হাসপাতালের অসুস্থ নবজাতক পরিচর্যা বিভাগে (এসএনএসইউ) ভর্তি রয়েছে সদ্যোজাত। অথচ প্রসূতির পরিবারের হাতে মৃত শিশু তুলে দিয়ে ডিসচার্জ সার্টিফিকেট দিয়ে দেওয়ার অভিযোগ উঠেছে পুরুলিয়া দেবেন মাহাতো সদর হাসপাতালে। হাসপাতালে কর্তব্যরত নিরাপত্তারক্ষীই কাগজপত্র দেখতে গিয়ে এই গোলমাল ধরতে পারেন। বুধবারের ঘটনায় হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের কাছে তদন্ত দাবি করেছেন ওই প্রসূতির স্বামী।
আড়শার ঝরিয়াডি গ্রামের বাসিন্দা নেপুরা মাহাতো প্রসবযন্ত্রণা নিয়ে সদর হাসপাতালে ভর্তি হন মঙ্গলবার সকালে। নেপুরার কাকিমা প্রেমলা মাহাতো জানান, মঙ্গলবার অনেক রাতে অস্ত্রোপচার করে বৌমার পুত্রসন্তান হয়। বৌমাকে প্রসূতি বিভাগে রাখা হয়েছিল। সদ্যোজাত সন্তানকে রাতে তাঁরা দেখতে পাননি। হাসপাতাল থেকে বলা হয়েছিল, বাচ্চা অসুস্থ থাকায় তাকে এসএনসিইউ বিভাগে ভর্তি রাখা হয়েছে। প্রেমলাদেবীর অভিযোগ, ‘‘বুধবার সকালে এক নার্স আমাদের জানান, ‘আপনাদের বাচ্চা মারা গিয়েছে’। একটি মৃত বাচ্চা আমার হাতে ধরিয়ে দেওয়া হয়। কী করে মারা গিয়েছে জিজ্ঞেস করেও কোনও সদুত্তর পাইনি।’’ ওই পরিবারের পরিচিত অজিত মাহাতো বলেন, ‘‘এর পরে প্রেমলাদেবীকে দিয়ে কিছু কাগজে সই করিয়ে মৃত বাচ্চা দিয়ে তাঁদের বাড়ি চলে যেতে বলা হয়।’’
মৃত বাচ্চা কোলে প্রেমলাদেবী তিন তলা থেকে সিঁড়ি দিয়ে নীচে নেমে বেরনোর মুখে নিরাপত্তারক্ষীদের সামনে পড়েন। প্রেমলাদেবী বলেন, ‘‘রক্ষী আমার কাছে কাগজ দেখতে চান। নার্সের দেওয়া কাগজ দেখাতেই রক্ষী বলেন, ‘এই বাচ্চা আপনাদের নয়’!’’ হাসপাতাল সূত্রের খবর, মৃত শিশুটির হাতে যে স্টিকার ছিল, তাতে মায়ের নাম নেপুরা মাহাতো ছিল না। প্রেমলাদেবীর কাছ থেকে নেপুরার নাম জানার পরেই ওই রক্ষীর মনে সন্দেহ হয়। তিনিই সঙ্গে সঙ্গে উপরে ওয়ার্ডে গিয়ে নার্সদের সঙ্গে যোগাযোগ করে ঘটনাটি তাঁদের জানান।’’ ওই পরিবারের দাবি, খোঁজ নিয়ে তাদের জানানো হয় তাদের বাচ্চা নবজাত শিশু পরিচর্যা কেন্দ্রেই রয়েছে। মৃত সদ্যোজাত তাদের নয়। যে নার্স ওই ওই কাণ্ড ঘটিয়েছেন, তিনি তাঁর কাছে ক্ষমাও চান বলে প্রেমলাদেবীর দাবি। নেপুরার দেওর শঙ্কর মাহাতো বলেন, ‘‘আমরা যখন এত বড় ভুলের জবাব চাই, এক নার্স বলেন এ নিয়ে হইচই করলে আমরাই নাকি বেশি ঝামেলায় পড়ব।’’ হাসপাতালের সহকারী সুপার শান্তনু মুখোপাধ্যায় বলেন, ‘‘তদন্ত হবে। সুপারের সঙ্গে আলোচনা করব। প্রয়োজনে তদন্ত কমিটিও গড়া হবে।’’