সীতারাম ইয়েচুরি ও প্রকাশ কারাট
রাজ্য সম্পাদক সূর্যকান্ত মিশ্র পুরুলিয়ায়। বামফ্রন্টের চেয়ারম্যান বিমান বসু বীরভূমে। সিপিএমের পলিটব্যুরো সদস্য মহম্মদ সেলিম মালদহে। বাম পরিষদীয় নেতা সুজন চক্রবর্তী কোচবিহারে। কেন্দ্রীয় কমিটির প্রবীণ সদস্য শ্যামল চক্রবর্তী মুর্শিদাবাদে। প্রায় গোটা রাজ্য সিপিএমই পদযাত্রার জন্য যখন কলকাতার বাইরে, সেই দিনেই শহরে আসছেন দলের প্রাক্তন সাধারণ সম্পাদক প্রকাশ কারাট!
গ্রাম ও শহরের ১৭ দফা দাবি নিয়ে ১১৭টি গণসংগঠনের যৌথ মঞ্চ বিপিএমও-র আয়োজনে আজ, রবিবার রাজ্য জুড়ে শুরু হচ্ছে পদযাত্রা। পূর্বনির্ধারিত কর্মসূচি মেনে পদযাত্রার সূচনা করতে রাজ্য সিপিএমের প্রথম সারির নেতৃত্ব আজ বিভিন্ন জেলায় ছড়়িয়ে থাকবেন। আর সেই দিনেই শহরে এসে হাওড়া জেলা সিপিএমের দফতরে মার্ক্সবাদের উপরে সাধারণ সভা করতে যাওয়ার কথা কারাটের। বিজেপি-র মোকাবিলায় সিপিএমের রণকৌশল কী হবে, আসন্ন পার্টি কংগ্রেসের আগে সেই প্রশ্নে দলের অন্দরে বিতর্ক এখন চরমে। দিল্লিতে সদ্য হয়ে যাওয়া কেন্দ্রীয় কমিটির বৈঠকেও সীতারাম ইয়েচুরি ও কারাট শিবিরের মধ্যে তুল্যমূল্য লড়াই হয়েছে। কারাটের এ বারের সফরের দিনক্ষণকে সেই আঙ্গিকেই দেখছে দলের একাংশ!
সাধারণ সম্পাদক ইয়েচুরির মতো আলিমুদ্দিনের নেতারাও বিজেপি-র বিপদের মোকাবিলায় কংগ্রেস-সহ ধর্মনিরপেক্ষ দলগুলিকে একজোট করার পক্ষে। কারাট আবার কোনও ভাবেই কংগ্রেসের সঙ্গে নির্বাচনী সমঝোতায় যেতে রাজি নন। বড় জোর আন্দোলনের ঐক্য পর্যন্ত যেতে রাজি কারাট শিবির। এই প্রশ্নে কেন্দ্রীয় কমিটিতে বাংলার নেতা হয়েও দীপক দাশগুপ্ত, নৃপেন চৌধুরীরা কারাটপন্থীদের পক্ষে দাঁড়িয়েছেন। ইয়েচুরি শিবিরের বঙ্গ নেতারা যখন জেলায় জেলায় পদযাত্রা শুরু করছেন, সেই সময়ে দীপকবাবুদের হাওড়ায় কারাটের সাধারণ সভা করতে আসাকে তাই খুব সাধারণ চোখে দেখা হচ্ছে না দলের মধ্যে!
সিপিএমের একাংশের বক্তব্য, ইতিমধ্যে উত্তর ২৪ পরগনা ও হুগলি জেলায় যে ভাবে ইয়েচুরিকে এনে কার্ল মার্ক্সের দ্বিশতবর্ষের উপরে বক্তৃতা করানো হয়েছে, সে ভাবেই কারাটকে আনা হচ্ছে এ বার। উদ্যোক্তা নেতৃত্বের যদিও যুক্তি, কারাটের সভাও পূর্বনির্ধারিত। তাতেও আবার দলের একাংশের প্রশ্ন, কারাটের আসার দিন ঠিক হয়ে থাকলে কোনও জেলার পদযাত্রায় তাঁকে নিয়ে গিয়ে কর্মীদের উৎসাহ বাড়ানোর চেষ্টা করা যেত না কি? সাধারণ সভায় শুধু তাত্ত্বিক বক্তৃতায় কি কর্মী বাহিনীর মনোবল বাড়বে?