কলেজের অফিসিয়াল ওয়েবসাইটে আপলোডের আগেই প্রশ্নপত্র পেয়ে যাচ্ছেন কিছু পড়ুয়া। এমনই অভিযোগ উঠল বর্ধমান বিশ্ববিদ্যালয়ের স্নাতক স্তরের পরীক্ষায়। এমন অভিযোগ সামনে আসায় পরীক্ষার মানের ফারাক হয়ে যেতে পারে বলে আশঙ্কা রয়েছে অনেক পড়ুয়ার। বিষয়টি জানানো হয়েছে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষকেও।
করোনা পরিস্থিতির মধ্যে অনলাইনে কলেজের পরীক্ষার কথা ঘোষণা করে ইউজিসি। সেই মতো বর্ধমান বিশ্ববিদ্যালয়ের অন্তগর্ত বীরভূমের কলেজগুলিতে স্নাতক স্তরের চূড়ান্ত পরীক্ষা হচ্ছে। কলেজের শিক্ষকদের থেকে জানা গিয়েছে, ইউজিসির নির্দেশ মেনে অনলাইনে পরীক্ষা হচ্ছে। এই পরীক্ষাকে ‘ওপেন বুক ব্লেন্ডেড এগজাম’ বলা হচ্ছে। পরীক্ষা শুরু হচ্ছে সকাল ১১ টা থেকে। ঠিক তার আধ ঘণ্টা আগে প্রত্যেক কলেজের অফিসিয়াল ওয়েবসাইটে প্রশ্নপত্র পাওয়া যায়। কিন্তু, কিছু ক্ষেত্রে সাড়ে দশটার আগেই প্রশ্নপত্র কিছু পরীক্ষার্থীর হাতে পৌঁছে যাচ্ছে বলে অভিযোগ।
কলেজের শিক্ষকরা জানান, প্রথমে বিশ্ববিদ্যালয়ের পক্ষ থেকে কলেজকে প্রশ্নপত্র পাঠানো হয়। তার পরে কলেজ কর্তৃপক্ষ সেই প্রশ্নপত্র কলেজের
অফিসিয়াল ওয়েবসাইটে আপলোড করেন। সেই প্রশ্নপত্র প্রিন্ট আউট করে পড়ুয়ারা ঘরে বসেই পরীক্ষা দিতে পারে। ডাউনলোড, প্রিন্ট আউট করার জন্যই পরীক্ষা শুরুর আধ ঘণ্টা আগে প্রশ্নপত্র দেওয়া হয়। ফলে সকাল সাড়ে দশটার আগে কলেজের ওয়েবসাইটে প্রশ্নপত্র থাকার কথা নয়। কিন্তু, সোমবার সকাল দশটার মধ্যে সেই প্রশ্নপত্র অনেক পড়ুয়া পেয়েছেন বলে অভিযোগ।
শুধু এ দিন নয়, এর আগেও একই ঘটনা ঘটেছে বলে দাবি শিক্ষক এবং অধ্যক্ষদের একাংশের। কী করে এমনটা হচ্ছে তা এখনও জানা যায়নি। সিউড়ির বীরভূম মহাবিদ্যালয় কলেজের অধ্যক্ষ পার্থসারথি মুখোপাধ্যায় বলেছেন, ‘‘এই নিয়ে আমাদের অধ্যক্ষদের গ্রুপেও আলোচনা হয়েছে। বিশ্ববিদ্যালয়কে বিষয়টি জানানো হয়েছে। তবে কী ভাবে আগেই প্রশ্নপত্র পরীক্ষার্থীরা পেয়ে যাচ্ছেন, সেটা পরিষ্কার নয়।’’ একই কথা বলেছেন হেতমপুর কৃষ্ণচন্দ্র কলেজের অধ্যক্ষ গৌতম চট্টোপাধ্যায়। তাঁর কথায়, ‘‘এ দিনও কিছু পড়ুয়া আগেই প্রশ্নপত্র পেয়েছে বলে জেনেছি। আগের দুদিনও একই ঘটনা ঘটেছিল।’’
এমন অভিযোগ সামনে আসায় মূল্যায়ণের ফারাক হয়ে যেতে পারে বলে আশঙ্কা রয়েছে অনেক পড়ুয়ার মনে। কেননা, কিছু পরীক্ষার্থী আগেই প্রশ্নপত্র পেয়ে যাওয়ায় দ্রুত ডাউনলোড করে উত্তর খুঁজে নিতে পারছে। অধ্যাপকরা অনেকেই বলছেন, যেহেতু এই বছর বই থেকে দেখে লিখতে হচ্ছে। সেই কারণে আগে আধঘন্টা আগে প্রশ্নপত্র পেলে সেইসব পড়ুয়ারা বই থেকে উত্তর খোঁজার জন্য আধঘন্টা বেশী সময় পাচ্ছে। ফলে একটি বড় অংশের পড়ুয়ার ক্ষতি হচ্ছে।