বিশ্বভারতী বিশ্ববিদ্যালয়। —ফাইল চিত্র।
কর্তৃপক্ষের কাছে সপ্তম বেতন কমিশন অনুযায়ী বর্ধিত বেতনের আবেদন করেছিলেন বিশ্বভারতীর এক অস্থায়ী মহিলা কর্মী। হঠাৎ, কোনও কারণ না-দেখিয়ে তাঁকে চাকরি থেকে বরখাস্ত করেছে বিশ্বভারতী বলে ওই কর্মীর অভিযোগ। এই সিদ্ধান্তের প্রতিবাদ জানিয়ে ওই মহিলার পাশে দাঁড়িয়েছে বিশ্বভারতীর শিক্ষক সংগঠন ভিবিইউএফএ। বিশ্বভারতী কর্তৃপক্ষের বিরুদ্ধে আইনি পথে যাওয়ার হুঁশিয়ারিও দিয়েছেন ওই অস্থায়ী কর্মী।
স্থানীয় ও বিশ্বভারতী সূত্রে জানা গিয়েছে, শান্তিনিকেতনের সীমান্তপল্লির বাসিন্দা শ্রাবন্তী গঙ্গোপাধ্যায় ২০১৩ সাল থেকে বিশ্বভারতীর ভাষা ভবনের ‘ডকুমেন্টেশন অ্যাসিস্ট্যান্ট’ পদে অস্থায়ী কর্মী হিসাবে কাজ করে আসছিলেন। হঠাৎ তাঁকে চিঠি ধরিয়ে বলা হয়েছে, ভাষা ভবনে তাঁর পরিষেবার আর প্রয়োজন নেই। তাঁকে এক মাসের অগ্রিম বেতন দেওয়া হবে বলেও চিঠিতে জানানো হয়েছে।
শ্রাবন্তীর দাবি, ২০২০ সালে ভাষা ভবনের এক ‘ভুয়ো’ বিল সংক্রান্ত অভিযোগেও তাঁকে চাকরি থেকে বসিয়ে দেওয়া হয়েছিল। এর বিরুদ্ধে আদালতে যান তিনি। শ্রাবন্তীর দাবি, তাঁর বিরুদ্ধে কোনও সাক্ষ্য প্রমাণ না থাকায় তাঁকে চাকরি ফিরিয়ে দেওয়ার নির্দেশ দেওয়ার পাশাপাশি বিশ্বভারতীকে আর্থিক জরিমানা করে আদালত। শ্রাবন্তী যত দিন কাজে যোগ দিতে পারেননি, তত দিনের হিসাবে পারিশ্রমিক দেওয়ার নির্দেশ দেয় আদালত।
এর পরে অস্থায়ী কর্মীদের যে হারে বিশ্বভারতী বেতন দেয়, তাকে চ্যালেঞ্জ করেও কলকাতা হাই কোর্টে যান ওই মহিলা। বিশ্বভারতীর প্রত্যেক অস্থায়ী কর্মীকে সপ্তম বেতন কমিশনের সুপারিশ অনুযায়ী বেতন দেওয়ার দাবি আদালতে জানান শ্রাবন্তী। সেই মামলার প্রেক্ষিতে এ বছর হাই কোর্ট শ্রাবন্তীকে দু’সপ্তাহের মধ্যে বিশ্বভারতীর কাছে ওই মর্মে আবেদন করতে বলে। বিশ্বভারতীকে বলা হয়, আইন মোতাবেক আদালতের রায়ের এক মাসের মধ্যে ব্যবস্থা নিতে। শ্রাবন্তীর দাবি, আদালতের নির্দেশ মেনে তিনি বর্ধিত বেতনের আবেদন জানান কর্তৃপক্ষের কাছে। ঠিক এর পরে পরেই অস্থায়ী কর্মীর পদ থেকে তাঁকে বরখাস্ত করা হয়।
এই নিয়েই প্রশ্ন তুলেছে ভিবিইউএফএ। সংগঠনের সভাপতি সুদীপ্ত ভট্টাচার্য বলেন, “বিশ্বভারতীর এই সিদ্ধান্ত আদালত অবমাননার শামিল এবং প্রতিহিংসামূলক আচরণ ছাড়া আর কিছুই নয়। তবে, আমরা এর শেষ দেখে ছাড়ব।” শ্রাবন্তীর অভিযোগ, ‘‘প্রতিহিংসার বশে কোনও রকম কারণ না দেখিয়েই আমার চাকরি কেড়ে নেওয়া হল। আমি আইনের দ্বারস্থ হব।’’
শ্রাবন্তীর অভিযোগ প্রসঙ্গে কোনও প্রতিক্রিয়া দিতে চাননি বিশ্বভারতীর ভারপ্রাপ্ত জনসংযোগ আধিকারিক মহুয়া বন্দ্যোপাধ্যায়।