Dengue

হাঁড়ির মধ্যে গিজগিজ এডিস-লার্ভা

চলতি মরসুমে এই জেলায় এডিস মশা হুল ফোটাতে না পারলেও পুজোর পর থেকেই তা বিষ ঢোকাতে শুরু করেছে মানব শরীরে।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

পুরুলিয়া শেষ আপডেট: ২৬ অক্টোবর ২০১৭ ০২:৫৪
Share:

অভিযান: পুরুলিয়া শহরের ১১ নম্বর ওয়ার্ডের মহুলঘুটা এলাকা ঘুরে দেখছেন স্বাস্থ্য দফতরের প্রতিনিধিরা। বুধবার। নিজস্ব চিত্র

দিন যত এগোচ্ছে, পুরুলিয়ায় নতুন করে ডেঙ্গি আক্রান্তের খোঁজ মিলছে। এ বার ডেঙ্গিতে অসুস্থ পড়েছেন পুরুলিয়া দেবেন মাহাতো সদর হাসপাতালের এক কর্মী। শহরের ১১ নম্বর ওয়ার্ডের মহুলঘুটা এলাকাতেও দশম শ্রেণির এক পড়ুয়া ডেঙ্গিতে অসুস্থ হয়ে পড়েছে। এ নিয়ে গত ক’দিনে পুরুলিয়া জেলায় মোট আট জনের রক্তে ডেঙ্গির জীবাণু মিলল।

Advertisement

চলতি মরসুমে এই জেলায় এডিস মশা হুল ফোটাতে না পারলেও পুজোর পর থেকেই তা বিষ ঢোকাতে শুরু করেছে মানব শরীরে। বেড়ে চলেছে ডেঙ্গি রোগীর সংখ্যা। শনিবার জ্বর ও শরীরে প্রচণ্ড যন্ত্রণা নিয়ে বিবেক বাউরি নামের ওই স্বাস্থ্য কর্মীকে জেলা সদর হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। মঙ্গলবার তাঁকে বাঁকুড়া মেডিক্যালে স্থানান্তর করা হয়। রবিবার থেকে পুরুলিয়া সদর হাসপাতালেই ভর্তি রয়েছে মহুলঘুটার এক কিশোর। তাঁদের রক্তে ডেঙ্গির জীবাণু থাকার খবর বুধবার পাওয়া যায়।

এত দিন পুরুলিয়া পুরসভা দাবি করছিল, ডেঙ্গি মোকাবিলায় আগাম সর্তকতা নেওয়ায় এ বার তা অনেকটা দমন করে রাখা গিয়েছিল। কিন্তু এ দিন মহুলঘুটা এলাকায় গিয়ে স্বাস্থ্য দফতরের কর্তারা যা দেখলেন, তাতে সমাজের সর্বস্তরের মানুষের কাছে ডেঙ্গি নিয়ে সচেতনতা আদৌ গড়ে উঠেছে কি না, তা নিয়ে প্রশ্ন উঠে গিয়েছে।

Advertisement

এ দিন মহুলঘুটা এলাকায় যান জেলার উপমুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক গুরুদাস পাত্র, মহামারী বিশেষজ্ঞ সতীনাথ ভুঁইয়া-সহ জেলা স্বাস্থ্য দফতরের কর্মীরা। তাঁরা আক্রান্তের কিশোরের মা চিন্তা দাসের কাছে পরিবারের আর কেউ ডেঙ্গিতে অসুস্থ কি না খোঁজ নেন। ঘুরে দেখেন পাড়া।

সেখানেই তাঁদের জন্য অপেক্ষা করেছিল বিস্ময়। কয়েকটি বাড়িতে তাঁদের নজরে পড়ে, মাটির হাঁড়ি, প্লাস্টিকের বালতি ও বিভিন্ন পাত্রে জমিয়ে রাখা জলে মশার লার্ভা গিজগিজ করছে। কেন জল জমিয়ে রাখা হয়েছে, তা নিয়ে সদুত্তর মেলেনি। এক বাসিন্দা চাঁপা বাউরি দাবি করেন, ‘‘এ ভাবে জল জমিয়ে রাখলে যে মশা জন্মায় তা জানতাম না। এ বার থেকে জল ফেলে দেব।’’ মহামারী বিশেষজ্ঞ বলেন, ‘‘এই পাড়ায় বেশ কয়েকটি বাড়িতে বিভিন্ন পাত্রে জমিয়ে রাখা জলে এডিস মশার লার্ভা মিলেছে। এটা বিপজ্জনক। মানুষের সচেতনতার প্রয়োজন।’’ যদিও এলাকায় কাজ করা এক স্বাস্থ্যকর্মী দাবি করেন, ‘‘আমরা বাসিন্দাদের আগেই সতর্ক করেছি। কিন্তু কেউ যদি জল জমিয়ে রাখে কী করা যাবে?’’

পুরসভার স্বাস্থ্য দফতরের নোডাল অফিসার সুমিত বক্সীও দাবি করেন, ‘‘প্রতিটি ওয়ার্ডের বাড়ি বাড়ি গিয়ে পুরসভার কর্মীরা ডেঙ্গি, ম্যালেরিয়া প্রভৃতি নিয়ে সচেতনতার প্রচার চালিয়েছেন। হয়তো এত দিন যাঁরা গুরুত্ব দেননি, তাঁরাই এখন ঠেকায় পড়ে শুনতে চাইছেন।’’

এরপরে তাঁরা যান এলাকার প্রাথমিক বিদ্যালয়ে। সেখানে পরিদর্শন দলে যোগ দেন স্থানীয় কাউন্সিলর মৌসুমী দত্ত। তাঁরা দেখেন, স্কুলের গেটের কাছে কুয়োর পাশে জল কাদার মধ্যে পড়ে জল ভর্তি প্রচুর প্লাস্টিকের গ্লাস। ভিড় থেকে কেউ জবাব দেন, নেশাড়ুরা মদ খেয়ে এই গ্লাসগুলি ফেলে যায়। সেই গ্লাসেও মশার লার্ভা খুঁজে পান স্বাস্থ্য কর্তারা। স্কুলের আশপাশেও জমে থাকা জল অবিলম্বে পরিষ্কার করতে কাউন্সিলরকে বলেন স্বাস্থ্য কর্তারা। কাউন্সিলর মৌসুমীদেবী তাঁদের বলেন, ‘‘নর্দমা যাতে নিয়মিত সাফ করা হয়, তা তিনি দেখবেন।’’

স্কুলে বা এলাকায় জ্বরের কোনও সমীক্ষা পুরসভা করেছে কি না, গুরুদাসবাবু তা জানতে চাইলে স্বাস্থ্যকর্মী শম্পা মাহাতো তাঁকে বলেন, ‘‘দু’-একদিনের মধ্যেই সমীক্ষা শুরু হবে।’’ পুরসভাও জানাচ্ছে, প্রতি দিন তিন-চারটে ওয়ার্ডে বাড়ি বাড়ি ঘুরে লার্ভা মারার ওষুধ স্প্রে করা চলছে। বিকেলে বিভিন্ন পাড়ায় ফগিং মেশিন দিয়ে মশা মারার ধোঁয়াও দেওয়া হচ্ছে।

জেলা মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক অনিলকুমার দত্ত বলেন, ‘‘নতুন করে যে দু’জনের দেহে ডেঙ্গির জীবাণু

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement