ভিউ পয়েন্টে এ ভাবেই পড়ে রয়েছে নির্মাণ সামগ্রী। নিজস্ব চিত্র
গাছে ঘেরা বাঁধানো রাস্তা দিয়ে উঠে এসে দাঁড়াতে হয় সেই চাতালটিতে। তার পরে বাঁ দিকে চোখ ঘোরালে কাঞ্চনজঙ্ঘা। টাইগার হিলের বিখ্যাত ‘ভিউ পয়েন্ট’টির চেহারাই যেন বদলে গিয়েছে এখন। চাতাল জুড়ে অজস্র গর্ত। এখানে ওখানে ছড়ানো লোহার রড। পুরনো ভবনটি ভাঙার কাজও শুরু হয়েছে, জানাচ্ছেন সেখান ঘুরতে যাওয়া পর্যটকেরা। তাঁদের কথায়, সব মিলিয়ে ভিউ পয়েন্ট যেন মরণফাঁদ হয়ে দাঁড়িয়েছে।
টাইগার হিলের ভিউ পয়েন্টটি জিটিএ-র অধীনে। পরিস্থিতির কথা শুনে জিটিএ এবং প্রশাসনের সঙ্গে কথা বলার আশ্বাস দিয়েছেন রাজ্যের পর্যটনমন্ত্রী গৌতম দেব। জিটিএ-র পর্যটন দফতরের সহ অধিকর্তা সুরজ শর্মা বলেছেন, ‘‘পর্যটকদের নিরাপত্তা সবার আগে। বিষয়টি আমরা দেখছি।’’ দার্জিলিঙের জেলাশাসক এস পুন্নমবলম বলেছেন, ‘‘টাইগার হিলের পরিস্থিতি খতিয়ে দেখে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’’ করোনা আবহে গ্রীষ্মে বন্ধ ছিল পাহাড়। পুজোর আগে তা খুলে দেওয়া হয়। তাতে পাহাড়ে আসতে শুরু করেছেন পর্যটকেরা। পাহাড়ের লোকজনের কথায়, বছরের এই সময়টায় আবহাওয়া চমৎকার থাকে। টাইগার হিল থেকে সূর্যোদয় এবং কাঞ্চনজঙ্ঘা দেখাটা তাই পর্যটকদের কাছে প্রধান আকর্ষণ। গত কয়েক দিন ধরে পর্বতশৃঙ্গ দেখাও যাচ্ছে ভাল ভাবে। ফলে ভোর রাতে গিয়ে পর্যটকেরা ভিড় জমাচ্ছেন টাইগার হিলে। আর সেখানেই হয়েছে বিপত্তি।
পর্যটকদের অনেকেই বলছেন, নির্মাণ কাজের জন্য এলাকায় বড় বড় গর্ত খুঁড়ে ফেলা হয়েছে। কোথায় সেগুলির উপরে লোহার রড পেতে দেওয়া হয়ছে, কোথাও প্লাইউডের টুকরো। তার উপর দিয়েই চলছে যাতায়াত। বাচ্চারাও দৌড়চ্ছে। ফলে দুর্ঘটনার আশঙ্কা রয়েছে। যে ভিউ পয়েন্টটা দর্শকদের জন্য খোলা আছে, তাতেও কোথাও আবার সিঁড়িতে রেলিং নেই। পর্যটকদের আরও অভিযোগ, জিটিএ-র অধীন এই ভিউ পয়েন্টটিতে ভোরবেলা না দেখা মিলছে পুলিশের, না প্রশাসন বা জিটিএ-র কোনও কর্মীর।
জিটিএ ও প্রশাসন সূত্রে বক্তব্য, ৮১০০ ফুট উচ্চতায় থাকা এই বিখ্যাত ভিউ পয়েন্টটি সংস্কারের কাজ শুরু হয় ২০১৬ সাল থেকে। মাঝে বেশ কিছু দিন কাজ বন্ধ ছিল। সম্প্রতি আবার তা শুরু হয়েছে। তার মধ্যে পর্যটন মরসুম চালু হয়ে যাওয়াতেই হয়েছে বিপত্তি।