—ফাইল চিত্র।
ধূমপান ক্ষতিকারক সবাই জানেন। প্রকাশ্যে ধূমপান নিষিদ্ধ হয়েছে আইন করে অনেক দিন আগে। কিন্তু, পরোক্ষ ধূমপানও যে সমান ক্ষতির, সেই ব্যাপারটা নজর এড়িয়ে যায় বলে মত অনেকের। এ বার অবশ্য নজর দিচ্ছে প্রশাসন। অঙ্গনওয়াড়ি কেন্দ্র চত্বরকেও তামাক-বর্জিত করার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
সমস্ত সরকারি অফিস, শিক্ষা প্রতিষ্ঠান এমনকী বেশি সংখ্যক ঘর বিশিষ্ট হোটেল-সহ বিভিন্ন জায়গায় ধূমপান বা তামাক সেবন ও বিক্রির উপর কড়া নিষেধাজ্ঞা এসেছিল। এ বার অঙ্গনওয়াড়ি কেন্দ্র চত্বরকেও তামাক-বর্জিত করার নির্দেশ দিয়েছে রাজ্য সরকারের সমাজকল্যাণ দফতর। কারণ শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে পাঠানোর আগে অঙ্গনওয়াড়ি কেন্দ্রই হচ্ছে প্রথম ধাপ যেখানে শিশুরা নিয়মিত আসে। জেলা প্রাশাসন সূত্রে জানা গিয়েছে, সংশিষ্ট দফতরের প্রধান সচিব রোশনি সেন গত মাসে প্রতিটি জেলাকে এমন নির্দেশ পাঠিয়েছেন। প্রতিটি অঙ্গনওয়াড়ি কেন্দ্রের সামনে বোর্ড লাগাতে হবে। সেখানে লেখা থাকবে, ‘নো-স্মোকিং’। উদ্দেশ্য, অঙ্গনওয়াড়ি কেন্দ্রে আসা বিপুল সংখ্যক মা ও শিশুকে সুস্থ রাখা এবং এই বিষয়ে সচতনতা গড়ে তোলা। বীরভূমের সুসংহত শিশু বিকাশ দফতরের প্রকল্প আধিকার অরিন্দম ভাদুড়ি বলেন, “ওই নির্দেশিকা মতোই জেলায় পদক্ষেপ করা হচ্ছে।”
প্রতিদিনই অনেক ছেলেমেয়ে, যাদের বয়স ১৮ পেরোয়নি, ধূমপানে আসক্ত হয় পড়ছে। প্রতিদিন লাফিয়ে বাড়ছে ধূমপান ও তামাক সেবন জনিত রোগের প্রকোপ। বিশেষজ্ঞদের মতে যাঁরা ধূমপান করেন না বা কোনও ধরনের তামাক জাতীয় নেশার দ্রব্য ব্যবহার করেন না, তাঁরাও আসলে সুরক্ষিত নন। পরোক্ষে ধূমপানও প্রায় একই রকমের ক্ষতিকারক। তাই চিকিৎসকদের মত— শুরুটা করা উচিত বাড়ি থেকেই। না হলে শিশুদের জন্য সমস্যা আরও ভয়ঙ্কর। আর সেটা বোঝাতেই এই নির্দেশ বলে প্রশাসনের কর্তাদের একাংশের দাবি। প্রশাসনের এক আধিকারিক বলেন, ‘‘অনেক অসচেতন অভিভাবক রয়েছেন যাঁরা শিশুদের সামনেই ধূমপান করেন বা তামাক সেবন করেন। অঙ্গনওয়াড়ি কেন্দ্রগুলিতে এসেও অনেক অভিভাবক এই অভ্যাস বদলাতে পারেন না। অথচ এখানে নিয়মিত মা ও শিশুদের যাতায়াত।’’
রাজ্যের নির্দেশ, অঙ্গনওয়াড়ি কেন্দ্র চত্বরে কোনও রকমের তামাকজাত দ্রব্য ব্যবহার করা যাবে না। এটা কেন্দ্রের কর্মী- সহায়িকাদের জানিয়ে দিতে হবে।
বীরভূমে ৪৮৯৬টি অঙ্গনওয়াড়ি কেন্দ্র রয়েছে। তার মধ্যে নিজস্ব ভবন রয়েছে ৩৭১১টির। অঙ্গনওয়াড়ি কেন্দ্রে যাওয়া প্রসূতি এবং শিশুর সংখ্যা ৩ লক্ষ ৯২ হাজার ৮৩৭ জন। সিডিপিও জানান, কী কী করতে হবে ইতিমধ্যেই কেন্দ্রগুলির কর্মী ও সহায়িকাদের জানানো হয়েছে। এ ছাড়া প্রতিমাসে এলাকাবাসী এবং মায়েদের নিয়ে যে বৈঠক হয়, পরোক্ষ ধূমপান ও তামাক সেবনের ক্ষতিকারক দিক সম্পর্কে সেখানেও সচেতনতা প্রচার করতে বলা হয়েছে। সচেতনতা বৃদ্ধির জন্য লিফলেটও ছাপানো হয়েছে বলে তিনি জানিয়েছেন।