কার্য বিবরণী না লেখার অভিযোগ পেয়ে ঝালদা পুরসভার বৈঠকের দু’টি খাতা বাজেয়াপ্ত করল প্রশাসন। সোমবার মহকুমাশাসক (পুরুলিয়ার সদর) আশিসকুমার সাহা ঝালদায় গিয়ে খাতা দু’টি বাজেয়াপ্ত করেন। এই পুরসভার পুরপ্রধানের বিরুদ্ধে অনাস্থার তলবি সভার দিন ঘোষণা করলেন উপপুরপ্রধান। তিনি জানিয়েছেন, বৃহস্পতিবার (১৫ সেপ্টেম্বর) বিকেল ৪টেয় এই তলবি সভা হবে।
কয়েক মাস আগে ঝালদার সাত কংগ্রেস, বাম ও নির্দল কাউন্সিলর তৃণমূলে যোগ দেন। এরপরেই কংগ্রেস পরিচালিত এই পুরসভার পুরপ্রধানের বিরুদ্ধে অনাস্থার চিঠি দেন তৃণমূলে যোগ দেওয়া ওই কাউন্সিলররা। বিধি মোতাবেক এর ১৫ দিনের মধ্যে তলবি সভা ডাকার কথা পুরপ্রধানের। সময় পেরিয়ে গেলেও তিনি সভা ডাকেননি। উল্টে মাসখানেক আগে তাঁর বিরুদ্ধে আনা অন্য একটি অনাস্থা খারিজ হয়ে যাওয়ার প্রসঙ্গ টেনে পরবর্তী অনাস্থা অবৈধ বলে দাবি করে তিনি হাইকোর্টে যান।
এ দিকে পুরপ্রধান ওই সভা না ডাকায় নিয়ম অনুযায়ী উপপুরপ্রধানের পরবর্তী সাত দিনের মধ্যে এই সভা ডাকার কথা ছিল। তাঁর দাবি, তিনি সময়সীমার শেষের দিকে দিন ঠিক করেছিলেন। যদিও তা জানতেন না দাবি করে কংগ্রেসত্যাগী কয়েকজন কাউন্সিলর নিজেরাই তলবি সভা ডেকে বসেন। এ দিকে ওদের ডাকা তলবি সভাকে চ্যালেঞ্জ করে হাইকোর্টে যান উপপুরপ্রধান। হাইকোর্ট জানিয়ে দেয়, ১৫ দিনের মধ্যে ওই সভা উপপুরপ্রধানকেই ডাকতে হবে। উপপুরপ্রধান মহেন্দ্রকুমার রুংটা বলেন, ‘‘আদালতের নির্দেশ অনুয়ায়ী আমি ১৫ সেপ্টেম্বর বিকেলে এই তলবি সভা ডেকেছি।’’
এই ডামাডোল পরিস্থিতির মধ্যে পুরসভায় কয়েকটি ক্ষেত্রে বৈঠক হলেও বৈঠকের কার্য বিবরণী খাতায় লেখা হচ্ছে না বলে প্রশাসনের কাছে অভিযোগ জানিয়েছিলেন কংগ্রেস ছেড়ে তৃণমূলে যোগ দেওয়া কাউন্সিলর প্রদীপ কর্মকার। মহকুমাশাসক (পুরুলিয়ার সদর) বলেন, ‘‘খাতাগুলি বাজেয়াপ্ত করা হয়েছে।’’ তবে পুরপ্রধানের বক্তব্য, ‘‘কার্য বিবরণী লেখেন স্যানিটারি ইন্সপেক্টর। অন্য কাজ সামলে তাঁকে এই কাজ করতে হয়। তিনি সময় করে নিশ্চয়ই পরের বৈঠকের আগে কার্য বিবরণী লিখে নিতেন। অন্য কোনও অসৎ উদ্দেশ্যে এর পিছনে নেই। এটা বিরোধী কাউন্সিলরাও ভাল করে জানেন।’’
তিনি জানান, পুরো বিষয়টি মহকুমাশাসককে বলা হয়েছে।