টিফিন ভাগ করে খেল সমস্ত দল

কাঁটাডি স্টেশন ছাড়িয়ে একটু দূরে এগোলেই পিঠাডি বুথ। কিছুটা দূরে রাস্তার দু’পাশে বিভন্ন দলের বুথ ক্যাম্প। ডান দিকে সিপিএম আর বিজেপি।

Advertisement

প্রশান্ত পাল ও সমীর দত্ত

শেষ আপডেট: ১৫ মে ২০১৮ ০২:২৭
Share:

সহাবস্থান: আড়শার পিঠাতি বুথের বাইরে। নিজস্ব চিত্র

আড়শার কাঁটাডি থেকে মুদালি হয়ে জঙ্গলের ভিতর দিয়ে অযোধ্যা পাহাড়ে উঠে গিয়েছে একটি রাস্তা। কাঁটাডি স্টেশন ছাড়িয়ে একটু দূরে এগোলেই পিঠাডি বুথ। কিছুটা দূরে রাস্তার দু’পাশে বিভন্ন দলের বুথ ক্যাম্প। ডান দিকে সিপিএম আর বিজেপি। বাঁ দিকে তৃণমূল। ক্যাম্পে বিশেষ ভিড় নেই। সবাই একসঙ্গে রাস্তায়। একসঙ্গে চলছে খাওয়াদাওয়া।

Advertisement

ভোটের পুরুলিয়া এ বার অনেক অশান্তি দেখল। আবার এমন ছবিও রইল পাশে। পিঠাডিতে ফরওয়ার্জ ব্লকের মহম্মদ সাব্বির আলম, সিপিএমের আনন্দ মণ্ডল, কংগ্রেসের সীতেন মান্ডি, তৃণমূল কর্মী গণেশ টুডুদের নানা মত মিলে গেল একই পথে। সাব্বির বললেন, ‘‘যা লড়াই ব্যালটে।’’ সীতেন আবার বান্দোয়ান থেকে কংগ্রেসের জেলা পরিষদের প্রার্থী হয়েছেন। নিজের গ্রামে ভোট দিতে এসেছিলেন। বললেন, ‘‘কারিগর আসেনি। টিফিনও হয়নি। তৃণমূলের সবাই আমাদের খাওয়ালো আজ।’’

রঘুনাথপুর মহকুমা এলাকা এবং বাঘমুণ্ডিতে গোলমাল হলেও পুরুলিয়ার একটা বড় অংশ মোটের উপরে ভোটের দিন শান্ত ছিল। সকাল ১০টা নাগাদ মানবাজারের রাধামাধব বিদ্যায়তনে গিয়ে দেখা গেল দু’টি বুথের বাইরে বিরোধী প্রার্থীরা গল্পে মশগুল। তৃণমূলের মানবাজার পঞ্চায়েতের প্রার্থী নন্দলাল দাস এবং ওই পঞ্চায়েতের বিদায়ী উপপ্রধান সিপিএমের নিতাই দত্ত চায়ের আড্ডায় বসেছেন। অন্য বুথের বাইরে সিপিএমের প্রার্থী ভাদু বাউড়ির কোলে খেলা করছে বিজেপির প্রার্থী মৌসুমী দাস বাউড়ির বছর দেড়েকের ছেলে। নন্দলাল, নিতাই, মৌসুমীরা বলেন, ‘‘আমরা সারা বছর এ ভাবেই মিলেমিশে থাকি। মত আর পথ আলাদা হলেও আসলে সবার ভাল চেয়েই তো রাজনীতিটা করি।’’

Advertisement

বলরামপুর অযোধ্যা পাহাড়ের নীচে ঘাটবেড়া কেরোয়া গ্রাম পঞ্চায়েত। সেখানে পারবাইত প্রাথমিক বিদ্যালয়ের বুথ। ভোট দিয়ে ফেরার পথে তৃণমূলের ক্যাম্পে মুড়ি নিয়ে বিজেপির ক্যাম্পে ছোলাভাজা নিচ্ছিলেন অনেকে। তৃণমূলের অমূল্য মাহাতো বলেন, ‘‘দলের বাছবিচার নেই। ওদের ছোলা আমাদের মুড়ি।’’ পথে দেখা হল সৃষ্টিধর মাহাতোর সঙ্গে। বললেন, ‘‘বলরামপুরে উৎসবের আবহেই ভোট হয়েছে।’’

নিতুড়িয়ার গোবাগ মোড়ের কাছে প্রাথমিক স্কুলে ভোট চলছিল। তৃণমূল, সিপিএম, বিজেপি এবং ঝাড়খণ্ড মুক্তি মোর্চার আলাদা আলাদা ক্যাম্প রয়েছে দূরে। অনেককেই দেখা গেল, ভোট দিয়ে ফেরার পথে এক দলের ক্যাম্পে একগাল মুড়ি খেয়ে অন্য দলের ক্যাম্পে চপ নিতে। তেমনই এক জনের মন্তব্য, ‘‘চপ-মুড়ি তো সারা বছরের। এর আবার রাজনীতি হয় নাকি?’’

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement