(বাঁ দিকে) কলকাতা হাই কোর্টে চাকরিপ্রার্থীদের বিক্ষোভ। হাই কোর্টের বিচারপতি সৌমেন সেন (ডান দিকে)। —নিজস্ব চিত্র।
কলকাতা হাই কোর্টের সামনে বিক্ষোভ দেখালেন চাকরিপ্রার্থীদের একাংশ। বিচারপতিদের সংঘাতের ফল তাঁদের ভুগতে হচ্ছে বলে জানালেন তাঁরা। হাই কোর্টের দরজার সামনে বেশ কিছু ক্ষণ তাঁরা বিক্ষোভ দেখান। তার পর পুলিশ এসে তাঁদের সরিয়ে দেয়।
মঙ্গলবার কলকাতা হাই কোর্টের বিচারপতি সৌমেন সেনের ডিভিশন বেঞ্চে উচ্চ প্রাথমিকের মামলার শুনানি ছিল। সেই মামলা ছেড়ে দিয়েছেন বিচারপতি সেন। এই খবর জানার পরেই হাই কোর্টের সামনে বিক্ষোভে ফেটে পড়েন উচ্চ প্রাথমিক চাকরিপ্রার্থীদের একাংশ। তাঁদের বক্তব্য, বিচারপতিদের এই বেনজির সংঘাতের ফলে তাঁদের ক্ষতি হচ্ছে। মামলা দীর্ঘায়িত হচ্ছে। অবিলম্বে এর সমাধান চেয়েছেন চাকরিপ্রার্থীরা।
উচ্চ প্রাথমিকের চাকরিপ্রার্থী সুশান্ত ঘোষ এ প্রসঙ্গে বলেন, ‘‘আমরা বিচার চাই। অন্যায় ভাবে আমরা চাকরি থেকে বঞ্চিত হয়েছি। দীর্ঘ দিন ধরে আমাদের মামলা আদালতে বিচারাধীন। বিচারপতি সেনের এজলাসে এত দিন এই মামলা চলছিল। শুনানিও প্রায় শেষের দিকে ছিল। আর দু’চার দিনের মধ্যে শুনানি শেষ হয়ে যাওয়ার কথা ছিল। এই অবস্থায় বিচারপতি সেন মামলা ছেড়ে দিলেন। ওঁদের সংঘাতের ফলে মামলাটি এখন আবার নতুন বেঞ্চে যাবে, প্রক্রিয়া আরও দীর্ঘায়িত হবে। আমরা সুবিচার চাই।’’
হাই কোর্টের ‘বি গেট’-এর সামনেই বিক্ষোভ দেখান চাকরিপ্রার্থীরা। এটিই আদালতের প্রধান ফটক। আইনজীবীরা এই দরজা দিয়েই আদালতে যাতায়াত করে থাকেন। বেশ কিছু ক্ষণ বিক্ষোভ চলার পর পুলিশ পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে এবং বিক্ষোভকারীদের সরিয়ে দেয়।
মঙ্গলবার বিচারপতি সেনের এজলাসে উচ্চ প্রাথমিকের মামলাটি উঠলে আবেদনকারীদের একাংশের আইনজীবী কল্যাণ বন্দ্যোপাধ্যায় বিচারপতি গঙ্গোপাধ্যায় প্রসঙ্গে কথা বলতে চান। সেই আবেদন নাকচ করে দেন বিচারপতি সেন। তার পরেই তিনি উচ্চ প্রাথমিকের মামলা থেকে সরে দাঁড়ানোর কথা জানান।
এর আগে মেডিক্যালে ভর্তি মামলা নিয়ে বিচারপতি সেন এবং বিচারপতি গঙ্গোপাধ্যায়ের মধ্যে বেনজির সংঘাত প্রকাশ্যে এসেছিল। মেডিক্যাল মামলায় সিবিআই তদন্তের নির্দেশ দিয়েছিলেন বিচারপতি গঙ্গোপাধ্যায়। সেই নির্দেশ ডিভিশন বেঞ্চের বিচারপতি সেন খারিজ করে দেয়। ‘ত্রুটি’ উল্লেখ করে ডিভিশন বেঞ্চের ওই নির্দেশও খারিজ করে দেন বিচারপতি গঙ্গোপাধ্যায়। সিবিআইকে তদন্ত চালিয়ে যেতে বলেন তিনি। সুপ্রিম কোর্ট হস্তক্ষেপ করে মেডিক্যালের মামলা হাই কোর্ট থেকেই সরিয়ে দেয় এর পর। ওই মামলার শুনানি হবে শীর্ষ আদালতে।