বোলপুর তৃণমূল কার্যালয়ে কালীকে গয়না পরাচ্ছেন অনুব্রত মণ্ডল। এ বারও এই ছবি কি দেখা যাবে? ফাইল চিত্র
তিহাড় জেলে বন্দি থাকায় গত দু’বছর নিজের গ্রামের বাড়ির দুর্গাপুজো এবং দলীয় কার্যালয়ের কালীপুজোয় থাকতে পারেননি তৃণমূলের জেলা সভাপতি অনুব্রত মণ্ডল। এ বার পুজোর আগে বোলপুরে ফিরে আসায় অনুব্রত আগের মতোই কালীপুজোর দেখাশোনা আগের মতো নিজের হাতে করবেন বলে আশাবাদী তৃণমূল কর্মী-সমর্থকেরা।
তবে, সিবিআইয়ের হাতে গ্রেফতার আগে পর্যন্ত যে বিপুল পরিমাণ স্বর্ণালঙ্কারে কালীকে সাজাতেন অনুব্রত, তা এ বার হবে কি না, স্পষ্ট নয়। সূত্রের খবর, কালীর গয়না কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থার নজর রয়েছে এবং গয়না নিয়ে বিভিন্ন জনকে জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়েছে নানা সময়ে। ফলে গয়না পরানো হবে কি না, হলে কতটা, তা নিয়ে জেলা তৃণমূলের কোনও নেতা মুখ খুলতে চাননি।
তৃণমূলের জেলা সহ-সভাপতি মলয় মুখোপাধ্যায় বলেন, ‘‘প্রত্যেক বছরের মতো এ বারও পুজো হবে। তবে জেলা সভাপতি ফিরে আসায় সেই পুজোর আনন্দ, উদ্দীপনা কর্মীদের মধ্যে অবশ্যই বাড়বে। এ বারও সকলে মিলে চাঁদা করে পুজোর খরচ ও প্রসাদের আয়োজন করা হবে। তবে দেবীকে কী ভাবে সাজানো হবে, সেই বিষয়ে কিছু বলতে পারব না।”
তৃণমূল সূত্রে জানা গিয়েছে, ১৯৮৮ সাল থেকে শুরু হওয়া এই পুজোর জাঁকজমক শুরু হয় তৃণমূল ক্ষমতায় আসার পর থেকে। যতদিন গিয়েছে দলের শ্রীবৃদ্ধির সঙ্গে সঙ্গে বেড়েছে পুজোর আয়োজনও।
মাঝে কেবল মাতৃবিয়োগ ও স্ত্রীর মৃত্যুর কারণে দেবীকে নিজের হাতে সাজাতে পারেননি অনুব্রত। ২০২০ সালে কালীকে ৩০০ ভরির বেশি সোনার গয়নায় সাজানো হয়েছিল। ২০২১ সালে সোনার মুকুট, বাউটি, বাজুবন্ধন, কানের দুল, গলার হার, হাতের আংটি, কোমর বিছে মিলিয়ে প্রায় ৫৭০ ভরি সোনার গয়নায় কালী প্রতিমাকে সাজিয়েছিলেন অনুব্রত। তা নিয়ে প্রশ্ন তোলেন বিরোধীরা।
কিন্তু, ২০২২-এর অগস্টে গরু পাচার মামলায় অনুব্রত সিবিআইয়ের হাতে গ্রেফতার হওয়ার পর থেকেই পরিস্থিতি বদলে যায়। ওই মামলার সূত্রে বোলপুরের তৃণমূল কার্যালয়ের পাশাপাশি কালীর গয়নাও তদন্তকারীদের নজরে ছিল। ফলে, গত দু'বছর নামমাত্র গয়না দিয়েই দেবীকে সাজানো হয়েছিল। অনুব্রত নিজে এ বার থাকলেও দেবীকে সাজাবেন কি না বা কত গয়না দিয়ে সাজানো হবে, পরিষ্কার নয়।
তৃণমূল সূত্রের খবর, দলের নেতাকর্মীদের চাঁদা ও অনুদান দিয়ে পুজোর আয়োজন করা হবে। থাকবে প্রসাদ বিতরণও খাওয়াদাওয়ার ব্যবস্থা। জেলা তৃণমূল নেতা গগন সরকার বলেন, “কেষ্টদা ফিরে আসায় গত দু’বছরের তুলনায় এ বার কালীপুজোর জৌলুস বাড়বে।”