বলে পা। ফাইল চিত্র
রাজনীতিকে দূরে সরিয়ে নিজের সংসদীয় কেন্দ্রে জনসংযোগ বাড়াতে প্রণব মুখোপাধ্যায় ফুটবলকে হাতিয়ার করে তাঁর বাবা কামদাকিঙ্করের নামে চালু করেছিলেন গ্রাম ফুটবল। জঙ্গিপুর থেকে গোটা মুর্শিদাবাদ এবং পাশের জেলা বীরভূমেও ছড়িয়ে গিয়েছিল সেই ফুটবল। গ্রাম ফুটবল নামে সেই ফুটবল প্রতিযোগিতায় ছিল ১৭৬টি দল। পরে তা বড়ে হয় ২৫৬ দলের টুর্নামেন্ট। নাম হয়ে গিয়েছিল ‘প্রণববাবুর ফুটবল’। মাত্র ৫ বছরেই সেই প্রতিযোগিতা গ্রামে গ্রামে আলোড়ন ফেলে দিয়েছিল। তা নিশ্চিত ভাবেই সাংসদ প্রণববাবুর ভোটও বাড়িয়েছিল। সাংসদ পদ থেকে তিনি সরে দাঁড়াতেই ধীরে ধীরে হারিয়েছে সেই গ্রাম ফুটবলের প্রতিযোগিতার উত্তেজনা।
কিন্তু ওই ৫ বছর কামদাকিঙ্কর ফুটবল প্রতিযোগিতা যে উন্মাদনা জাগিয়ে তুলতে পেরেছিল তা ভোলার নয়। আক্ষরিক অর্থেই তা হয়ে উঠেছিল প্রণববাবুর জনসংযোগের অন্যতম মাধ্যম।
১৭৬টি দল নিয়ে মহকুমার ৭টি ব্লককে ১১টি জোনে ভাগ করে প্রথম সেই গ্রাম ফুটবলে অংশ নিয়েছিল ২৫০০ খেলোয়াড়। পরের বছর সে দলের সংখ্যা দাঁড়ায় ২৪০টি ক্লাবে। যোগ দেন ৪৩২০ জন খেলোয়াড়। চতুর্থ বছরে তাকে ছড়িয়ে দেওয়া হয় বীরভূমেও। দলের সংখ্যা বেড়ে দাঁড়ায় ২৫৬ এবং খেলোয়াড়ের সংখ্যা বেড়ে দাঁড়ায় ৪৬০৮।
২০০৮ সালে বিদেশমন্ত্রী হিসেবে যে ফুটবলের সূচনা করেন, ২০১৫ সালে তা চলেছে রাষ্ট্রপতি হিসেবে দায়িত্ব নেওয়ার পরও ২০১৪-১৫ সাল পর্যন্ত। খেলার সূচনা ও ফাইন্যাল দু’টি দিনই প্রণববাবু মাঠে উপস্থিত থেকে খেলা দেখতেন। এই প্রতিযোগিতার সঙ্গে যুক্ত মুক্তি ধর বলছেন, “প্রণববাবু জানতেন ফুটবল দেখে বিরোধীরাও ভুলে যাবেন রাজনীতির কথা। জনসংযোগ বাড়বে প্রত্যন্ত গ্রামেও।’’ তাতে উৎসবে মেতে উঠত জঙ্গিপুরও। ম্যাকেঞ্জি স্টেডিয়াম হত লোকে লোকারণ্য। অনেকেরই মত, এই প্রতিযোগিতা চললে ভাল হত। কিন্তু প্রাণপুরুষই চলে গেলেন।