Pulwama Terror Attack

দেশের সব ঘর থেকে সেনায় নিয়োগের প্রস্তাব অভিষেকের, দান করলেন তিন মাসের বেতন

অভিষেকের প্রশ্ন, ‘‘ভারতের প্রত্যেক গৃহস্থালী যাতে সশস্ত্র বাহিনীতে নিজেদের অন্তত এক জন করে প্রতিনিধি পাঠিয়ে গর্বিত হতে পারে, তার জন্য সংসদে একটা আইন আনার সময় কি এসে গিয়েছে?’’

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

কলকাতা শেষ আপডেট: ১৯ ফেব্রুয়ারি ২০১৯ ১৭:৪১
Share:

অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়। ফাইল চিত্র।

দেশে জাতীয়তাবাদ জাগানোর পক্ষে জোর সওয়াল করলেন অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়। জনসাধারণের প্রতি খোলা চিঠি টুইট করলেন ডায়মন্ড হারবারের সাংসদ তথা তৃণমূল যুব কংগ্রেসের সর্বভারতীয় সভাপতি। নিজের সন্তানকে সেনায় যোগ দিতে উৎসাহিত করবেন বলে জানালেন। সাংসদ হিসেবে পাওয়া তিন মাসের বেতন সশস্ত্র বাহিনীর সদস্যদের সহায়তা সংক্রান্ত তহবিলে দান করার কথা ঘোষণা করলেন। দেশের প্রত্যেক ঘর থেকে অন্তত এক জন সেনায় কাজ করুক— এমন সংস্থান তৈরির প্রস্তাবও দিলেন তরুণ রাজনীতিক।

Advertisement

যে চিঠিটি অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় মঙ্গলবার টুইটারে প্রকাশ করেছেন, তার বয়ান বেশ আবেগপ্রবণ। পুলওয়ামায় ভয়াবহ জঙ্গি হামলার পর থেকে গোটা দেশে যে রকম ‘শোক’ এবং ‘ক্রোধ’ জন্ম নিয়েছে, তিনিও যে তার শরিক, চিঠির একেবারে শুরুতেই সে কথা বোঝানোর চেষ্টা করেছেন সাংসদ। তবে সাংসদ বা রাজনৈতিক নেতা হিসেবে যে এই চিঠি লিখছেন না, সে ইঙ্গিতও স্পষ্ট ভাবেই দিয়েছেন। এ চিঠি তাঁর ব্যক্তিগত উদ্যোগে বা ইচ্ছায়— লিখেছেন অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়।

‘‘গত কয়েক দিন ধরে আমি আত্মমন্থন করছি। অধিকাংশ বিশেষজ্ঞের মত হল যে, এটা সম্পূর্ণ গোয়েন্দা ব্যর্থতার ফল।’’ খোলা চিঠিতে লিখেছেন অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়। কিন্তু তার পরে আর দোষারোপ বা চাপানউতোরের রাস্তায় হাঁটেননি। কোনও রাজনৈতিক আক্রমণে যাওয়ার চেষ্টাই করেননি। লিখেছেন, ‘‘আমি জানি আপনারা সবাই ক্রুদ্ধ, কোনও না কোনও উপায়ে প্রত্যুত্তর চাইছেন। আমিও তাই চাইছি।’’

Advertisement

আরও পড়ুন: অশ্লীল ভাষায় দূষছেন প্রতিবেশী দেশকে, কলকাতার রাস্তায় ওঁরা কারা?

এর পরেই আরও আবেগপ্রবণ, আরও মানবিক অভিষেকের বয়ান। তিনি লিখেছেন, ‘‘আমি নিজের কাছে প্রতিজ্ঞা করছি, ঈশ্বর এবং পরিস্থিতি চাইলে সশস্ত্র বাহিনীতে যোগ দেওয়ার জন্য, দেশের সেবা করার জন্য আমার সন্তানকে উৎসাহিত করতে বাবা হিসেবে আমি সব কিছু করব।’’

সশস্ত্র বাহিনীর সদস্যদের সাহায্যার্থে যে সব তহবিল রয়েছে, সেই তহবিলে নিজের তিন মাসের বেতন দান করার কথাও অভিষেক এই চিঠিতেই ঘোষণা করেছেন। তার পরেই অভিষেকের প্রশ্ন, ‘‘ভারতের প্রত্যেক গৃহস্থালী যাতে সশস্ত্র বাহিনীতে নিজেদের অন্তত এক জন করে প্রতিনিধি পাঠিয়ে গর্বিত হতে পারে, তার জন্য সংসদে একটা আইন আনার সময় কি এসে গিয়েছে?’’

দেশের যুব সম্প্রদায়ের মধ্যে জাতীয়তাবাদী সচেতনতা বাড়ানোর জন্য তবহিল গঠনের প্রস্তাবও দিয়েছেন অভিষেক। স্কুলে, কলেজে বা অন্যান্য শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে প্রচার, সেমিনার, আলোচনাচক্র আয়োজন করে সে চেষ্টা করা যেতে পারে বলে তৃণমূলের শীর্ষ যুবনেতার মত।

আরও পড়ুন: ফেসবুকে মন্তব্য করে গ্রেফতার হাবড়ার কিশোর

এই সুযোগে গোটা বিশ্বকে দেখিয়ে দিন, আমরা কতটা মহান একটা জাতি— আহ্বান অভিষেকের। একই সঙ্গে তাঁর আবেদন সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি রক্ষা করার জন্যও।

আপাদমস্তক জাতীয়তাবাদী চিঠিটায় এক শোকসন্তপ্ত রাজনীতিক ধরা দিয়েছেন বার বার। কিন্তু পরিচিত রাজনৈতিক ঝাঁঝ সরিয়ে রেখে এ চিঠির শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত বিনম্র ভঙ্গি মুখ্যমন্ত্রীর ভ্রাতুষ্পুত্রের। ‘‘আসুন আমরা নিজেদেরই জিজ্ঞাসা করি, হাউ ইজ দ্য জোশ?’’ লিখেছেন অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়।

চিঠির শেষ স্তবকে অবশ্য নাম না করেও দেশের সরকারের প্রতি একটি পরামর্শ রয়েছে অভিষেকের তরফ থেকে— বুলেট ট্রেনের আগে জওয়ানদের জন্য বুলেটপ্রুফ জ্যাকেট আমাদের কাছে বেশি জরুরি এখন।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement