প্রতীকী ছবি
করোনা আক্রান্ত যে রোগীদের অবস্থা জটিল বা গুরুতর তাঁদের চিকিৎসায় ভেন্টিলেটর ব্যবহার করা হয়ে থাকে। এ পর্যন্ত বীরভূমে আক্রান্ত রোগীর সংখ্যা পাঁচশো ছাড়িয়ে গেলেও মাত্র একজনকেই এ পর্যন্ত ভেন্টিলেটর সাপোর্ট দিতে হয়েছে।
যে ভাবে জেলাতেও করোনা রোগীর সংখ্যা বাড়ছে তাতে আগামী দিনে জটিল করোনা আক্রান্তও বাড়বে বলে আশঙ্কা। তখন বেশি করে ভেন্টিলেটরের প্রয়োজন হবে। পরিস্থিতি অনুযায়ী দু’টি কোভিড হাসপাতালেই ভেন্টিলেটরের সংখ্যা বাড়ানোর ভাবনা নেওয়া হয়েছে। বিশেষ করে বীরভূম স্বাস্থ্য জেলার বোলপুরে অবস্থিত কোভিড হাসপাতালের জন্য এ ব্যাপারে বিশেষ নজর দেওয়া হচ্ছে। রাজ্য স্বাস্থ্য দফতরের কাছে কোভিড হাসপাতালের জন্য অতিরিক্ত ভেন্টিলেটর দেওয়ার আর্জি জানানো হয়েছে জেলা স্বাস্থ্য দফতরের পক্ষ থেকে।
স্বাস্থ্য প্রশাসন সূত্রে জানা গিয়েছে, উপসর্গহীন করোনা রোগীদের জন্য রামপুরহাট বোলপুর ও দুবরাজপুরের প্রায় সাড়ে চারশো শয্যার সেফ হোম থাকলেও করোনা আক্রান্ত উপসর্গযুক্ত বা গুরুতর রোগীদের চিকিৎসার জন্য দু’টি হাসপাতাল রয়েছে। একটি রামপুরহাটে অন্যটি বোলপুরে। রামপুরহাটের যে বেসরকারি হাসপাতালটিকে বর্তমানে কোভিড হাসপাতালে রূপান্তরিত করা হয়েছে সেখানে আগে থেকেই একটি ভেন্টিলেটর ছিল। এছাড়া রাজ্য স্বাস্থ্য দফতর থেকে রামপুরহাট মেডিক্যাল কলেজের জন্য আসা ছ’টি ভেন্টিলেটরের মধ্যে তিনটি ওই হাসপাতালকে দেওয়া হয়েছে। অর্থাৎ ৪০ শয্যার ওই হাসপাতালে এই মুহূর্তে ভেন্টিলেটরের সংখ্যা ৪টি। প্রয়োজন হলে বাকি তিনটি ভেন্টিলেটরও কাজ লাগানো যাবে।
ওই হাসপাতালেই রামপুরহাট পুর এলাকার এক করোনা রোগীকে ভেন্টিলেটর সাপোর্ট দিতে হয়েছিল। শতাধিক রোগী ওই হাসপাতালে থেকে সুস্থ হয়ে বাড়ি ফিরছেন। অন্য কারও ভেন্টিলেটরের প্রয়োজন হয়নি। তারপরেও জেলা স্বাস্থ্য দফতরের কর্তারা আরও দু’টি ভেন্টিলেটর পাওয়ার জন্য রাজ্য স্বাস্থ্য দফতরের দৃষ্টি আকর্ষণ করেছেন। ভেন্টিলেটর মিলবে আশ্বাসও মিলেছে। জানিয়েছেন রামপুরহাট স্বাস্থ্য জেলার এক আধিকারিক।
কিন্তু ঠিক বিপরীত ছবি বোলপুরের গ্লোকাল হাসপাতালের, যে বেসরকারি হাসপাতালটিকে জেলার প্রথম কোভিড হাসপতাল হিসাবে রূপান্তরিত করা হয়েছে। সেখানে এই মুহূর্তে ভেন্টিলেটরের সংখ্যা মাত্র দু’টি। নিয়ম অনুযায়ী কমপক্ষে ১০ শতাংশ ভেন্টিলেটর থাকা উচিত। আক্রান্তের সংখ্যা বাড়ছে দেখে বোলপুর কোভিড হাসপাতালের শয্যা সংখ্যা প্রায় দ্বিগুণ করার প্রক্রিয়া শুরু হয়েছে। ৭০ থেকে ৮০ শয্যার হাসপাতালে আগামীদিনে মাত্র দু’টি ভেন্টিলেটর যে যথেষ্ট নয় সেটা বিলক্ষণ জানেন স্বাস্থ্য কর্তারা।
স্বাস্থ্য দফতর সূত্রে খবর, ওই হাসপাতাল কোনও কোভিড পজিটিভ রোগীর ভেন্টিলেটরের প্রয়োজন হয়নি। তবে আগামীদিনে সেটা যে অতি প্রয়োজনীয় হতে পারে বীরভূমের সিএমওএইচ হিমাদ্রি আড়িও তা মানছেন। তিনি বলেন, ‘‘ভবিষ্যতের কথা ভেবে বোলপুর কোভিড হাসপাতালের জন্য আরও ছ’টি ভেন্টিলেটর পাঠানোর আবেদন রাজ্য স্বাস্থ্য দফতরে পাঠানো হয়েছে।’’ জেলার এক স্বাস্থ্য কর্তা বলেন, ‘‘শুধু ভেন্টিলেটরের চালানোর জন্য প্রশিক্ষণ-প্রাপ্ত চিকিৎসক, নার্স ও টেকনিশিয়ানরা থাকছেন। যাতে রোগীর অবস্থা জটিল হলে সিসিইউয়ের ভেন্টিলেটর চালু করে নজরদারিতে রাখতে পারেন।’’
(জরুরি ঘোষণা: কোভিড-১৯ আক্রান্ত রোগীদের জন্য কয়েকটি বিশেষ হেল্পলাইন চালু করেছে পশ্চিমবঙ্গ সরকার। এই হেল্পলাইন নম্বরগুলিতে ফোন করলে অ্যাম্বুল্যান্স বা টেলিমেডিসিন সংক্রান্ত পরিষেবা নিয়ে সহায়তা মিলবে। পাশাপাশি থাকছে একটি সার্বিক হেল্পলাইন নম্বরও।
• সার্বিক হেল্পলাইন নম্বর: ১৮০০ ৩১৩ ৪৪৪ ২২২
• টেলিমেডিসিন সংক্রান্ত হেল্পলাইন নম্বর: ০৩৩-২৩৫৭৬০০১
• কোভিড-১৯ আক্রান্তদের অ্যাম্বুল্যান্স পরিষেবা সংক্রান্ত হেল্পলাইন নম্বর: ০৩৩-৪০৯০২৯২৯)