ভ্যান উল্টে মৃত্যু ৪ জন শ্রমিকের

শুক্রবার রঘুনাথপুর ২ ব্লকের মঙ্গলদা-মৌতোড় পঞ্চায়েতের ডুমুরকোলা গ্রামের কুড়ি জন নির্মাণ শ্রমিকের একটি দল সাঁওতালডিহি থানার শিমূলহিড় গ্রামে এক গৃহস্থের ছাদ ঢালাইয়ের কাজে গিয়েছিল।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

রঘুনাথপুর শেষ আপডেট: ১৬ জুলাই ২০১৭ ০২:৩৪
Share:

দুর্ঘটনাগ্রস্ত গাড়ি। নিজস্ব চিত্র

পিকআপ ভ্যান উল্টে সেই ভ্যানের তলায় চাপা পড়ে মৃত্যু হল ৪ নির্মাণ শ্রমিকের। আহত আরও ১২ জন শ্রমিক। শুক্রবার রাতে দুর্ঘটনাটি ঘটেছে পুরুলিয়ার রঘুনাথপুর থানার পাথরখুনিয়া গ্রামের অদূরে। পুলিশ জানিয়েছে মৃতেরা হলেন গোবিন্দ বাউড়ি (২২), সনাতন বাউড়ি (২৫), রিধু বাউড়ি (২৯) ও হাবুল বাউড়ি (২০)। চার জনেই রঘুনাথপুর থানার ডুমুরকোলা গ্রামের বাসিন্দা। আহতদের বাড়িও ওই গ্রামে। তাঁদের মধ্যে ছ’জনকে ভর্তি করা হয়েছে রঘুনাথপুর সুপার স্পেশ্যালিটি হাসপাতালে। অন্য ছ’জনকে বাঁকুড়া মেডিক্যাল কলেজে পাঠানো হয়েছে।

Advertisement

শুক্রবার রঘুনাথপুর ২ ব্লকের মঙ্গলদা-মৌতোড় পঞ্চায়েতের ডুমুরকোলা গ্রামের কুড়ি জন নির্মাণ শ্রমিকের একটি দল সাঁওতালডিহি থানার শিমূলহিড় গ্রামে এক গৃহস্থের ছাদ ঢালাইয়ের কাজে গিয়েছিল। স্থানীয় ও পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, রাত ৮টা পর্যন্ত কাজ চলে। তার পরে ডুমুরকোলারই এক ব্যক্তির পিকআপ ভ্যানে চড়ে বাড়ি ফিরছিলেন ওই কুড়ি জন। রাস্তায় পাথরখুনিয়া গ্রামের অদূরে বাঁক নেওয়ার সময়ে রাস্তার পাশের একটি পলাশ গাছে ধাক্কা মেরে রাস্তার পাশের জমিতে উল্টে যায় গাড়িটি। সওয়ারিরা সবাই চাপা পড়েন। দুর্ঘটনার পরে গাড়ি ছেড়ে চালক পালিয়ে যান।

খবর পেয়ে পাথরখুনিয়া ও ডুমুরকোলা গ্রাম থেকে বাসিন্দারা গিয়ে উদ্ধার কাজ শুরু করেন। ওই এলাকাতেই পুলিশের একটি টহলদারি গাড়ি ছিল। সেটিও দ্রুত ঘটনাস্থলে পৌঁছয়। কিছু ক্ষণের মধ্যেই চলে আসেন রঘুনাথপর থানার আধিকারিক পঙ্কজ সিংহ। কুড়ি জনকেই উদ্ধার করে বান্দায় রঘুনাথপুর ২ ব্লক স্বাস্থ্যকেন্দ্রে নিয়ে যাওয়া হয়। সেখানে চিকিৎসকেরা জানান, স্বাস্থ্যকেন্দ্রে আনার আগেই মৃত্যু হয়েছে গোবিন্দ, সনাতন, রিধু ও হাবুলের। বাকিদের রঘুনাথপুর সুপার স্পেশ্যালিটি হাসপাতালে পাঠানো হয়। সেখানে চার জনকে প্রাথমিক চিকিৎসার পরে ছেড়ে দেওয়া হয়। যাঁদের চোট তুলনায় কম তাঁদের চিকিৎসা ওই হাসপাতালেই চলছে। দুর্ঘটনার খবর পেয়ে পাথরখুনিয়া গ্রামে গিয়েছিলেন ডুমুরকোলা গ্রামের বাসিন্দা অভিষেক মিশ্র। তিনি বলেন, ‘‘আহতদের হাসপাতালে নেওয়ার জন্য রাতে গাড়ি যোগাড় করতে সমস্যা হচ্ছিল। পুলিশ তৎপর হওয়ায় দ্রুত কাজ হয়েছে।’’

Advertisement

তবে কী ভাবে দুর্ঘটনা ঘটল তা নিয়ে ধোঁয়াশায় পুলিশ। প্রাথমিক তদন্তে পুলিশকর্মীরা মনে করছেন চালক মত্ত অবস্থায় গাড়ি চালাচ্ছিলেন বা গাড়ি চালাতে চালাতে ঘুমিয়ে পড়েছিলেন। পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, গাড়িতে শ্রমিকদের সঙ্গে ঢালাইয়ের কাজে ব্যবহারের যন্ত্রও ছিল। সেই ভারী যন্ত্রে চাপা পড়েও কয়েক জন আহত হয়েছেন। দুর্ঘটনার সময়ে গাড়ি বেশ গতিতেই চলছিল বলে জানিয়েছেন রঘুনাথপুর সুপার স্পেশ্যালিটি হাসপাতালে ভর্তি থাকা জখম শ্রমিকেরা।

চার জনের মৃত্যুতে শোকের ছায়া নেমে এসেছে ডুমুরকোলা গ্রামের বাউড়ি পাড়ায়। মৃতদেহগুলি ময়না তদন্তের পরে শনিবার বিকেলে গ্রামে নিয়ে যাওয়া হয়। দুর্ঘটনার খবর পেয়ে এ দিন দুপুরে রঘুনাথপুর হাসপাতালে যান স্থানীয় বিধায়ক উমাপদ বাউড়ি। আহতদের সঙ্গে কথা বলেন তিনি। সৎকারের জন্য আর্থিক সাহায্য এবং মৃতদের পরিবারকে কিছু ক্ষতিপূরণ দেওয়ার ব্যবস্থা করা হবে বলে তিনি আশ্বাস দিয়েছেন।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement