এমনই পোস্টারে ছেয়েছে বিশ্ববিদ্যালয় চত্বর। —নিজস্ব চিত্র।
তাঁর বিশ্বভারতীতে থাকা নিয়ে গত ক’দিনে কম জল ঘোলা হয়নি। এরই মধ্যে শুক্রবার বোলপুরের সেই তৃণমূল সাংসদ তথা অধ্যাপক অনুপম হাজরার বিরুদ্ধে পোস্টার পড়ল বিশ্বভারতীতে।
সমাজকর্ম বিভাগের এই অধ্যাপককে প্রতিষ্ঠানের উন্নয়নে বাধা সৃষ্টিকারী, শিক্ষার কলঙ্ক, সর্বনাশা নেশার নায়ক বলে দাবি পোস্টার পড়ায় এলাকায় হইচই পড়ে গিয়েছে। প্রাথমিক ভাবে বিষয়টি বিশ্বভারতীর নিরাপত্তা বিভাগের নজরে এলে, তারা কেন্দ্রীয় দফতর এবং কেন্দ্রীয় গ্রন্থাগারের দেওয়াল থেকে তুলে নেয় ওই পোস্টারগুলি। কিন্তু পরে ফের ওই পোস্টারগুলি আবার দেওয়ালে সাঁটানো হয়। বিশ্বভারতীর উপ-কর্মসচিব (সম্পত্তি) তথা ভারপ্রাপ্ত মুখ্য নিরাপত্তা আধিকারিক অশোক মাহাতো বলেন, “কিছু অপরিচিত যুবক ওই পোস্টার দিয়েছে। বিষয়টি ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে জানিয়েছি।”
প্রসঙ্গত, শুক্রবার দুপুরে বিশ্বভারতীর কেন্দ্রীয় দফতর, কেন্দ্রীয় গ্রন্থাগার, শ্রীনিকেতন অ্যাকাউন্ট অফিস, সমাজকর্ম বিভাগ-সহ শ্রীনিকেতনের একাধিক দফতরে এই রকম পোস্টার দেখা যায়। ওই সব পোস্টারের নীচে উল্লেখ করা হয়েছে, বিশ্বভারতীর সাধারণ ছাত্রছাত্রী, কর্মী ও অধ্যাপক। পোস্টার দেওয়া ওই ছাত্র ও প্রাক্তনীদের একাংশের দাবি, বিশ্বভারতী থেকে এই রকম শিক্ষককে অবিলম্বে সরে যেতে হবে। তবে বিশ্বভারতী জয়েন্ট অ্যাকশন কমিটির পক্ষ থেকে আনন্দ দুলাল মিত্র, স্নেহাদ্রি চক্রবর্তী, কিশোর ভট্টাচার্য ও দেবব্রত হাজারি বলেন, “বিশ্বভারতী একটি শিক্ষামূলক প্রতিষ্ঠান। সেখানে কোনও ধরনের কুরুচিকর পোস্টারকে আমরা সমর্থন করি না। এটা রুচিহীনতার পরিচয়।” শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের মধ্যে এই রকম পোস্টার দেওয়া, এলাকা থেকে চন্দন গাছ চুরির মতো ঘটনাকে বজ্র আঁটুনি, ফস্কা গেরো বলে কটাক্ষ করেছেন প্রবীণ প্রাক্তনী কৃষ্ণপদ সিংহরায়।
প্রসঙ্গত সাংসদ হওয়ার পরে বিশ্বভারতী থেকে এক বছরের ছুটি নিয়েছিলেন অনুপমবাবু। ছুটি ফুরিয়ে আসায় লোকসভা থেকে প্রয়োজনীয় ছাড়পত্র নিয়ে তাঁকে বিশ্বভারতীতে কাজ যোগ দিতে বলেছিল বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ। সেই বিষয়টিকে কেন্দ্র করে গত ক’দিনে জল গড়িয়েছে অনেক দূর। অনুপমবাবুর দাবি, গত ২৬ মে তিনি বিশ্ববিদ্যালয়ের কাজে যোগ দিয়ে কয়েকদিনের ছুটিতে গিয়েছিলেন। ফিরে এসে কাজে যোগ দিতে গেলে বিশ্বভারতী কর্তৃপক্ষ তাঁকে বাধা দেন বলে তাঁর অভিযোগ। যদিও কর্তৃপক্ষের দাবি, তিনি সময়ের মধ্যে যোগ দেননি। তাই বিশ্বভারতী চলতি মাসের গোড়ায় অনুপমবাবুকে নিজের পুরনো জায়গা অসম বিশ্ববিদ্যালয়ে ফিরে যাওয়ার জন্য চিঠি দিয়েছে।
এ দিন অবশ্য বারবার চেষ্টা করেও অনুপমবাবুর সঙ্গে যোগাযোগ করা যায়নি।