ফিরছে পুরনো ছবি। নিজস্ব চিত্র
হোটেল-লজ আগেই খুলেছে। পর্যটকদের জন্য খুলেছে ভারতীয় পুরাতত্ত্ব সর্বেক্ষণের অধিগৃহীত মন্দিরগুলির দরজাও। তবুও তাঁদেরই দেখা নেই বলে এত দিন আক্ষেপ করছিলেন বাঁকুড়ার বিষ্ণুপুরের পর্যটন শিল্পের সঙ্গে যুক্ত মানুষজন। তবে সংক্রমণ বৃদ্ধির মধ্যেও এত দিনে পর্যটকদের আনাগোনা শুরু হওয়ায় স্বস্তি ফিরেছে বিষ্ণুপুরে।করোনা আবহের মধ্যে দীর্ঘদিন পরে মন্দিরগুলিতে পর্যটকদের দেখা মেলায় খুশি অনেকেই। গাইডদের মুখেও হাসি ফুটেছে। টেরাকোটার সামগ্রী নিয়ে কয়েকজন শিল্পী মন্দির চত্বরের কাছে নিয়মিত দু’বেলা দোকান খুলছেন। পর্যটকদের দেখে তাঁরাও ভরসা পাচ্ছেন।
রবিবার বনগাঁ থেকে পর্যটকদের একটি দল জয়রামবাটি, কামারপুকুর ঘুরে জয়পুরের একটি বেসরকারি রিসর্টে ওঠেন। সোমবার তাঁরা বিষ্ণুপুরে আসেন মন্দির দেখতে। তাঁদের মধ্যে তারক বসু বলেন, “বাড়িতে বসে হাঁপিয়ে উঠেছি। বাচ্চাদের অবস্থা আরও শোচনীয়। তাই স্বাস্থ্য-বিধি মেনে চালক-সহ ১৭ জন মিলে গাড়িতে বেরিয়ে পড়েছি আনন্দের খোঁজে। অনেক দিন পরে যেন তৃপ্তি ভরে শ্বাস নিলাম। আমার মনে হয়, এই সময়ে পর্যটন ক্ষেত্রে আসার খুব একটা অসুবিধা নেই।”
পর্যটকদের টেরাকোটার মন্দিরগুলি ঘুরিয়ে ইতিহাস বোঝাচ্ছিলেন গাইডেরা। গাইডদের মধ্যে অসিত দাস বলেন, “মন্দির খোলা হয়েছে আগেই। পর্যটক না আসায় আমরা বেকার হয়ে পড়েছিলাম। তবু প্রতিদিন অল্পস্বল্প গাড়ি আসায় আমরা খুশি। এখন মনে হচ্ছে, আবার সব কিছু স্বাভাবিক হয়ে যাবে। শীতের মরসুমে বিষ্ণুপুর আবার পর্যটকদের আনাগোনায় ভরে উঠবে।” মঙ্গলবার বর্ধমান থেকে বিষ্ণুপুর বেড়াতে এসেছিল একটি পরিবার। তাঁদের মধ্যে শুভাশিস দত্ত বলেন, “এখন চার দিকেই ফাঁকা। ভাল করে দেখা-ঘোরার সুযোগ এটাই । তাই ভয় না করেই বেরিয়ে পড়েছি বাঁকুড়া ঘুরতে। বিষ্ণুপুর দেখেই মুকুটমণিপুরে যাব। সেখানে রাত কাটিয়ে পরের দিন কামারপুকুর হয়ে বাড়ি ফিরব।”
তবে এই সময়ে পর্যটকদের অধিকাংশই জয়পুর বা মুকুটমণিপুরে রাত্রিবাস করছেন বলেই জানাচ্ছেন বিষ্ণুপুরের বেসরকারি লজ মালিকদের একাংশ। বিষ্ণুপুর ট্যুরিস্ট লজের ম্যানেজারের দায়িত্বে থাকা শুভাশিস বাউরি দাস বলেন, “মঙ্গলবার দু’টি ঘরে পর্যটকেরা এসেছেন। কোনও দিন তিনটে ঘরে লোক হচ্ছে। আবার ফাঁকাও থাকছে অধিকাংশ দিন। পর্যটকেরা বিষ্ণুপুরে এলেও বাইরেই রাত্রিবাস করছেন বলে মনে হচ্ছে।’’ লজ-মালিকদের একাংশের মতে, পর্যটকেরা সম্ভবত শহরের থেকে ফাঁকা জায়গায় থাকতে এখন পছন্দ করছেন।