—ফাইল চিত্র।
এক যাত্রা অথচ পৃথক ফল!
পাইকারি বাজারে কেজি প্রতি আলুর দাম ২২ টাকায় বাঁধতে চাইছে রাজ্য সরকার। অথচ মিড-ডে মিলে দেওয়ার জন্য কেজি প্রতি আলু ২৮ টাকায় কেনার কথা বলেছে তারাই। দাম নিয়ে দুই মত কি আলুর দামের গতিরোধে সমস্যার কারণ, তা নিয়ে প্রশাসনের অন্দরে চর্চা চলছে।
সূত্রের খবর, গত ২১ জুলাই বিভিন্ন জেলাকে মিড-ডে মিলে আলু কেনার দর বেঁধে নির্দেশিকা পাঠিয়েছিল স্কুল শিক্ষা দফতর। আর সেখানে বলা হয়েছে, ২৮ টাকা কেজি দরে আলু কেনা যাবে। অগস্ট মাসের জন্য এই দর বেঁধেছে সরকার। তাৎপর্যপূর্ণ, ওই নির্দেশিকার তিন দিনের মাথায়, গত ২৪ জুলাই বৈঠক করে পাইকারি বাজারে আলুর দাম ২২ টাকায় বাঁধার নির্দেশ দিয়েছিল সরকার। তা কার্যকর হলে খুচরো বাজারে এক কেজি আলু ২৫ টাকায় কিনতে পারতেন আমক্রেতা। প্রশাসনের একটি সূত্রের দাবি, ওই বৈঠকের নির্দেশ কার্যকর হয়নি। তাই গত শুক্রবার ফের বৈঠকে বসতে হয়েছিল প্রশাসনিক কর্তাদের। ব্যবসায়ীদের প্রতি সরকারের সর্বশেষ নির্দেশ, চলতি সপ্তাহের মধ্যে আলুর দামে লাগাম পরাতে হবে। তা না হলে পরিস্থিতি বুঝে পদক্ষেপ করবে প্রশাসন।
বিভিন্ন স্কুল কর্তৃপক্ষ জানাচ্ছেন, সরকারের নির্ধারিত দরে প্রয়োজনীয় আলু স্থানীয় ব্যবসায়ীদের থেকে পাইকারি দরে কিনে নেন তাঁরা। জুলাই মাসে ৫০ কেজি আলু ১২০০ টাকায় কেনা হয়েছিল। সেই হিসাবে গত মাসে মিড-ডে মিলের জন্য আলুর দর ছিল প্রতি কেজি ২৪ টাকা। এ মাসে তার জন্য সরকার দর বেঁধেছে ২৮ টাকা।
আলুর মূল্যবৃদ্ধি নিয়ে চারদিকে চর্চার মাঝে সরকারি স্তরে কিলোপ্রতি আলুর চার টাকা দাম বৃদ্ধি নিয়ে প্রশ্ন তুলছেন অনেকে। রাজ্যের টাস্কফোর্সের এক সদস্যের কথায়, “গোটা বিষয়টা আমাদের কাছেও বিস্ময়ের। সরকারি ক্ষেত্রে যেখানে আলুর কিলো প্রতি দর ২৮ টাকা, সেখানে সাধারণ খুচরো বাজারে তার কমে কী করে আলু পাওয়া যাবে, সে প্রশ্ন ওঠা স্বাভাবিক।”
প্রশাসনের এক কর্তা বলেন, “তখনকার দামের হিসাবে গত মাসে ওই নির্দেশিকা দেওয়া হয়েছিল । তখন রাজ্যের সর্বত্র আলুর দামও এক ছিল না। তাই প্রধান শিক্ষক-শিক্ষিকাদের সুবিধার্থে অভিন্ন দর বেঁধে দেওয়া হয়েছিল।” তবে পশ্চিমবঙ্গ প্রগতিশীল আলু ব্যবসায়ী সমিতির সাগর সরকারের দাবি, ‘‘আলুর উৎপাদন কম হয়েছে। তাই সমস্যা হচ্ছে। সর্বভারতীয় ক্ষেত্রে আলুর দাম ঊর্ধ্বমুখী। তুলনায় বাংলায় এখনও দাম অনেকটা কম।’’
গত মাসে মিড-ডে মিলে পড়ুয়াদের মাথাপিছু দু’কেজি করে আলু দিয়েছিল সরকার। চলতি মাস থেকে এক কেজি করে পাবে পড়ুয়ারা। প্রশাসনের এক কর্তার কথায়, “চলতি পরিস্থিতির জন্য মাথাপিছু আলুর পরিমাণ এক কেজি করা হওয়ায় এক কেজি করে ছোলা পাবে পড়ুয়ারা।”