আপাতত দেখা যাবে না জনপ্রিয় চ্যানেলগুলি। প্রতীকী চিত্র।
শনিবার বারবেলা থেকে কেবল থেকে চলে গিয়েছে প্রিয় সব পে চ্যানেল। বাড়ির মা বোনেরা যেমন তাঁদের প্রিয় ধারাবাহিক দেখা থেকে বঞ্চিত হচ্ছেন, তেমনই খেলাপাগল মানুষও দেখতে পাচ্ছেন না প্রিয় খেলোয়াড়দের ‘পারফরম্যান্স’। আপাতত কেবলে জনপ্রিয় চ্যানেলগুলি ফিরে আসার সম্ভাবনা কম। কারণ, টেলিকম রেগুলেটরি অথরিটি অব ইন্ডিয়া (ট্রাই)-এর নতুন মাসুল নীতি কার্যকর হওয়ার পর দাম বাড়িয়ে এমএসও-দের সঙ্গে নতুন করে চুক্তি করতে চায় চ্যানেলগুলির মালিকপক্ষ। তাঁদের ঠিক করে দেওয়া দামেই এমএসও এবং কেবল আপরেটারদের চ্যানেল চালাতে বলা হয়েছে। কিন্তু সেই দাবি একতরফা ভাবে মেনে না নেওয়ায় কলকাতার সঙ্গে সারা দেশেই কেবল টিভির জনপ্রিয় চ্যানেলগুলি বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে। এই ঘটনায় অপরেটাররা সমস্যার সম্মুখীন হচ্ছেন। কারণ, দর্শকদের সঙ্গে সরাসরি মুখোমুখি হতে হয় তাঁদের। কোনও আগাম খবর ছাড়া এ ভাবে চ্যানেলগুলি বন্ধ করে দেওয়ায় গ্রাহকদের ক্ষোভের মুখে পড়ছেন তাঁরাই। কিন্তু এমন পরিস্থিতিতেও ট্রাই ও চ্যানেল সংস্থাগুলির একতরফা দাবি মানতে নারাজ তাঁরা। সূত্রের খবর, দু’পক্ষের অনড় অবস্থানের ফলে পরিস্থিতি কঠিনতর হয়েছে।
সূত্রের খবর, মূলত বন্ধ করা হয়েছে সোনি, স্টার ও জ়ি-এর চ্যানেলগুলি। চ্যানেলগুলির মালিক সংস্থা এক ধাক্কায় ৩০-৩৩ শতাংশ মাসুল বৃদ্ধি করেছে বলেই অভিযোগ কেবল অপরেটারদের। তাঁর আরও দাবি, ‘‘এক তরফা ভাবে ট্রাই ও ব্রডকাস্টারদের নীতি মেনে নিলে টিভি দেখার খরচ এক ধাক্কায় অনেকটাই বেড়ে যাবে। ফলে গ্রাহকরা বিকল্প মাধ্যমে বিনোদনের ব্যবস্থা করতে বাধ্য হবেন। এমনটা হলে একদিকে যেমন এমএসওদের ব্যবসা মার খাবে, তেমনই স্থানীয় স্তরের কেবল অপারেটারদের ব্যবসাও উঠে যাবে।’’ পরিস্থিতি জটিল হলেও, এখনই এই জট কাটার কোনও ইঙ্গিত মিলছে না। কারণ একতরফা ভাবে চ্যানেলের মাসুল বৃদ্ধি ও আচমকা চ্যানেল বন্ধ করে দেওয়ার বিরুদ্ধে দেশের প্রায় সব প্রান্তেই কম বেশি মামলা দায়ের হয়েছে। দিল্লি, আমদাবাদ, তেলঙ্গানা-সহ কলকাতাতেও কেবল অপারেটাররা হাইকোর্টের দ্বারস্থ হয়েছেন। সোমবার আদালতে সেই সংক্রান্ত শুনানিও রয়েছে।
কলকাতা হাইকোর্টের দ্বারস্থ হয়েছেন আইডিয়াল কেবল অপারেটার্স অ্যাসোসিয়েশনের ৭ জন সদস্য। তাঁদের বক্তব্য, এই বর্ধিত মূল্য কোনও ভাবেই মেনে নেওয়া সম্ভব নয়। একতরফা ভাবে চ্যানেলের দাম বাড়ালে গ্রাহক যেমন কমে যাবে, তেমনই সর্বস্তরের ব্যবসার ক্ষতি হবে। যে এমএসওদের এখন পুরনো দামে চ্যানেল চলছে, তাঁদেরও দাম শীঘ্রই বাড়ানো হবে। তাঁরা চ্যানেলের নতুন মাসুল কোনও ভাবেই মেনে নেবেন না। তাতে যতদিন চায় চ্যানেল বন্ধ রাখুন ওঁরা।