এই ধরনের খবরের ক্ষেত্রে আসল ছবি প্রকাশে আইনি নিষেধাজ্ঞা থাকে। —প্রতিনিধিত্বমূলক চিত্র।
অনুব্রত মণ্ডলের জেলায় তৃণমূলের পঞ্চায়েত সদস্যকে পিটিয়ে খুন করল অজ্ঞাতপরিচয় কয়েক জন ব্যক্তি। রবিবার সে নিয়ে শোরগোল বীরভূমের শান্তিনিকেতন থানা এলাকায়। মৃতের নাম সমীর থান্ডার। শনিবার রাতে সমীরকে মারধর করে একটি নর্দমায় ফেলে দেওয়া হয়। রবিবার তাঁর মৃত্যু হয়েছে। ইতিমধ্যে ওই ঘটনায় পাঁচ জনকে আটক করেছে পুলিশ।
স্থানীয় সূত্রে খবর, সমীরের বাড়ি কঙ্কালীতলা পঞ্চায়েতের পারুলডাঙা গ্রামে। ওই গ্রামেরই পঞ্চায়েত সদস্য ছিলেন তিনি। শনিবার কঙ্কালীতলা এলাকায় পঞ্চায়েতের বৈঠকের জন্য সমীর বাড়ি থেকে বেরিয়েছিলেন বলে জানিয়েছেন পরিবারের সদস্যেরা। রাতে ওই বৈঠক শেষে বাড়ি ফেরার পথে উত্তরনারায়ণপুর এলাকায় কয়েক জন তাঁকে ঘিরে ধরে বলে অভিযোগ। চলে বাঁশ-লাঠি দিয়ে মারধর। তার পর ইট দিয়ে আঘাত করে নর্দমায় ফেলে দেওয়া হয় সমীরকে। পরে স্থানীয় কয়েক জন সমীরকে উদ্ধার করে বোলপুর হাসপাতালে নিয়ে যান। খবর যায় তৃণমূল নেতার পরিবারের কাছে। শারীরিক পরিস্থিতির অবনতি হওয়ায় তাঁকে পরে বর্ধমান মেডিক্যাল কলেজে স্থানান্তর করা হয়। রবিবার বিকেলে হাসপাতাল থেকে তাঁর মৃত্যুর খবর জানানো হয়। তার পরেই চাঞ্চল্য ছড়িয়েছে এলাকায়।
পুলিশ জানিয়েছে, ঘটনায় জড়িত থাকার অভিযোগে পাঁচ জনকে আটক করা হয়েছে। তবে ধৃতদের পরিচয় এখনও জানা যায়নি। ঠিক কী কারণে তৃণমূল নেতাকে মারধর করা হয়, তা নিয়েও ধোঁয়াশা রয়েছে। পরকীয়ার তত্ত্ব যেমন উঠে আসছে, তেমনই রাজনৈতিক শত্রুতার অভিযোগ উড়িয়ে দেওয়া যাচ্ছে না। আবার মৃতের স্ত্রী জানিয়েছেন, একটি জমি সংক্রান্ত বিষয়ে সমীরের সঙ্গে কারও কারও গন্ডগোল ছিল। মৃতের বোন জানান, তাঁর দাদাকে আগেও প্রাণে মারার চেষ্টা হয়েছিল। অন্য দিকে, বিরোধীদের দাবি, তৃণমূলের গোষ্ঠীকোন্দলের ফলে খুন হতে হল ৪৭ বছর বয়সি সমীরকে। এ নিয়ে তৃণমূল নেতৃত্ব সরকারি ভাবে এখনও কোনও প্রতিক্রিয়া দেয়নি।
উল্লেখ্য, গরু পাচার মামলায় প্রায় ২ বছর তিহাড় জেলে থাকার পর গত সেপ্টেম্বর মাসেই জামিনে মুক্ত হন বীরভূমে তৃণমূলের জেলা সভাপতি অনুব্রত মণ্ডল। কেষ্ট জেলায় ফেরার পরে শাসকদলের মধ্যে গোষ্ঠীকোন্দল দেখা দিলেও নেতৃত্ব তা মানতে চান না। তৃণমূল নেতাকে পিটিয়ে খুনের নেপথ্যে রাজনৈতিক কোনও কারণ রয়েছে কি না স্পষ্ট নয়। তবে বিজেপি সেই অভিযোগই করছে। তবে বোলপুরের তৃণমূল নেতৃত্ব দাবি করেছেন, এই ঘটনার সঙ্গে রাজনীতির কোনও যোগ নেই। সমীর যে পঞ্চায়েতের সদস্য ছিলেন, তার উপপ্রধান মামুন বলেন, ‘‘পুলিশ তদন্ত করছে। এ নিয়ে আমাদের কোনও মন্তব্য করা উচিত নয়। তবে এটুকু বলতে পারি, খুনের পিছনে রাজনীতি নেই। পুলিশি তদন্তে সব স্পষ্ট হয়ে যাবে বলে আশা করছি।’’