কর্মী খুন হলে বাড়ি ঘেরাও করার নিদান 

রঘুনাথপুর ২ ব্লকের মৌতোড় গ্রামের ফুটবল ময়দানের সভায় বৃহস্পতিবার অভিষেকের বক্তব্যে সাম্প্রতিক সময়ে পুরুলিয়া জেলায় তৃণমূলের নেতা-কর্মী খুনের প্রসঙ্গ উঠে আসে।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

রঘুনাথপুর শেষ আপডেট: ২১ ডিসেম্বর ২০১৮ ০১:১১
Share:

হামিদ আনসারির স্ত্রী ও ছেলের সঙ্গে অভিষেক। নিজস্ব িচত্র

তৃণমূল কর্মী খুন হলে বিজেপির জেলা সভাপতি ও সেই এলাকার ব্লক ও অঞ্চল সভাপতিদের বাড়ি ঘেরাও করতে বলে গেলেন দলীয় পর্যবেক্ষক তথা সাংসদ অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়।

Advertisement

রঘুনাথপুর ২ ব্লকের মৌতোড় গ্রামের ফুটবল ময়দানের সভায় বৃহস্পতিবার অভিষেকের বক্তব্যে সাম্প্রতিক সময়ে পুরুলিয়া জেলায় তৃণমূলের নেতা-কর্মী খুনের প্রসঙ্গ উঠে আসে। তিনি বলেন, ‘‘রঘুনাথপুরে আমাদের এক শিক্ষককে, পুঞ্চায় আমাদের দলের এক কর্মীকে গুলি চালিয়ে খুন করা হয়েছে। এর জবাব মানুষ আপনাদের দেবে।” সম্প্রতি আদ্রায় আততায়ীর গুলিতে খুন হন যুব তৃণমূল নেতা হামিদ আনসারি। সেই প্রসঙ্গে অভিষেক বলেন, ‘‘আদ্রার খুন যেন এই জেলার শেষ খুন হয়। আগামী দিনে যদি একটাও খুন হয়, বিদ্যাসাগরবাবুর (বিজেপির জেলা সভাপতি) বাড়ি ঘেরাও হবে।”

দলের কর্মী-সমর্থকদের উদ্দেশে অভিষেক বলেন, ‘‘যেখানে হত্যা হবে, সেখানেই বিজেপির আঞ্চলিক ও ব্লক স্তরের নেতাদের বাড়ি ঘেরাও করবেন। কলকাতা থেকে আমি এসে তার নেতৃত্ব দেব। তৃণমূল নেতা-কর্মীদের গায়ে যদি এরপর একটাও আঁচড় লাগে, কত ধানে কত চাল মাঠে ময়দানে রাজনৈতিক লড়াই করে তা বুঝিয়ে দেওয়া হবে।”

Advertisement

বিজেপির জেলা সভাপতি বিদ্যাসাগর চক্রবর্তীর পাল্টা দাবি, ‘‘বিজেপি খুনের রাজনীতিতে বিশ্বাস করে না। তৃণমূল নেতারা মানুষকে বিভ্রান্ত করতে ভিত্তিহীন বক্তব্য রাখছেন।” তাঁদের নেতাদের বাড়ি ঘেরাওয়ের হুঁশিয়ারি প্রসঙ্গে বিদ্যাসাগরবাবুর মন্তব্য, ‘‘ক্ষমতা থাকলে তৃণমূল পুলিশ, প্রশাসনের সাহায্য না নিয়ে মাঠে নামুক। তাহলেই প্রমাণ হয়ে যাবে কার রাজনৈতিক জোর কতটা।”

আগামী ১৯ জানুয়ারি ব্রিগেড গ্রাউন্ডে তৃণমূলের জনসভার প্রস্তুতিতে এ দিন সভা করতে আসেছিলে অভিষেক। ঘটনা হল, এই রঘুনাথপুর ২ পঞ্চায়েত সমিতি এ বার তৃণমূলের কাছ থেকে দখল করেছে বিজেপি। সে কারণে এখানকার নিচুতলার তৃণমূল কর্মীরা দলের বড় সমাবেশ করতে চাইছিলেন।

দলের জেলা সভাপতি শান্তিরাম মাহাতোও জানান, স্বয়ং অভিষেকও এই এলাকায় সভা করতে আগ্রহী ছিলেন। ভিড়ও ছিল ভালই। জেলা পরিষদের সভাধিপতি সুজয় বন্দ্যোপাধ্যায়ের দাবি, লক্ষাধিক লোক এসেছিলেন। তবে, প্রাথমিক ভাবে পুলিশের হিসাব, পঞ্চাশ হাজার লোক হয়েছিল।

সভায় ভিড় দেখে সন্তোষ প্রকাশ করে অভিষেক দাবি করেন, ‘‘সারা জেলা থেকে নয়, এ দিনের সভায় শুধু রঘুনাথপুর মহকুমার চার-পাঁচটি ব্লক থেকেই কর্মী-সমর্থকরা এসেছেন। তাঁর কথায়, ‘‘মানুষের সমাগমের তুলনায় সভাস্থল ছোট হয়ে গিয়েছে। বহু মানুষ সভাস্থলে ঢুকতে পারেননি।”

এ দিন সভাতে দলীয় নেতারা সকলেই বক্তব্য রাখতে গিয়ে সাম্প্রতিক সময়ে জেলায় তৃণমূলের নেতা-কর্মীদের খুনের ঘটনার প্রসঙ্গ তুলে অভিযোগের আঙুল তুলেছে বিজেপি আশ্রিত দুষ্কৃতীদের বিরুদ্ধে। ভিন্‌ রাজ্য থেকে বিজেপি দুষ্কৃতীদের এনে এই জেলা অশান্ত করতে চাইছে বলে অভিযোগ করেছেন মন্ত্রী, সভাধিপতিরা।

এ দিন সভামঞ্চে ডাকা হয় আদ্রায় নিহত যুব তৃণমূল নেতা হামিদ আনসারি ও রঘুনাথপুরের বাসিন্দা তৃণমূল শিক্ষক সংগঠনের সদস্য নিহত চিন্ময় মণ্ডলের পরিজনদের। হামিদের স্ত্রী হুসেনাবানু ও চিন্ময়ের বাবা দীপকবাবুর সঙ্গে কথা বলেন অভিষেক। পরে ওই দুই পরিবারের সদস্যেরা জানান, তাঁদের সঙ্গে বিশদে কথা বলে দলগত ভাবে পাশে থাকার আশ্বাস দিয়েছেন অভিষেক।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement