টি-২০ ক্রিকেট ফাইনালেঅনুব্রত মণ্ডলকে সংবর্ধনা। —নিজস্ব চিত্র।
এর আগে তিনি বোলপুরে দুর্গাপুজোর কার্নিভালের উদ্বোধন করায় বিতর্ক বেধেছিল। এ বার সিএবি-র আন্তঃজেলা টি-২০ ক্রিকেট টুর্নামেন্টের ফাইনালে বীরভূমের জেলা তৃণমূল সভাপতি অনুব্রত মণ্ডলকে সংবর্ধনা দেওয়ায় ফের বিতর্ক বাধল।
মঙ্গলবার সিএবি-র আন্তঃজেলা টি-২০ ক্রিকেট ‘পেটাও বাংলা পেটাও’ টুর্নামেন্টের ফাইনালে ছিল। সিউড়ি ডিএসএ স্টেডিয়ামে আয়োজিত দিন-রাতের সেই ফাইনালের আগে সংবর্ধনা দেওয়া হয় অনুব্রতকে। তাঁর সঙ্গেই একই সঙ্গে সংবর্ধিত হন সিএবি প্রেসিডেন্ট স্নেহাশিস গঙ্গোপাধ্যায়, জেলাশাসক বিধান রায়, দুই অতিরিক্ত জেলাশাসক এবং সিউড়ির বিধায়ক বিকাশ রায়চৌধুরী। সিএবির অন্য কর্তারাদেরও সংবর্ধনা দেওয়া হয়। কিন্তু অনুব্রতকে কেন সংবর্ধনা দেওয়া হল, বিতর্ক বেধেছে তা নিয়েই।
বিরোধীদের প্রশ্ন, না অনুব্রত সিএবির কোনও পদে আছেন, না জেলা ক্রীড়া সংস্থা বা প্রশাসনিক কোনও পদে তিনি রয়েছেন। তাহলে কী ভাবে একটি রাজনৈতিক দলের জেলা সভাপতিকে সিএবি-র টুর্নামেন্টের মঞ্চে সংবর্ধিত করা হল! বিরোধীদের আরও দাবি, গরু পাচার মামলায় অভিযুক্ত অনুব্রত কিছু দিন আগে জামিনে জেলায় ফিরেছেন। নির্দোষ প্রমাণিত নন। তাহলে তাঁকে কেন ডাকা হবে?
গত মাসের ১৪ তারিখ বোলপুরে রাজ্য সরকার অনুষ্ঠিত দুর্গাপুজোর কার্নিভালেরও উদ্বোধন হয়েছিল সেই অনুব্রত মণ্ডলের হাত ধরে। সেখানে উপস্থিত ছিলেন রাজ্যের মন্ত্রী চন্দ্রনাথ সিংহ। সে বারও বিরোধীদের তরফে প্রশ্ন উঠেছিল কোনও প্রশাসনিক পদে না-থাকা অনুব্রত কী করে সরকারি অনুষ্ঠানের উদ্বোধন করলেন। এ বারও সেই প্রশ্ন উঠেছে। সিপিএমের জেলা সম্পাদক গৌতম ঘোষ বলছেন, ‘‘উনি তো জামিন পেয়েছেন। এখনও অভিযুক্তই। নির্দোষ প্রমাণিত নন। ফলে তাঁকে ডাকায় প্রশ্ন তো থাকবেই।’’ বিজেপির বীরভূম সাংগঠনিক জেলার সভাপতি ধ্রুব সাহা বলেন, ‘‘অনুব্রতর মতো তিহাড় জেল ফেরত একজন অভিযুক্তকে সংবর্ধনা দেওয়া, সম্মান জানানোয় সিএবি-র নিরপেক্ষতা নিয়ে প্রশ্ন উঠে যায়।’’
তবে সিএবি সূত্রে দাবি, এই সংবর্ধনার সিদ্ধান্ত বা আয়োজনের ‘দায়’ তাদের নয়। সিএবি-র একটি সূত্রের দাবি, টুর্নামেন্টটি সিএবি পরিচালিত হলেও পুরো বিষয়টি আয়োজনের দায়িত্বে ছিল বীরভূম জেলা স্পোর্টস অ্যাসোসিয়েশন। ফলে এর সঙ্গে সিএবি-র কোনও যোগ নেই। ডিএসএ-র সম্পাদক বিদ্যাসাগর সাউ অবশ্য দাবি করেছেন, ‘‘অহেতুক রাজনৈতিক বিতর্ক তৈরির চেষ্টা চলছে।’’ তিনি বলেন, ‘‘আমরা সকলকে আমন্ত্রণ জানিয়েছি খেলা দেখার জন্য। কংগ্রেসের প্রাক্তন জেলা সভাপতি, সম্ভবত এখনও দলের কোনও পদে আছেন, সেই সঞ্জয় অধিকারী মাঠে এসেছিলেন। তাঁকেও একই ভাবে সংবর্ধনা জানানো হয়েছে। অনুব্রত মণ্ডলকেও জানানো হয়েছে। তিনি তো সম্মানীয় ব্যক্তি অবশ্যই।’’