্থকেরাও ছিলেন। লুচি-বোঁদের প্রসাদ তৈরি করে গ্রামবাসীকে দেওয়া হয়।’’ বান্দোয়ানের তালপাতের ভুরাটিলার হনুমান শিলাস্থলে, মানবাজার ২ ব্লকের দিঘি হরিমন্দিরেও পুজোপাঠ করেন স্থানীয় বিজেপি কর্মীরা।
পুরুলিয়া শহরে এ দিন পুলিশ বাহিনী টহল দিয়েছে। পুরুলিয়া স্টেশন লাগোয়া সঙ্কটমোচন মন্দিরে সকালের দিকে কিছু মানুষ ভিড় করেন। পুলিশ তাঁদের সরিয়ে দেয়। বিজেপির শহর (দক্ষিণ) মণ্ডল সভাপতি সত্যজিৎ অধিকারী বলেন, ‘‘বিভিন্ন পাড়ার মানুষ বিধি মেনে সন্ধ্যায় নিজেদের পাড়ার মন্দিরে প্রদীপ জ্বালিয়েছেন।’’