আপনি বাঁচলে! ট্রাস্ট বেসরকারি হাসপাতালের

ট্রাস্টের কর্তারা ইতিমধ্যেই মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সঙ্গে দেখা করে বিষয়টি জানিয়েছেন। তাঁদের দাবি, মুখ্যমন্ত্রী উৎসাহ দিয়ে জানিয়েছেন, বেসরকারি হাসপাতাল যদি রাজ্যের মানুষকে শোষণ না করে, তা হলে তাঁরাও হাসপাতালের পাশে থাকবেন।

Advertisement

সোমা মুখোপাধ্যায়

কলকাতা শেষ আপডেট: ২৩ অগস্ট ২০১৮ ০৪:৩২
Share:

প্রতীকী ছবি।

চাপের মুখে নিজেদের বাঁচাতে একযোগে ট্রাস্ট গঠন করছে রাজ্যের বিভিন্ন বেসরকারি হাসপাতাল এবং ডায়াগনস্টিক সেন্টার। শুধু ডাক্তার-নার্সই নন, এই ‘রক্ষাকবচ’-এর আওতায় আনার ব্যবস্থা হচ্ছে হাসপাতালের সব ধরনের কর্মীকে। যদিও এই উদ্যোগ নিয়ে ইতিমধ্যেই সংশয় তৈরি হয়েছে।

Advertisement

গত এক বছরে বিভিন্ন ঘটনায় অভিযোগের আঙুল উঠেছে বেসরকারি হাসপাতালগুলির দিকে। হাসপাতালগুলির প্রতি সাধারণ মানুষের আস্থাও বহু ক্ষেত্রে তলানিতে ঠেকেছে। ভাঙচুর, মারধরের ঘটনার পর ইতিমধ্যেই কলকাতা থেকে ব্যবসা গোটানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছে একটি বেসরকারি হাসপাতাল। হাসপাতাল সম্প্রসারণের পরিকল্পনা থেকে সরে এসেছে বেশ কয়েকটি গোষ্ঠীও। এই পরিস্থিতিতে ট্রাস্টের মূল বক্তব্য, ‘সেফ লাইফ, সেভ লাইফ’। অর্থাৎ নিরাপদ জীবনই অন্যের জীবন বাঁচাতে পারে। প্রস্তাবিত ট্রাস্টে হাসপাতালের শীর্ষ কর্তা বা ডাক্তারেরাই নন, থাকছেন নার্স, চতুর্থ শ্রেণির কর্মী, হাসপাতালের নিরাপত্তারক্ষীরাও।

ট্রাস্টের কর্তারা ইতিমধ্যেই মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সঙ্গে দেখা করে বিষয়টি জানিয়েছেন। তাঁদের দাবি, মুখ্যমন্ত্রী উৎসাহ দিয়ে জানিয়েছেন, বেসরকারি হাসপাতাল যদি রাজ্যের মানুষকে শোষণ না করে, তা হলে তাঁরাও হাসপাতালের পাশে থাকবেন।

Advertisement

জয়েন্ট ম্যানেজিং ট্রাস্টি শান্তনু সেনগুপ্ত এবং অভীক কুমার জানার দাবি, স্বচ্ছতা ফেরানোই ট্রাস্টের মূল লক্ষ্য। শান্তনুবাবু বলেন, ‘‘হাসপাতালে যাঁরা প্রথমে রোগীর পরিবারের সঙ্গে কথা বলেন, অধিকাংশ ক্ষেত্রে তাঁদের ন্যূনতম প্রশিক্ষণ থাকে না। কোনও বিল নিয়ে রোগীর পরিবার প্রশ্ন তুললে বিলের ব্রেকআপটা হয়তো কর্মীরা দিলেন। বিলে কিছু পরীক্ষার কথা লেখা থাকে। সে সম্পর্কে কিছুটা জ্ঞান ওই কর্মীদের থাকা দরকার। সে জন্য তাঁদের প্রশিক্ষণের কথা ভাবছি।’’ অতিরিক্ত বিল, চিকিৎসার গাফিলতিতে মৃত্যু, মৃতকে ভেন্টিলেশনে রেখে বিল বাড়ানোর অভিযোগের ক্ষেত্রে আত্মসমীক্ষা জরুরি বলে মনে করছে ট্রাস্ট।

আরও পড়ুন: ঝুলেই রইল পঞ্চায়েত-রায়, ভোট কি অবৈধ? প্রশ্ন আদালতের

স্বাস্থ্য দফতরের এক শীর্ষ আধিকারিক অবশ্য বলেন, ‘‘বেসরকারি হাসপাতালের স্বচ্ছতা আসলে সোনার পাথরবাটি। ওঁরা মুখ্যমন্ত্রীর পথ নিরাপত্তা বিষয়ক স্লোগান আর লোগো ধার করে বৈধতা আদায়ের চেষ্টা করছেন।’’

ট্রাস্টের আর এক সদস্য জানান, সমস্ত বেসরকারি হাসপাতাল, নার্সিংহোম এবং ডায়াগনস্টিক সেন্টারকে এক ছাতার তলায় আনতে চান তাঁরা। বড় হাসপাতালগুলিতে পুলিশ ফাঁড়ি তৈরি এবং ছোট জায়গায় প্যানিক বাটনের ব্যবস্থা করার দাবিও করবেন, যাতে অল্প সময়ে পুলিশ পৌঁছতে পারে। তাঁর কথায়, ‘‘আইনের সংশোধনীও চাই। বর্তমানে ডাক্তারদের উপরে হামলা হলে জামিনঅযোগ্য ধারায় গ্রেফতার করা হয়। এই ধারা সমস্ত হাসপাতাল কর্মীর উপর হামলার ক্ষেত্রে প্রযোজ্য হওয়া জরুরি। কারণ, তেমন পরিস্থিতিতে সকলেই মার খান।’’

বেসরকারি হাসপাতালগুলির সংগঠন— ‘অ্যাসোসিয়েশন অব হসপিটালস অব ইস্টার্ন ইন্ডিয়া’-র সহ-সভাপতি রূপক বড়ুয়ার অবশ্য দাবি, ট্রাস্টের বিষয়ে এখনও তাঁরা কিছু জানেন না। তবে তাঁর কথায়, ‘‘বেসরকারি হাসপাতাল পরিচালনায় অভিন্ন বিধি নেই। এক হাসপাতালের বিপদে অন্য হাসপাতাল ফিরেও তাকায় না। এমন ট্রাস্ট হলে কিছুটা সুবিধা হবে।’’

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement