প্রতীকী ছবি।
করোনা সংক্রমণ নিয়ন্ত্রণে চলছে কড়াকড়ি। দিনের বেশির ভাগ সময় বন্ধ থাকছে দোকানপাট। বন্ধ যানবাহন। অনেকের রুটিরুজিও বন্ধ। এই পরিস্থিতিতে মানুষজনের আয়ের সংস্থান করতে একশো দিনের কাজের প্রকল্পে গতি বাড়াতে বিশেষ ভাবে উদ্যোগী হল পুরুলিয়া জেলা প্রশাসন।
সে জন্য গ্রাম পঞ্চায়েত স্তরে সংসদভিত্তিক দল তৈরি করে মানুষের কাছে কাজের বার্তা পৌঁছে দেওয়ার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। যাঁদের জব-কার্ড নেই, তাঁদের জন্য সে ব্যবস্থা করায় জোর দেওয়া হয়েছে।
পুরুলিয়ার জেলাশাসক রাহুল মজুমদার বলেন, ‘‘প্রতি ব্লকে সংসদভিত্তিক দল গড়া হচ্ছে। মূলত গ্রাম পঞ্চায়েত কর্মীদের নিয়েই এই দল গড়া হবে। এই দলের সদস্যরা মানুষজনের কাছে কাজের জন্য নির্দিষ্ট আবেদনপত্র পৌঁছে দেবেন। এক-একটি এলাকায় যেমন আবেদন আসবে, তার নিরিখে তাঁদের কাজে যুক্ত করা হবে।’’
জেলাশাসক জানান, গত দু’টি আর্থিক বছরে প্রতিটি পঞ্চায়েত এলাকায় সক্রিয় ভাবে যে সমস্ত পরিবার এই প্রকল্পে কাজ করেছে, তাদের তথ্য প্রশাসনের কাছে রয়েছে। সে তথ্য অনুযায়ী, জব-কার্ড প্রাপকদের কাজের আবেদনপত্র দেওয়া হবে। সে সঙ্গে নতুন আবেদনকারীদেরও জব-কার্ড দেওয়া হবে।
গত বছর লকডাউনে একশো দিনের কাজকে হাতিয়ার করেই গ্রামীণ অর্থনীতিকে অনেকখানি সামাল দিয়েছিল পুরুলিয়া জেলা প্রশাসন। প্রশাসনের একটি সূত্র জানাচ্ছে, ২০১৯-’২০ আর্থিক বছরে এই প্রকল্পে জেলায় শ্রমদিবস সৃষ্টি হয়েছিল এক কোটি ১৭ লক্ষ ২৯ হাজার। কাজ পেয়েছিলেন দু’লক্ষ তিন হাজার পরিবার। সেখানে গত আর্থিক বছরে অর্থাৎ ২০২০-’২১ –তে এই প্রকল্পে শ্রমদিবসের সংখ্যা আগের বছরকে ছাপিয়ে যায়। শ্রমদিবস সৃষ্টি হয়েছিল এক কোটি ৫০ লক্ষ ৯৭ হাজার। আগের আর্থিক বছরের থেকে বেশি পরিবারকে যুক্ত করা হয় এই প্রকল্পের কাজে (দু’লক্ষ ৮৪ হাজার)।
গত বছর মে মাসে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ‘মাটির সৃষ্টি’ প্রকল্প ঘোষণার পরে, একশো দিনের কাজে বেশ কিছু কাজ জেলায় করে প্রশাসন। তাতে অনেকের রোজগার যেমন বাড়ে, তেমনই পুরুলিয়ার ওই প্রকল্পে ভাল কাজ হয়, যা রাজ্য সরকারের নজর কাড়ে।
আড়শার বামুনডিহার দিনমজুর ধীরেন লায়ার কথায়, ‘‘এখন যা অবস্থা কোথাও কাজ নেই। একশো দিনের কাজ যত তাড়াতাড়ি শুরু হয়, ভাল। পরিবারের ছ’জন কাজ পেলে সংসার চালাতে পারব।’’ ওই গ্রামের বাসিন্দা দিনমজুর নিতাই লায়া, দীপক মাহাতো থেকে বান্দোয়ানের ভোমরাগোড়ার বাসিন্দা সোহন কর্মকার— সবার দাবি, ‘‘অবিলম্বে একশো দিনের কাজ শুরু করা হোক।’’
জেলাশাসক বলেন, ‘‘আগামী ১৫ জুনের মধ্যে কাজের আবেদনপত্র সংগ্রহ করে বিভিন্ন গ্রাম পঞ্চায়েত এলাকায় কী ধরনের কাজ হবে তা ঠিক করে ১৬ জুন থেকেই শুরু করতে হবে। ইতিমধ্যে বিডিওদের সঙ্গে বৈঠক করে এই মর্মে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।’’