বন্ধ্যাকরণ (লাইগেশন) নিয়ে ক্ষোভ ছড়াল মুরারই ১ পঞ্চায়েত সমিতি এলাকায়। বুধবার মুরারই ১ ব্লক হাসপাতালে এলাকার ১৬ জনের বন্ধ্যাকরণ করানোর কথা ছিল। হাসপাতাল সূত্রের খবর, তার প্রাথমিক প্রস্তুতি হিসেবে উপস্থিত সকলকেই অ্যান্টিবায়োটিক, গ্যাস-অম্বল ও টিটেনাস এর ইনজেকশক দেওয়া হয়েছিল। কিন্তু, দুপুরের পরে তাঁদের বলা হয় এ দিন আর অপারেশন হবে না, আজ বৃহস্পতিবার যোগাযোগ করতে!
কেন?
ওই হাসপাতালে বন্ধ্যাকরণের দায়িত্বে রয়েছেন স্ত্রী-রোগ বিশেষজ্ঞ লক্ষ্মণ হাঁসদা। তাঁর যুক্তি, ‘‘লাইগেশনের ক্ষেত্রে বেশি ওজন হলে অপারেশনের আগে সাধারণ অ্যানাস্থেশিয়া করাতে হয়। লোকাল অ্যানাস্থেশিয়ায় অনেক সময় ঝুঁকি থাকে। এ দিন অপারেশন করার আগে অতিরিক্ত ওজনের বিষয়টি নজরে আসে। তাই বাকি আট জনের আর বন্ধ্যাকরণ করানো হয়নি। আজ আসতে বলা হয়েছে।’’ তা হলে অ্যান্টিবায়োটিক বা গ্যাস-অম্বলের ইনজেকশন দেওয়া হল কেন? লক্ষ্ণণবাবুর থেকে সদুত্তর মেলেনি।
আর সেখানেই জমেছে ক্ষোভ। মুরারই থানার ভাদিশ্বর গ্রামের বাসিন্দা তকবির শেখ-সহ রোগীর পরিজনদের অনেকেরই দাবি, হাসাপাতালে চিকিৎসার নামে হেনস্থা করা হয়েছে। ইনজেকশন দেওয়ার পরে রোগীরা কিছুটা অসুস্থ হয়ে পড়েন বলেও অভিযোগ তাঁদের। কারও আবার অভিযোগ, বন্ধ্যাকরণ হয়েছে এমন আট জনকে নয়, সকলকেই লোকাল অ্যানাস্থেশিয়া করানো হয়েছে। সে অভিযোগ অবশ্য মানতে চাননি লক্ষ্মণবাবু। রোগীর পরিজনদের তরফে কোথাও অবশ্য লিখিত অভিযোগ দায়ের হয়নি।
তবে হাসপাতালের ব্যবস্থাপনার বিরুদ্ধে অভিযোগ তুলে এ দিন রোগীর পরিজনদের অনেকে স্থানীয় মুরারই ১ ব্লক বিডিও-র কাছে যান। বিডিওকে না পেয়ে যান পঞ্চায়েত সমিতির সভাপতির কাছে। বিএমওএইচ বলাই রায় গোটা ঘটনা তদন্ত করে দেখার আশ্বাস দিয়েছেন। রোগীদের ক্ষোভের কথা রামপুরহাট স্বাস্থ্য জেলার মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক ব্রজেশ্বর মজুমদারের কানেও গিয়েছে। তবে তাঁর দাবি, ‘‘গোটা ঘটনা আসলে ভুল বোঝাবুঝির ফল।’’
জেলা স্বাস্থ্য দফতর থেকে এ দিন বন্ধ্যাকরণের জন্যে আসা রোগীদের হাসপাতালেই থেকে যাওয়ার প্রস্তাব দেয়। তবে কেউই অবশ্য শেষমেষ থাকতে রাজি হয়নি বলে জানা গিয়েছে।