পুলওয়ামা-কাণ্ডে নিহত সুদীপ বিশ্বাস ও বাবলু সাঁতরা।—ফাইল চিত্র।
এক বছর পূর্ণ হল পুলওয়ামা-কাণ্ডের। কিন্তু যথাযথ তদন্ত হল কই?
এ প্রশ্ন ওই জঙ্গিহানায় ছিন্নভিন্ন হয়ে যাওয়া এ রাজ্যের দুই সিআরপিএফ জওয়ানের পরিবারের। এক জন হাওড়ার বাউড়িয়ার চককাশীর বাসিন্দা বাবলু সাঁতরা। অন্য জন নদিয়ার পলাশিপাড়া থানার হাঁসপুকুরিয়া গ্রামের সুদীপ বিশ্বাস। এই এক বছরে গঙ্গা দিয়ে অনেক জল গড়িয়েছে। পাকিস্তানে ‘সার্জিক্যাল স্ট্রাইক’ হয়েছে। কেন্দ্রে ফের বিজেপি সরকার ক্ষমতায় এসেছে। কিন্তু দুই পরিবার প্রশ্নের উত্তর পায়নি।
‘‘ওই জঙ্গিহানার তদন্ত সে ভাবে আর হল কোথায়? সবই তো ধামাচাপা পড়ে গেল।’’ —ক্ষোভ বাবলুর ভাই কল্যাণের। জওয়ানদের নিরাপত্তা যথেষ্ট ছিল না বলে সেই সময় অভিযোগ তুলেছিলেন বাবলুর স্ত্রী মিতাও। সুদীপের বাবা সন্ন্যাসীবাবুর প্রশ্ন, ‘‘কী করে জওয়ানদের কনভয় যাওয়ার পথে কড়া নিরাপত্তা বেষ্টনীর মধ্যে বিস্ফোরক বোঝাই গাড়ি ঢুকল, সেই রহস্য আজ পর্যন্ত উন্মোচন হল না। আমরা চাই, যত তাড়াতাড়ি হয়, এই রহস্যের উত্তর সকলের সামনে আসুক।’’ একই দাবি হাঁসপুকুরিয়ার আরও অনেকের।
গত বছর ১৪ ফেব্রুয়ারি সন্ধ্যায় কাশ্মীরের পুলওয়ামায় সিআরপিএফ কনভয়ে জঙ্গিহানার খবর ওই রাতেই এসে পৌঁছেছিল দুই বাড়িতে। দু’মাস পরে যে বাবলুর চাকরি থেকে অবসর নেওয়ার কথা ছিল, তাঁর মৃত্যুসংবাদ শুনে শোকে পাথর হয়ে গিয়েছিলেন মা বনমালাদেবী। বৃহস্পতিবার বৃদ্ধা বলেন, ‘‘টানা কুড়ি বছর সিআরপিএফে কাজ করার সময়ে ছেলে বাড়ি আসার তেমন সময় পেত না। ভেবেছিলাম অবসর নেওয়ার পরে চোখের সামনে থাকবে।’’
মিতা অবশ্য এখন চককাশীতে থাকেন না। মেয়েকে নিয়ে উত্তরপাড়ায় বাপের বাড়িতে থাকেন। তিনি রাজ্য সরকারের চাকরি পেয়েছেন। স্কুল ছুটি থাকলে মেয়েকে নিয়ে চককাশী যান মিতা। সিআরপিএফের পক্ষ থেকে এখনও তাঁদের সঙ্গে যোগাযোগ রাখা হয় বলে জানিয়েছেন বনমালা।
এক বছর আগে সুদীপের দেহ হাঁসপুকুরিয়ায় ফিরলে বাড়িতে ভিড় করেছিলেন নেতা-মন্ত্রী-সরকারি কর্তারা। নানা প্রতিশ্রুতিও দেওয়া হয় পরিবারটিকে। কিন্তু এত দিনেও পরিবারটি জানতে পারেনি, বিস্ফোরক বোঝাই ওই গাড়িটির মালিক কে।