এসএফআইয়ের বই বিলি কর্মসূচি। ছবি: সংগৃহীত।
দিতে হবে পাঁচটা প্লাস্টিকের বোতল। তা হলে পাওয়া যাবে একটি বই। মোদ্দা কথা— বোতল দাও, বই নাও। পরিবেশ রক্ষার্থে এমনই কর্মসূচি ছড়িয়ে দেওয়ার পরিকল্পনা করেছে সিপিএমের ছাত্র সংগঠন এসএফআইয়ের পূর্ব বর্ধমান জেলা কমিটি। বুধবার আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবসে সেই কর্মসূচি করেছে তারা। সংগঠনের জেলা সম্পাদক অনির্বাণ রায়চৌধুরী জানিয়েছেন, আগামী দিনে জেলার সর্বত্র এই কর্মসূচি ছড়িয়ে দেওয়ার পরিকল্পনা রয়েছে তাঁদের।
বুধবার বর্ধমান বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রধান ক্যাম্পাসের ১ নম্বর গেটের সামনে বইয়ের স্টল খুলেছিল এসএফআই। পাশাপাশি, তিন চাকার প্যাডেল ভ্যানে করে বর্ধমান শহরের পাড়ায় পাড়ায় বোতলের বিনিময়ে বই বিলি করেন এসএফআই কর্মীরা। মূলত বামপন্থী আন্দোলনের সঙ্গে সম্পর্কিত বই বিলি করা হয়েছে বোতলের বিনিময়ে। কী হবে সংগৃহীত বোতল? অনির্বাণ বলেন, ‘‘সংগৃহীত বোতল বর্ধমান পুরসভাকে দেওয়া হবে। তারা পুনর্ব্যবহারযোগ্য (রিসাইকল) করার কাজ যদি করে, তা হলে উদ্দেশ্য সাধিত হবে।’’ বৃহস্পতিবার পর্যন্ত সিপিএমের ছাত্র সংগঠন অবশ্য পুরসভার সঙ্গে এ বিষয়ে কোনও কথা বলেনি। এক দিনে ৬০০-র বেশি বোতল সংগ্রহ হয়েছে বলে জানানো হয়েছে এসএফআইয়ের তরফে।
একটা সময় বর্ধমান বামদুর্গ থাকলেও অনেক দিনই হল তা তৃণমূলের ঘাঁটিতে পরিণত হয়েছে। বর্ধমান পুরসভাও চালায় তৃণমূল। সিপিএমের ছাত্র সংগঠন বোতল দিলে কি তা তৃণমূলের পুরসভা নেবে? চেয়ারম্যান পরেশচন্দ্র সরকার বলেন, ‘‘সামাজিক দৃষ্টিভঙ্গিতে কোনও কাজ হলে তাতে রাজনৈতিক বৈরীতা আমরা রাখি না। ওঁরা এলে নিশ্চয়ই কথা বলব। আলোচনা করব। তার পর কী করা যায় সে ব্যাপারে সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে।’’ তিনি এ-ও বলেন, ‘‘উদ্দেশ্য যদি শুভ হয়, তাতে আমি রাজনৈতিক রং দেখতে চাই না।’’
ছবি: সংগৃহীত।
ইতিমধ্যেই কেন্দ্রীয় শিক্ষা মন্ত্রককেও এ বিষয়ে ই-মেল পাঠিয়েছে সিপিএমের ছাত্র সংগঠন। যদিও বৃহস্পতিবার পর্যন্ত এ ব্যাপারে কেন্দ্রের তরফে কোনও জবাব আসেনি বলে জানিয়েছেন এসএফআই নেতৃত্ব। অনির্বাণ জানিয়েছেন, স্কুলে স্কুলে পরিবেশ সংক্রান্ত ক্লাব গড়ারও ভাবনা রয়েছে তাঁদের।
বিশ্ব উষ্ণায়নের এই সময়ে সারা দুনিয়া জুড়েই পরিবেশ হয়ে উঠছে মূল রাজনৈতিক ইস্যু। গত কয়েকটি বিশ্ব জলবায়ু সম্মেলনে তৃতীয় বিশ্বের দেশগুলিতে পরিবেশ সচেতনতার বিষয়ে অনীহা নিয়েও গভীর আলোচনা হয়েছে আন্তর্জাতিক স্তরে। তবে ভারতে পরিবেশ কখনওই রাজনীতির মূল ইস্যুগুলির মধ্যে নেই। মুখে বললেও দলগুলির বিশেষ ভূমিকাও দেখা যায় না বলে মনে করেন অনেকে। এ সবের মধ্যেই অন্য ধাঁচের কর্মসূচি নিল বর্ধমানের এসএফআই।